সব সিটি কর্পোরেশনকে একটি কর্তৃপক্ষের অধীনে আনার বিষয়ে কমিটি পুনর্গঠন

19

কাজিরবাজার ডেস্ক :
শিল্প-কারখানায় ব্যবহৃত বয়লারের গা থেকে নিবন্ধন নম্বর অপসারণ, পরিবর্তন, বিকৃত বা অদৃশ্যমান করে অন্য বয়লার ব্যবহার করলে জেল-জরিমানার বিধান রেখে ‘বয়লার আইন, ২০২১’ এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রী সভা।
সোমবার (২৫ জানুয়ারি) জাতীয় সংসদে মন্ত্রী সভা কক্ষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রী সভা বৈঠকে এ অনুমোদন দেয়া হয়। বৈঠক শেষে সচিবালয়ে মন্ত্রী পরিষদ সচিব খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, ‘১৯২৩ সালের আইন দিয়ে বয়লার চালানো হতো। অনেক কিছু পরিবর্তন হয়েছে বলে নতুন আইন করা হচ্ছে। শিল্প-কারখানার বয়লার দুর্ঘটনার ঝুঁকিহ্রাস, বয়লার ব্যবহারে সচেতনতা বৃদ্ধি; মানসম্মত বয়লার তৈরি, আমদানি, ব্যবহার ও পরিচালনা এবং শিল্প-কারখানার নিরাপদ কর্মপরিবেশ সৃষ্টির জন্য নতুন আইন করা হচ্ছে।’
খন্দকার আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো মালিক বা ব্যক্তি বয়লারের গায়ে স্থায়ীভাবে চিহ্নিত বা সংযোজিত নিবন্ধন নম্বর অপসারণ, পরিবর্তন, বিকৃত ও অদৃশ্যমান করে অন্য কোনো বয়লার ব্যবহার করলে দুই বছরের কারাদণ্ড, দুই লাখ টাকা জরিমানা বা উভয় দণ্ড দেয়া হবে। মোবাইল কোর্ট আইনেও এক্ষেত্রে প্রযোজ্য হবে।’
মন্ত্রী পরিষদ সচিব বলেন, ‘প্রধান বয়লার পরিদর্শক এবং বয়লার পরিদর্শক থাকবেন। বয়লার বোর্ড থাকবে, সেখানে একজন চেয়ারম্যান এবং দুইজন সদস্য থাকবেন। প্রধান পরিদর্শক শুনানির সুযোগ দিয়ে এক লাখ টাকা এবং দ্বিতীয়বার এই অপরাধ করার জন্য দ্বিগুণ জরিমানা করতে পারবেন।’
শিল্প সচিব বোর্ডের চেয়ারম্যান হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘প্রধান পরিদর্শক নিবন্ধন দেবে।’
সচিব বোর্ডের প্রধান হলে বোর্ডপ্রধান হিসেবে তার জবাবদিহি কীভাবে নিশ্চিত হবে, সেই প্রশ্নে মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ‘কেবল তো এটার নীতিগত অনুমোদন হলো, এ বিষয়টি আইন মন্ত্রণালয়কে লিখব।’
যাচাই কমিটি পুনর্গঠন
সব কর্পোরেশনকে একটি কর্তৃপক্ষে অধীনে আনার প্রয়োজনীয়তা আছে কি-না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত দিতে আগের একটি কমিটি পুনর্গঠন করেছে মন্ত্রী সভা।
‘সরকারি কর্পোরেশন (ব্যবস্থাপনা সমন্বয়) আইন’ প্রণয়নের আবশ্যকতা নিরূপণের বিষয়ে ২০১৫ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি মন্ত্রিসভা থেকে গঠিত কমিটি পুনর্গঠনের প্রস্তাব মন্ত্রী সভা বৈঠকে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
মন্ত্রীপরিষদ সচিব বলেন, ‘আগে অর্থমন্ত্রীকে সভাপতি করে বাণিজ্য, শিল্প, বস্ত্র ও পাট, পরিকল্পনা এবং জ্বালানি ও বিদ্যুৎমন্ত্রীকে নিয়ে একটি কমিটি করা হয়। ওই কমিটির দায়িত্ব ছিল, সরকারের কর্পোরেশনগুলোর ব্যবস্থাপনায় একটি কর্তৃপক্ষের অধীনে আনা যায় কি-না এবং এক্ষেত্রে শিল্প মন্ত্রণালয়কে লিড মন্ত্রণালয় করা যায় কি-না, সে বিষয়ে মতামত দেয়া।’
তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে চূড়ান্ত কোনো অগ্রগতি হয়নি। ২০১৯ সালে অর্থমন্ত্রীর কাছে যখন এটা উপস্থাপন করা হয় উনি একটা পর্যবেক্ষণ দেন যে, এটা যেহেতু আগের সংসদের ছিল, এখন নতুন সংসদ ও মন্ত্রিসভা এসেছে তাই এটাকে আবার মন্ত্রিসভায় পাঠানো হোক।’
১৯টি মন্ত্রণালয়ের ৫০টি করপোরেশন আছে জানিয়ে আনোয়ারুল ইসলাম বলেন, ‘সব কর্পোরেশনই আইন দিয়ে গঠিত হয়েছে। কিন্তু জেনারেল একটা স্ট্রাকচার, ব্যবস্থাপনা, দায়িত্ব-কর্তব্য এগুলোর যেন একটা মিল থাকে। সে জন্য এই কমিটি পুনর্বিন্যাস করে সেখানে কৃষিমন্ত্রীকে যুক্ত করা হয়েছে।’
মন্ত্রী পরিষদ সচিব আরও বলেন, ‘আগের মতোই অর্থমন্ত্রীকে ওই কমিটির সভাপতি করা হয়েছে। এখন কমিটি সভা করে দেখবে এ বিষয়টির আদৌ প্রয়োজন আছে কি না।’