স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেট বিভাগের ৭টি পৌরসভায় আজ শনিবার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। নির্বাচন নির্বিঘ্ন করতে সবধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এই ৭ পৌরসভার ৯১ ভোট কেন্দ্রের মধ্যে ৭০টিরও বেশি ভোট কেন্দ্র ঝুঁকিপূর্ণ বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।
তবে যে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা এড়াতে ৪ স্তরের নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলার কথা জানিয়েছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। এছাড়া ভোট হতে যাওয়া ৭টি পৌরসভায় বুধবার থেকে মাঠে নেমেছেন ৭ জন জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট। মোতায়েন করা হয়েছে ২১ প্লাটুন বিজিবি সদস্য। বিজিবি, র্যাব, পুলিশ, আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫ হাজার সদস্য মাঠে রয়েছেন।
আজ শনিবার সিলেট বিভাগের সুনামগঞ্জ জেলার সুনামগঞ্জ সদর, ছাতক, জগন্নাথপুর, মৌলভীবাজার জেলার কমলগঞ্জ, কুলাউড়া ও হবিগঞ্জ জেলার মাধবপুর ও নবীগঞ্জ পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সূত্রে জানা গেছে, একটি ভোট কেন্দ্রে ৪ জন পুলিশ, ব্যাটালিয়ান আনসার, সাধারণ আনসারসহ মোট ১৩ জন দায়িত্ব পালন করবেন। ভোট কেন্দ্রের বাইরে নিরাপত্তায় নিয়োজিত থাকবেন পুলিশের একটি টিম। সাদা পোশাকে থাকবেন পুলিশ সদস্যরা। এছাড়াও, প্রতিটি পৌর এলাকায় ৮ জন করে থাকবে র্যাবের টহল টিম। একইভাবে ৮ জনের রিজার্ভ টিমও থাকবে। একটি পৌরসভায় র্যাবের ৩২ সদস্যের টহল টিম এবং ৩২ সদস্যের রিজার্ভ টিম থাকবে। প্রতি পৌরসভায় থাকবে ৩ প্লাটুন বিজিবি। জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের নেতৃত্বে কাজ করবে বিজিবি।
সুনামগঞ্জের অতিরিক্ত চীফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কুদরত-এ-এলাহী সুনামগঞ্জ পৌরসভায়, সুনামগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট শুভা দীপ পাল ছাতক পৌরসভায়, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো: রাগীব নুর জগন্নাথপুর পৌরসভায়, মৌলভীবাজারের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট বেগম হোসনে আরা বেগম কমলগঞ্জ পৌরসভায়, জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট এম. মিজবাহ উর রহমান কুলাউড়া পৌরসভায়, হবিগঞ্জের জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মোহাম্মদ নূরুল হুদা চৌধুরী মাধবপুর পৌরসভায় ও জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট পবন চন্দ্র বর্মন নবীগঞ্জ পৌরসভার দায়িত্ব পালন করছেন। ১৪ জানুয়ারি থেকে ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত তারা এই দায়িত্বে থাকবেন। নির্বাচনী এলাকায় নির্বাচনী সহিংসতার তাৎক্ষণিক বিচার কার্যক্রম করবেন।
উপ মহা-পুলিশ পরিদর্শক (ডিআইজি) সিলেটের রেঞ্জ কার্যালয়ের পুলিশ সুপার (গণমাধ্যম) মোঃ জেদান আল মুসা বলেন, নির্বাচন কমিশনের চাহিদা ও নির্দেশনা অনুযায়ী ফোর্স মোতায়েন করা হয়েছে। ভোটাররা যাতে নির্বিঘ্নে ভোট কেন্দ্রে আসতে পারেন ও ভোট দিতে পারেন-এজন্যে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা মাঠে থাকবেন। নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী তারা কাজ করবেন।
সূত্র জানায়, ৭ পৌরসভায় ১ হাজার ৫০ জন বিজিবি সদস্য, প্রায় ১ হাজার র্যাব সদস্য, প্রায় ১ হাজার ৫০০ পুলিশ সদস্য, আর্মড পুলিশ, ব্যাটালিয়ন আনসার, সাধারণ আনসারসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর প্রায় ৫ হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ভোট কেন্দ্রের পাশাপাশি কেন্দ্রের আশপাশ এলাকায় ও থাকবে বিশেষ নজরদারি। থাকবে স্ট্রাইকিং ফোর্স।
