দক্ষিণ সুরমার কানু বিশ্বাসের সংবাদ সম্মেলন ॥ ডাম্পিং থেকে বিস্কুট সংগ্রহ করে বিক্রির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা

3

স্টাফ রিপোর্টার :
ডাম্পিং গ্রাউন্ডস থেকে বিস্কুট সংগ্রহ করে বাজারে বিক্রি ও মদ তৈরির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন দক্ষিণ সুরমার ছিটা গোটাটিকর এলাকার নরিন্দ বিশ্বাসের ছেলে কানু বিশ্বাস। গতকাল শনিবার দুপুরে সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে তিনি বলেছেন, ‘প্রতিহিংসাপরায়ণ হয়ে হাজী দুলাল মিয়া মিথ্যা তথ্য দিয়েছেন। প্রকৃত সত্য অনুসন্ধান না করে সংবাদ প্রকাশ করায় আমরা সামাজিক, মানসিক ও আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি।’
কানু বিশ্বাস জানান, তার নিজস্ব খামার রয়েছে, নাম জোনাকী মৎস্য খামার। ডাম্পিং গ্রাউন্ডস থেকে মাছের খাদ্য সংগ্রহের জন্য চলতি বছরের ৪ মে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বরাবরে আবেদন করেন। আবেদনের প্রেক্ষিতে মেয়র অনুমতিপত্র দেন। এজন্য সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে তিনি ৫০ হাজার টাকাও প্রদান করেন।
কিন্তু, সম্প্রতি তাকে ও তার সহকর্মী দক্ষিণ সুরমার জৈনপুর এলাকার মৃত হাতিম উল্লাহর ছেলে মিলন মিয়াকে জড়িয়ে বিভিন্ন দৈনিক ও অনলাইন নিউজ পোর্টালে সংবাদ প্রচার করা হয়। এতে তিনি ও মিলন মিয়া সামাজিক, মানসিক ও আর্থিক ক্ষতির সম্মুখহীন হয়েছেন বলে দাবি করেন কানু বিশ্বাস।
তিনি অভিযোগ করেন, ‘গত ১০ অক্টোবর রবিবার গোটাটিকর ষাটঘর এলাকার বাসিন্দা হাজী দুলাল মিয়া গোটাটিকর, ষাটঘর, বান্দরঘাট ও পারকইচক এলাকাবাসীকে ভুল বুঝিয়ে আমাকে ও মিলন মিয়াকে প্রতিপক্ষ বানিয়ে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র বরাবরে লিখিত অভিযোগ প্রদান করেন।’
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, ‘কানু বিশ্বাস ও মিলন মিয়া সিলেট সিটি করপোরেশনের লালমাটিয়ার ডাম্পিং গ্রাউন্ড থেকে মৎস খামারের জন্য বিস্কুট সংগ্রহের নামে পঁচা, ভাসী, বিস্কুট ও নানারকম ক্ষতিকর খাবার সংগ্রহ করে নগরের কালিঘাটের কিবরিয়া স্টোরে বিক্রি করেন এবং পঁচা ভাত সংগ্রহ করে ট্যাংকির মধ্যে রেখে শ্রীমঙ্গলের মদের পাট্ট ও চিপের জন্য বিভিন্ন এলাকায় বিক্রয় করেন।’
এর প্রেক্ষিতে পত্রপত্রিকায় কানু বিশ্বাস ও মিলন মিয়ার বিরুদ্ধে প্রতিবেদন করা হয়। কিন্তু, তাতে প্রকৃত সত্য অনুসন্ধান করা হয়নি বলে অভিযোগ করেছেন কানু বিশ্বাস। এতে আইন ও সমাজের চোখে তাদেরকে অপরাধী বানানোর চেষ্টা করা হয়েছে।
কানু বিশ্বাস বলেন, ‘স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, আমি কানু বিশ্বাস সিটি করপোরেশন থেকে বিস্কুটের গুঁড়া সংগ্রহের জন্য লিজ এনেছি। এখানে লিজ শব্দটি মিথ্যা। আমরা কেবল অনুমতিপত্র এনেছি। এ ছাড়া পঁচা ভাত সংগ্রহ করে টাংকির মধ্যে রেখে মদ তৈরি ও বিক্রির বিষয়টিও সম্পূর্ণরূপে মিথ্যা ও বানোয়াট। গণমাধ্যমে কালিঘাটের কিবরিয়া স্টোরের কথাও উল্লেখ করা হয় সংবাদ প্রতিবেদনে। কিবরিয়া স্টোরে মাছ ও মুরগির ফিড তৈরির জন্য আমার কাছ থেকে তারা বিস্কুটের গুড়া নিয়ে থাকে। এখানে কোনো সাধারণ মানুষের কাছে এসব বিস্কুটের গুড়া খাবারের জন্য বিক্রি করা হয় না। কেউ যদি একটি প্রমাণ দেখাতে পারেন, তাহলে বাংলাদেশ সরকারের যে কোনো আইনে আমি শাস্তিভোগ করতে রাজী আছি।’
তিনি আরও বলেন, ‘প্রকাশিত সংবাদে আমাকে ও মিলন মিয়াকে মদ তৈরিকারক ও বিক্রেতা বানানো হয়েছে। আমি মৎস্যজীবী, শ্রম ও কষ্টের বিনিময় হালাল পথে যা রোজগার করি। তা দিয়ে আমার সংসার চালাই। আমার বংশের কেউ মদ বিক্রি কখনও করেনি, কিংবা মদ তৈরিও করেনি।’ চাঁদা না পেয়ে তাদেরকে ফাসাঁনোর জন্য দুজনের বিরুদ্ধে এসব অপপ্রচার চালানো হচ্ছে দাবি করে কানু বিশ্বাস প্রকৃত সত্য উদঘাটন করে এদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানান। তিনি প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সুদৃষ্টি কামনা করেন। সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন মিলন মিয়া, সুজন মিয়া, নিশি কান্ত ও শুক্কুর খান।