দিরাই বাজার পেঁয়াজ শূন্য, বিক্রি বন্ধ

4

সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
পেঁয়াজ কেনা কেন্দ্র করে দিরাইয়ে ৫টি মুদি দোকানে হামলা চালিয়ে পেঁয়াজ সহ বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী নিয়ে যাওয়ার মতো লংকা কান্ডের ঘটনার জের ধরে দিরাই বাজার এখন পিয়াজ শূন্য। বুধবার সন্ধ্যায় দিরাই পৌরসভার সেলুন পট্টির ৫টি মুদি দোকানে এ ঘটনা ঘটে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন সাধারণ জনগণ। কুতুব স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী কুতুব উদ্দিন জানান বুধবার সন্ধ্যায় দিরাই চন্ডিপুর গ্রামের বাসিন্দা আবুল মিয়ার ছেলে জুয়েল মিয়া ও মুকিত পীর সাবের ছেলে ফরহাদ মিয়া আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান সহ ৫টি দোকানে প্রতি কেজি পেঁয়াজ ৭০ টাকা বিক্রির জন্য বলেন, এতে আমরা অপারগতা প্রকাশ করে বলি ১৪০ টাকা দরে ক্রয় করা পেঁয়াজ ৭০ টাকা করে বিক্রি সম্ভব নয়। এতে তারা ক্ষিপ্ত হয়ে আরো কয়েকজন টাকা না দিয়ে আমাদের দোকান থেকে জোরপূর্বক নিজ হাতে ব্যাগ ভর্তি করে পেঁয়াজ ও দোকানের সামনে রাখা বিভিন্ন পণ্যসামগ্রী নিয়ে যান। আমরা বিষয়টি উপজেলা চেয়ারম্যান, দিরাই পৌর মেয়র ও দিরাইবাজার মহাজন সমিতিকে জানিয়েছি, আমরাআইনের আশ্রয় নেব। একই অভিযোগ করেন পার্শ্ববর্তী লক্ষি স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী লক্ষ্মী কান্ত রায়, বাবুল স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী বাবুল দাস, বিলাস স্টোরের মালিক ধীরেন্দ্র দেবনাথ, অনুকূল স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী অনুকূল রায়, লুকেশ স্টোরের স্বত্ত্বাধিকারী লুকেস দাস। ব্যবসায়ী বাবুল দাস বলেন পেঁয়াজের মূল্য নির্ধারণের কোন নির্দেশনা প্রশাসন থেকে আমাদের দেওয়া হয়নি, ১৪০ টাকা দরে পেঁয়াজ ক্রয় করে ৭০ টাকা বিক্রি করা কোনভাবেই সম্ভব নয়, বাজারের ৫ টি দোকান থেকে জোরপূর্বক লক্ষাধিক টাকার পেঁয়াজ নেওয়া খুবই দুঃখজনক, আমাদের সমিতির পক্ষ থেকে এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার দুপুরে মানববন্ধনের ডাক দিয়েছিলাম প্রশাসনের আশ্বাসে আমরা মানববন্ধন স্থগিত করেছি। আমরা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ করবো। জুয়েল মিয়া ফরহাদ ও মিয়া অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমাদের সামাজিক ও রাজনৈতিক সম্মান নষ্ট করতে আমাদের বিরুদ্ধে একটি মহল অপপ্রচার চালচ্ছে। দিরাই বাজার মহাজন সমিতির সাধারণ সম্পাদক ধনীর রঞ্জন রায় বলেন, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ৫টি মুদি দোকানের লংকা কান্ডের ঘটনা দু:খজনক, এরপর থেকে দিরাই বাজার পেঁয়াজ শূন্য, আমরা প্রশাসনের সাথে আলাপ করে সিদ্ধান্তে পৌছেছি যে দোকানীরা যে দামে পেঁয়াজ কিনবে এর চেয়ে ৫-১০টাকা কেজি প্রতিবেশি করে বিক্রি করবে, মুদি দোকানীরা মানববন্ধনের ডাক দিয়েছিল প্রশাসন এবং আমাদের প্রতি সম্মান জানিয়ে তারা কর্মসূচি প্রত্যাহার করেছেন। এ ব্যাপারে দিরাই থানার অফিসার ইনচার্জ কেএম নজরুল ইসলাম বলেন বাজার কমিটির নেতৃবৃন্দ আমাকে বিষয়টি জানিয়েছেন, অভিযোগ পেলে তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। পেঁয়াজ বিক্রি সংক্রান্ত কোন নির্দেশনা রয়েছে কিনা জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট মোহাম্মদ সফি উল্লাহ জানান এ রকম কোনো নির্দেশনা প্রশাসনের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি, তবে নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর মূল্য স্থিতিশীল রাখতে প্রশাসন সার্বক্ষণিক বাজার মনিটরিং করছে। দিরাই পৌরসভার মেয়র মোশাররফ মিয়া বলেন, ৫টি মুদি দোকানে হামলা দু:খজনক, খবর পেয়ে আমি এবং উপজেলা চেয়ারম্যান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, একটি সুবিধাবাদী মহল নিজ স্বার্থ হাসিলে ব্যর্থ হয়ে এসব করছে, কারা এসব ন্যাক্কারজনক কান্ডে জড়িত দিরাই বাসী জানেন, এ ঘটনার পর থেকে দিরাই বাজার পেঁয়াজ শূন্য এতে ভোগান্তিতে পড়ছেন সাধারণ জনগণ, আমি প্রকৃত অপরাধীদের দৃষ্টান্ত মূলক শাস্তি দাবি করছি। উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মঞ্জুর আলম চৌধুরী বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি, নিয়ম অনুযায়ী ব্যবসায়ী তার মাল মেপে দিবে ভোক্তারা জোরপূর্বক দোকান থেকে মালামাল নিয়ে আশা উচিৎ হয়নি, আমার মনে হয় সুবিধাবাদী মহল ইচ্ছে করে নৈরাজ্য সৃষ্টির পাঁয়তারা করছে, এটা সত্যই দু:খজনক।