পৌরসভাগুলো রিটার্নিং কর্মকতূার কার্যালয় সূত্র জানা গেছে, ৭ পৌরসভার মোট ভোট কেন্দ্র ৯১টি। ভোট কক্ষ ৪৭৮টি। সুনামগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ৪৬ হাজার ৯৭৯ জন। পুরুষ ২৩ হাজার ২২০ জন ও ২৩ হাজার ৭৫৯ জন হলেন মহিলা ভোটার। ছাতক পৌরসভার মোট ভোটার ৩০ হাজার ২৭৮ জন। পুরুষ ভোটার ১৫ হাজার ২৭২ জন ও মহিলা ১৫ হাজার ৬ জন। জগন্নাথপুর পৌরসভার মোট ভোটার ২৮ হাজার ৬০১ জন। পুরুষ ভোটার ১৪ হাজার ৩৬৪ জন ও মহিলা ১৪ হাজার ২৩৭ জন। কমলগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ১৩ হাজার ৯০৫ জন। পুরুষ ৬ হাজার ৮৮৭ জন ও মহিলা ভোটার ৭ হাজার ১৮ জন। কুলাউড়া পৌরসভার মোট ভোটার ২০ হাজার ৭৬৯ জন। পুরুষ ভোটার ১০ হাজার ২২৮ জন ও মহিলা ভোটার ১০ হাজার ৫৩১ জন। নবীগঞ্জ পৌরসভার মোট ভোটার ১৮ হাজার ৬৯৯ জন। পুরুষ ভোটার ৯ হাজার ১৩৯ জন ও ৯ হাজার ৫৬০ জন হলেন মহিলা ভোটার। মাধবপুর পৌরসভার মোট ভোটার ১৫ হাজার ৯৮৭ জন। পুরুষ ভোটার ৮ হাজার ১০৭ জন ও ৭ হাজার ৮৮০ জন হলেন মহিলা ভোটার।
জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : আজ সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌরসভার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। কে হচ্ছেন পৌর পিতা ও সংশ্লিষ্ট ওয়ার্ডের অভিভাবক। এ নিয়ে পৌরবাসীর মধ্যে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা। ১৫ জানুয়ারি শুক্রবার থেকে প্রচার-প্রচারণা বন্ধ রয়েছে। প্রচারণা বন্ধ থাকলেও নিজেদের বিজয় নিশ্চিতের লক্ষ্যে প্রার্থীরা বিভিন্ন কৌশল চালিয়ে যাচ্ছেন। শুক্রবার কেটেছে নির্ঘুম রাত।
এদিকে-নির্বাচনটি শান্তিপূর্ণ ভাবে সম্পন্নের লক্ষ্যে সব ধরণের প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে বলে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মুজিবুর রহমান জানান। ৯টি ওয়ার্ড নিয়ে গঠিত জগন্নাথপুর পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ২৮৬৪২ জন। ইভিএম পদ্ধতিতে এই প্রথম বারের মতো ভোট গ্রহণ হবে। ১২টি ভোট কেন্দ্রের ৭৫টি বুথে সকাল ৮ থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত একটানা ভোট গ্রহণ চলবে। ভোটারদের স্বাস্থ্যবিধি মেনে ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে হবে। প্রতিটি বুথে ইভিএম সরঞ্জাম বসানো হচ্ছে। দায়িত্ব বুঝিয়ে দেয়া হচ্ছে ভোট গ্রহণ কর্মকর্তা ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীকে। নির্বাচনের দিন পৌর এলাকায় সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া সব ধরণের যানবাহন চলাচল বন্ধ থাকবে।
এবারের নির্বাচনে মেয়র পদে ৫, নারী কাউন্সিলর পদে ৯ ও পুরুষ কাউন্সিলর পদে ৩৯ জন সহ মোট ৫৩ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তারা হলেন মেয়র পদে আ’লীগ মনোনীত প্রার্থী বর্তমান পৌর মেয়র মিজানুর রশীদ ভূঁইয়া (নৌকা), স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী সাবেক পৌর মেয়র আক্তারুজ্জামান আক্তার (চামচ), বিএনপি মনোনীত প্রার্থী হারুনুজ্জামান (ধানের শীষ), স্বতন্ত্র প্রার্থী আমজদ আলী শফিক (মোবাইল ফোন) ও স্বতন্ত্র প্রার্থী বিষ্ণু চন্দ্র রায় (জগ)। এর মধ্যে মিজান-আক্তার দ্বি-মুখি লড়াই হবে বলে ভোটারদের ধারণা।
এছাড়া ১, ২ ও ৩ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে বর্তমান নারী কাউন্সিলর আয়ারুন্নেছা (আনারস) ও শিল্পী বেগম (চশমা)। ৪, ৫ ও ৬ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে সাবেক নারী কাউন্সিলর বাহারজান বিবি (জবাফুল), পিয়ারা বেগম (চশমা) ও অর্চনা ধর (আনারস)। ৭, ৮ ও ৯ নং সংরক্ষিত ওয়ার্ড থেকে বর্তমান নারী কাউন্সিলর নার্গিস ইয়াসমিন (আনারস), সাবেক কাউন্সিলর সুর্বনা শর্মা (চশমা), বাবলী বেগম (টেলিফোন) ও ফুলবানু বেগম (জবাফুল)।
