নিশ্চুপ বিএনপি!

39

কাজিরবাজার ডেস্ক :
একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর বিচার ও bnp-logo_91846রায় নিয়ে কিছুটা প্রতিক্রিয়া জানালেও ফাঁসি কার‌্যকরের পর একদম নিশ্চুপ বিএনপি। দলের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ করলেও কোনো সাড়া মিলছে না তাদের। নিজে কিছু না বলে একজন অন্যজনকে দেখিয়ে দিচ্ছেন।
আবার বরাবরের মতো কেউ বলেছেন, দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তি বা মুখপাত্র এ নিয়ে পরে কথা বলবেন। তবে রবিবার বিকাল পাঁচটা পর‌্যন্ত দলের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া পাওয়া যায়নি।
শনিবার দিবাগত রাতে ফাঁসি কার্যকরের পর রবিবার সকালে চট্টগ্রামে দাফন সম্পন্ন হয় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর।
সালাউদ্দিন সম্পর্কে বিএনপি সর্বশেষ কথা বলেছে শনিবার বিকালে, রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষার আবেদন নিয়ে যখন চারদিকে ধূম্রজাল। একদিকে সরকার বলছে প্রাণভিক্ষার আবেদন করেছেন সাকা। অন্যদিকে তার পরিবার তা নাকচ করে দিচ্ছে। বিকালে চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপিও সরকারের দাবি অস্বীকার করে জানায়, সাকা কোনো প্রাণভিক্ষার আবেদন করেননি।
এর আগে ফাঁসির বিরুদ্ধে রিভিউ শুনানির পর বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ন্যায়বিচার পাননি। বিচারের সময় ব্যক্তির অপরাধের চেয়ে রাজনৈতিক পরিচয়কে বেশি বিবেচনা করা হয়েছে।
তবে ফাঁসি কার‌্যকর ও দাফন সম্পন্ন হওয়ার পর একেবারেই নিশ্চুপ বিএনপি। দলের স্থায়ী কমিটি থেকে শুরু করে মধ্যম সারির বেশ কয়েকজন নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। কিন্তু কেউই এ নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য লে. জেনারেল (অব.) মাহবুবুর রহমান বলেন, “দলের মুখপাত্র এ বিষয়ে কথা বলবেন।”
অন্যদিকে স্থায়ী কমিটির আরেক সদস্য আ স ম হান্নান শাহ, ভাইস চেয়ারম্যান সেলিমা রহমান ও মুখপাত্র ড. আসাদুজ্জামান রিপনের ফোনে বেশ কয়েকবার চেষ্টা করলেও তারা রিসিভ করেননি।
স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খানের মোবাইল বন্ধ পাওয়া গেছে।
সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীর পরিবারের ঘনিষ্ঠ সূত্রে জানা গেছে, শনিবার রাতে কারাগারে শেষ দেখা করতে যাওয়ার আগে সাকার পরিবারের সদস্যরা বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে অল্প সময়ের জন্য সাক্ষাৎ করেন। এ সময় তিনি পরিবারের সদস্যদের সান্ত্বনা দেন। এরপর এখন পর‌্যন্ত বিএনপির কোনো শীর্ষ নেতা পরিবারের সদস্যদের প্রতি ব্যক্তিগতভাবেও সমবেদনা জানাননি।
এদিকে ফাঁসি কার‌্যকরের আগের দিন বিকালে বিএনপির একজন স্থায়ী কমিটির সদস্য এই প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে বলেন, “সবাই ভয়ে আছে। সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে নিয়ে কথা বলতে আইনজীবীরাও সংবাদ সম্মেলনে আসতে রাজি হন না। এটা আসলে কষ্টকর।”
জানা গেছে, দলের একজন প্রভাবশালী নেতার ফাঁসি হওয়ার পর এ নিয়ে বিএনপি আনুষ্ঠানিক কোনো প্রতিক্রিয়া জানাবে কি না এখনো নিশ্চিত নয়।
বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশান কার্যালয়ের একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন,“পরিস্থিতি দেখে মনে হচ্ছে সবাই এখনই তাকে (সাকা) ভুলে গেছে। সামনে এ নিয়ে কিছু হবে এমন লক্ষণ দেখছি না।”
একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মদ মুজাহিদের ফাঁসি শনিবার দিবাগত রাত ১২টা ৫৫ মিনিটে কার্যকর করা হয়।