ওমিক্রন রোধে সতর্কতার বিকল্প নেই

2

অবশেষে বাংলাদেশেও পাওয়া গেছে ওমিক্রন ভাইরাসের সন্ধান। সকল নিরাপত্তার বলয় ভেদ করে ঢুকে পড়েছে বিশ্বজুড়ে আতঙ্ক সৃষ্টিকারী করোনাভাইরাসের নতুন ধরনটি। জিম্বাবুইয়ে ফেরত দুই নারী ক্রিকেটারের শরীরে পাওয়া গেছে ওমিক্রন। বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব অর্ধসমাপ্ত রেখেই তারা দেশে ফিরেছিলেন। দুইজনের শরীরে করোনাভাইরাসের অস্তিত্ব পাওয়া যায় তখনই। কয়েকদিন পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী তাদের আক্রান্তকারী ভাইরাসটি ওমিক্রন বলে ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে তিনি বাংলাদেশে ওমিক্রনের উপস্থিতিরও জানান দিলেন। জ্বর-সর্দিসহ করোনার মৃদু লক্ষণ থাকলেও দুজন মহিলা ক্রিকেটারই ভাল আছেন। কঠোর আইসোলেশনে রয়েছেন তারা। এক সংবাদ সম্মেলনে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক এই তথ্য জানিয়ে বলেন, আমরা কন্ট্যাক্ট ট্রেসিং করছি। সংশ্লিষ্ট সবাইকে পরীক্ষার আওতায় আনা হয়েছে। যারা সঙ্গে ছিলেন বা তাদের সংস্পর্শে এসেছেন সবারই পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
করোনাভাইরাসের এই ধরন আবিষ্কারের পর বিশ্বজুড়ে তৈরি হয় নতুন আতঙ্ক। সতর্কতা অবলম্বন করা হয় প্রত্যেক দেশে। আক্রান্ত দেশগুলোর সঙ্গে আকাশ পথ বন্ধ করে দেয়া হয়। প্রতিটি সীমান্ত পথেই নেয়া হয় বাড়তি সতর্কতা। এর পরও ঠেকানো যাচ্ছে না ভাইরাসটি। প্রতিদিনই আক্রান্ত দেশের তালিকা দীর্ঘ হচ্ছে। বাংলাদেশও যুক্ত হয়েছে এই তালিকায়। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, অতিমাত্রায় সংক্রমিত ভাইরাসটি ঠেকানো খুব কঠিন। কোন না কোনভাবে এটি রাষ্ট্রের সীমানা অতিক্রম করেই চলেছে। প্রতিবেশী ভারত ও পাকিস্তানে এই ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে আরও কয়েকদিন আগে।

স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, ভাইরাসটি অতিমাত্রায় সংক্রমিত হলেও এর ক্ষতিকারক ক্ষমতা খুব বেশি নয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার প্রাথমিক গবেষণায় বলা হয়েছে, ডেল্টা ও বেটা ধরনের তুলনায় ওমিক্রনের পুনরায় সংক্রমিত করার ক্ষমতা তিনগুণ বেশি। ইতোপূর্বে করোনায় আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে গড়ে ওঠা প্রতিরোধ ব্যবস্থাও ভেঙ্গে দেয়ার সক্ষমতা রয়েছে ওমিক্রনের। খুব দ্রুত ছড়িয়ে পড়লেও উপসর্গ হয় মৃদু। সর্দি, কাশি, গলা ব্যথার পাশাপাশি মৃদু জ্বর হতে পারে। একই সঙ্গে থাকতে পারে শরীর ব্যথা। এখন পর্যন্ত কোন মৃত্যুর সংবাদ পাওয়া যায়নি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার বরাত দিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, বাংলাদেশে যেসব টিকা ব্যবহার করা হয়েছে তাতে ওমিক্রন দমনে কিছুটা হলেও কাজ করছে।
করোনার এই ভ্যারিয়েন্ট বাংলাদেশে প্রবেশ ছিল অবধারিত। বিশ্বের উন্নত দেশগুলোও ওমিক্রনের প্রবেশ ঠেকাতে পারেনি। এটি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এই সত্য ধরে নিয়েই আমাদের দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করত হবে।