সাধারণ ১ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর খলিলুর রহমান (পানির বোতল), আবদুল ওয়াহাব (টেবিল ল্যাম্প), শাহিন আহমদ (পাঞ্জাবি), আবদুল বাশির (উটপাখি), ছালিক মিয়া (ব্ল্যাক বোর্ড) ও আলাউর রহমান (ডালিম)। ২ নং ওয়ার্ড থেকে জিতু মিয়া (উটপাখি), মল্লিক এমরান (পানির বোতল) ও এমদাদুল হক (পাঞ্জাবি)। ৩ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর তাজিবুর রহমান (পাঞ্জাবি), লিটন মিয়া (পানির বোতল) ও আলাল হোসেন (উটপাখি)। ৪ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর দিলোয়ার হোসেন (পানির বোতল), সাবেক কাউন্সিলর সুহেল আমিন (ব্ল্যাক বোর্ড), কামাল হোসেন (পাঞ্জাবি), তাইফুর রহিম নাহিদ (ডালিম), আবদুল কাইয়ূম বাবর (টেবিল ল্যাম্প), ফজর আলী (উটপাখি), কবির মিয়া (গাজর) ও বাবুল আহমদ বাবুল (ব্রিজ)। ৫ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র শফিকুল হক (পানির বোতল), আবদুল কাইয়ূম (উটপাখি) ও মাঈন উদ্দিন (পাঞ্জাবি)। ৬ নং ওয়ার্ড থেকে কৃষ্ণ চন্দ্র চন্দ (পানির বোতল), আবদুল কাদির (উটপাখি), গোবিন্দ দেব (পাঞ্জাবি) ও আলী হোসেন (ডালিম)। ৭ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর ও প্যানেল মেয়র-২ সুহেল আহমদ (উটপাখি), ছালিক আহমদ (ডালিম), শেখ ইলিয়াছ আলী (পানির বোতল) ও সৈয়দ জিতু মিয়া (পাঞ্জাবি)। ৮ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর আবাব মিয়া (পাঞ্জাবি), সাফরোজ ইসলাম মুন্না (পানির বোতল), শামীম আহমদ (উটপাখি) ও শাহানুল হক (ডালিম)। ৯ নং ওয়ার্ড থেকে বর্তমান পৌর কাউন্সিলর দিপক গোপ (ব্ল্যাক বোর্ড), ছমির উদ্দিন (ডালিম), আবু তালেব (উটপাখি) ও আনহার মিয়া (পানির বোতল) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কমলগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা জানিয়েছেন : মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন আজ ১৬ জানুয়ারি (শনিবার)।
সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট প্রদানের মাধ্যমে পৌরবাসী তাদের পছন্দের প্রার্থী নির্বাচিত করবেন।
মেয়র পদে ৪ জন প্রাথী থাকলেও মূল লড়াই হবে ত্রিমুখী। নিবার্চনকে কেন্দ্র করে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে পুলিশ সদস্যদের পাশাপাশি র্যাব, বিজিপি ও আনসার সদস্যরাও মাঠে থাকবেন।
পৌরসভার নিবার্চনে ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচন সম্পন্ন করতে সকল ধরনের প্রস্তুতি গ্রহণ সম্পন্ন করেছে নির্বাচন অফিস।
আসন্ন মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে এবার মেয়র পদে ত্রিমুখী লড়াই হবে।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী মো. জুয়েল আহমদ এর (নৌকা) প্রতীকের সাথে দলের বিদ্রোহী ও স্বতন্ত্র প্রার্থী আনোয়ার হোসেন (নারিকেল গাছ) ও মো. হেলাল মিয়া (জগ) এই তিনজনের মধ্যে লড়াই হবে। তবে কে মেয়র নির্বাচিত হবেন ভোট গণনার পরই জানা যাবে। এই নির্বাচনে মেয়র পদে ৪ প্রার্থী এবং কাউন্সিলর পদে ৩১ জন ও সংরক্ষিত মহিলা কাউন্সিলর পদে ১১ জন সহ মোট ৪৬ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
কমলগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচনে মেয়র পদে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী উপজেলা যুবলীগের আহবায়ক বর্তমান মেয়র মো. জুয়েল আহমদ (নৌকা) প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করছেন। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে জেলা যুবলীগের সহ-সভাপতি, সাবেক পৌর কাউন্সিলর মো: আনোয়ার হোসেন (নারিকেল গাছ) ও উপজেলা পরিবহন লীগ নেতা, ঠিকাদার মো. হেলাল মিয়া (জগ) বিদ্রোহী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন।
