ওসমানীনগরে আওয়ামীলীগের দু’গ্রুপের সংঘর্ষে শ্রমিকলীগের সম্মেলন পন্ড, আহত ১৫

34

ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরে আওয়ামীলীগের দু-গ্র“পের সংঘর্ষে শ্রমিকলীগের সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে। সম্মেলনে পরিচয় Osmaninagar Pic-(1)- 21-11-15করিয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদকের মধ্যে কথা কাটাকাটির জের ধরে উভয় সমর্থকদের মধ্যে  সংঘর্ষের সৃষ্টি হয়। সংঘর্ষে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান সোহেল ছুরিকাঘাতসহ উভয় সমর্থকদের ১৫ জন আহত হন। সোহেল আহত হওয়ার খবর পেয়ে তার সমর্থকরা উত্তেজিত হয়ে উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলুর ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রভাতি ফিলিং ষ্টেশন ও গোয়ালাবাজারস্থ হাজি মার্কেটে তার ব্যক্তিগত অফিস সহ সামনে থাকা কয়েকটি মোটর সাইকেল ভাংচুর করে। খবর পেয়ে থানা পুলিশ ও অতিরিক্ত পুলিশ, ডিবি পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ রিপোর্ট (শনিবার রাত ৮ টা) লিখা পর্যন্ত উভয় পক্ষের মধ্যে টানটান উত্তেজনা বিরাজ করায় আবারো সংঘর্ষের আশঙ্কা রয়েছে। গোয়ালা বাজার সহ পার্শ্ববর্তী এলাকায় উপজেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে। ফলে উপজেলার বাণিজ্যিক প্রাণ কেন্দ্র গোয়ালাবাজার সহ আশপাশ এলাকার  ব্যবসায়ীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পরছে।
জানা যায়, জাতীয় শ্রমিকলীগ ওসমানীনগর উপজেলা শাখার সম্মেলন গতকাল শনিবার বিকালে উপজেলার গোয়ালাবাজারস্থ সাদীমহল কমিউনিটি সেন্টারে অনুষ্ঠিত হয়। সম্মেলনের উদ্বোধক ছিলেন সিলেট জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক। প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা আওয়ামীলীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি এডভোকেট লুৎফুর রহমান, প্রধান বক্তা ছিলেন সাবেক সংসদ সদস্য সিলেট জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আলহাজ্ব শফিকুর রহমান চৌধুরী। উক্ত সম্মেলন চলাকালিন সময়ে উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান সুহেল এর পরিচয় করিয়ে না দেয়ায় সম্মেলনের মধ্যে আলতাফুর রহমান সুহেল ও উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু মধ্যে কথা কাটাকাটি শুর হয়। এক পর্যায়ে নাজলু চৌধুরী সমর্থক ও সুহেল সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হওয়ায় সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করেন আয়োজকরা। সংঘর্ষে আলতাফুর রহমান সোহেল সহ উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হন। এদিকে সুহেল আহত হওয়ার খবর পেয়ে তার সমর্থকরা জরো হয়ে গোয়ালাবাজারে অবস্থিত আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রভাতি ফিলিং ষ্টেশন ও হাজি মার্কেটস্থ ব্যক্তিগত অফিস ও অফিসের সামনে থাকা কয়েকটি মটোরসাইকেল ভাংচুর করে। অন্যান্য আহতরা হচ্ছেন, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলতাফুর রহমান সুহেল (৩৫), আওয়ামীলীগ নেতা ফেরদৌস খান (৪৫), সৈয়দ নেছাওর আলী (৫০), ছাত্রলীগ নেতা ইসুফ চৌধুরী (২৮), সাবলু আহমদ (২৫), শামিম আহমদ (২৫), মাহবুব (২২), সাব্বির (২৫) প্রভাতি ফিলিং ষ্টেশনের কর্মচারী মোহন (১৬) সহ উভয় পক্ষের প্রায় ১৫ জন আহত হন। আহতদের মধ্যে আলতাফুর রহমান সোহেল এর অবস্থা আশঙ্কাজনক বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। খবর পেয়ে থানা পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনলেও উভয় সমর্থকদের মধ্যে উওেজনা বিরাজ করায় তাৎক্ষণিক এলাকায় মাইকিং করে গোয়ালাবাজার এলাকাসহ পার্শ¦বর্তী এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী করে উপজেলা প্রশাসন।
সম্মেলনের উদ্বোধক সিলেট জেলা শ্রমিকলীগের সভাপতি প্রকৌশলী এজাজুল হক সংঘর্ষের সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, সম্মেলন চলাকালিন সময়ে পরিচয় করিয়ে দেয়াকে কেন্দ্র করে স্থানীয় যুবলীগ ও আওয়ামীলীগের একটি পক্ষের  মধ্যে সংঘর্ষের সৃষ্টি হওয়ায় সম্মেলন স্থগিত ঘোষণা করা হয়েছে।
ওসমানীনগর উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক আফজালুর রহমান চৌধুরী নাজলু বলেন সোহেল সমর্থকরা আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান প্রভাতি ফিলিং ষ্টেশনে হামলা করে পাম্পের মিশিনসহ আসবাবপত্র ভাংচুর করে ও ক্যাশ কাউন্ডারে থাকা ৮ লক্ষ টাকা ছিনিয়ে নেয়। সব মিলিয়ে তাদের হামলায় আমার  প্রায় ২২ লক্ষ টাকার ক্ষতি সাধন হয়েছে।
ওসমানীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো: মুরসালিন জানান, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ডিবি পুলিশসহ অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। উৎশৃঙ্খল ঘটনা এড়াতে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে।
ওসমানীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত আলী বলেন এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলার স্বার্থে গোয়ালাবাজারসহ আশ-পাশ এলাকায় ১৪৪ ধারা জারী করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত এটা বলবৎ থাকবে।