অন্যদিকে আওয়ামী ঘরানার শক্তিশালী দুজন বিদ্রোহী প্রার্থী হওয়ায় বিএনপির একক প্রার্থী মো. আবুল হোসেন ধানের শীষ প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। তবে আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী দুই প্রার্থী আনোয়ার হোসেন ও হেলাল মিয়াকে দলীয় শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে ইতিমধ্যে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডের ৯টি ভোটকেন্দ্রে ব্যালেটে ভোটগ্রহণ করা হবে। দ্বিতীয় শ্রেণির এই পৌরসভায় মোট ভোটার সংখ্যা ১৩ হাজার ৫০৯ জন।
পৌরসভার নিবার্চনকে কেন্দ্র করে অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নিবার্চনের লক্ষ্যে নিবার্চন কমিশন সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও পৌর নির্বাচনের সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা জাহাঙ্গীর আলম তালুকদার জানান, ব্যালেটের মাধ্যমে দ্বিতীয় ধাপে পৌরসভার ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য সব ধরণের প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে। চার ধরণের নিরাপত্তা ব্যবস্থা এবং ৯ জন ম্যাজিস্ট্রেট দায়িত্ব পালন করবেন। নির্বাচনের পরিবেশও সুষ্ঠুু রয়েছে।
কমলগঞ্জ উপজেলা নিবার্হী কর্মকর্তা আশেকুল হক বলেন, নিবার্চনের সুষ্ঠ, সুন্দর ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ নিশ্চিত করা হয়েছে। এজন্য সব ধরণের প্রস্তুতি গ্রহণ করা হয়েছে।
আতিকুর রহমান মাহমুদ, ছাতক থেকে জানিয়েছেন : ছাতক পৌর সভায় ভোট গ্রহণ আজ।
শনিবার (১৬জানুয়ারি) সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা ভোট গ্রহণ করা হবে। ইতোমধ্যে নির্বাচনী সকল প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে উপজেলা নির্বাচন কমিশন।
পৌরসভা নির্বাচনে দু’মেয়র প্রার্থীসহ ৯টি ওয়ার্ডে ৩৩জন সাধারণ কাউন্সিলর ও সংরক্ষিত ওয়ার্ডে ১৪জন প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
জানা যায়, শিল্প নগর ছাতক শহর একটি সম্মৃদ্ধশালী জনপদ। এখানকার শিল্প এবং প্রাকৃতিক সম্পদ জাতীয় উন্নয়নে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। আর এ শহরকে নিয়ে গঠিত হয়েছে ছাতক পৌরসভা। ১৯৯৭ সালের ৭ সেপ্টেম্বর ছাতক পৌরসভা স্থাপিত হয়। ১৮ সেপ্টেম্বর ২০০৮ সালে এ পৌরসভাটি ক’ শ্রেণীতে উন্নীত হয়। পৌরসভার আয়তন ১০.০বর্গ কিলোমিটার।
জনসংখ্যা রয়েছেন ৪৪হাজার ৩৬৪জন। ২০০৪ সালের ১৭ নভেম্বর থেকে টানা তিনবার নির্বাচিত হয়েছেন আওয়ামীলীগের প্রার্থী আবুল কালাম চৌধুরী। পৌরসভার ৯টি ওয়ার্ডে ৩০হাজার ২৮০ জন ভোটার রয়েছেন। ১৯টি কেন্দ্রের ৭৭টি ভোট কক্ষে পৌরসভায় ভোট গ্রহণ চলবে। এবার পৌরসভা নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির দু’মেয়র প্রার্থীকে ঘিরে সরগরম ভোটের মাঠ।
মেয়র পদে আওয়ামীলীগের মনোনীত প্রার্থী, পৌরশহরের বাগবাড়ি মহল্লার মরহুম আরজ মিয়া চৌধুরীর পুত্র বর্তমান মেয়র আবুল কালাম চৌধুরী (নৌকা) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অপরদিকে বিএনপির মনোনীত প্রার্থী, পৌরশহরের বাগবাড়ি মহল্লার সাবেক পৌর কাউন্সিলর রজনু আহমদের সহধর্মিনী, নোয়ারাই ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মরহুম হাবিবুর রহমান (হবি চেয়ারম্যান) এর কন্যা, ছাতক উপজেলা পরিষদের সাবেক মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান রাশিদা আহমদ ন্যান্সি (ধানের শীষ) প্রতীক নিয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষা নির্বাচন উপহার দেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনের প্রতি জোর দাবী জানিয়েছেন ছাতক পৌরবাসী।