সিলেটে কাল সাড়ে ৪ লাখ শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে

51

SCC Pic-23.4.15-1স্টাফ রিপোর্টার :
সিলেটের সিভিল সার্জন ডা.আজহারুল ইসলাম বলেছেন, একটি শিশুর সুস্থভাবে বেঁচে থাকার জন্য ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খুবই উপকারী। ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুলটি শিশুদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ। এটার কোন পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া হওয়ার ঝুঁকি নেই। ভিটামিন ‘এ’ দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধিতে সহায়তা করে। এই ক্যাপসুল  অপুষ্টিজনিত অন্ধত্ব থেকে শিশুদের রক্ষা করে, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায় এবং শিশুমৃত্যু ঝুঁকি কমায়। আগামীকাল ২৫ এপ্রিল শনিবার জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইনে সিলেটের ১২টি উপজেলার ৪ লাখ ৫৭ হাজার শিশুকে ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। তিনি বলেন, ইতিপূর্বে আমরা সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন ২০১৫ পালন উপলক্ষে জেলা পর্যায়ে সাংবাদিকদের সাথে মতবিনিময় সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সিভিল সার্জন অফিস মিলনায়তনে এ মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. রাাহিল এর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, ডেপুটি সিভিল সার্জন ডা. মোঃ নূরে আলম শামিম, ম্যালেরিয়া সিলেট বিভাগের এসএমও ডা. ওমর ফারুক, ডি.এম.সি এন্ড আইও ডা. নভোজ্যোতি দেব, সিনিয়র স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা সুজন বনিক।
সভাপতির বক্তব্যে সিলেটের সিভিল সার্জন আরো বলেন, ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী প্রত্যেক শিশুকে ১টি করে নীল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে বছরে দুবার ১টি করে লাল রঙের ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। শিশুর বয়স ৬ মাস পূর্ণ হলে মায়ের দুধের পাশাপাশি পরিমাণ মত ঘরে তৈরী সুষম খাবার খাওয়াতে হবে। ভ্রমণে থাকাকালীন শিশুরা যাতে বাদ না পড়ে সেজন্য রেল ষ্টেশন, বাস স্ট্যান্ড, ফেরি ঘাট, লঞ্চ টার্মিনালে শিশুকে ভিটামিন ‘এ’ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে ভিটামিন ‘এ’ এর অভাব জনিত সমস্যা প্রতিরোধে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে জাতীয় পুষ্টি সেবা, জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠান বছরে দুইবার জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উদযাপন করে। এরই ধারাবাহিকতায় ‘ভিটামিন ‘এ’ খাওয়ান, শিশু মৃত্যু ঝুকি কমান’ শ্লোগানকে কেন্দ্র করে আগামী ২৫ এপ্রিল ২০১৫ শনিবার জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন ২০১৫ সারাদেশব্যাপী পালিত হবে। সকল ক্যাম্পেইন কেন্দ্র সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন এর উদ্দেশ্য হলো ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের মধ্যে ভিটামিন ‘এ’-এর অভাবজনিত রাতকানা রোগের প্রাদুর্ভাব ১ শতাংশের নীচে কমিয়ে আনা ও তা অব্যাহত রাখা। ৬ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে অপুষ্টিজনিত মৃত্যু প্রতিরোধ করা।
সিলেট জেলার জাতীয় ভিটামিন “এ” প্লাস ক্যাম্পেইন পালনের কিছু তথ্য নিম্নে দেয়া হলো। সিলেট জেলার মোট জনসংখ্যা ২৯৭৮৫৭৫জন,  মোট উপজেলা ১২টি, মোট ইউনিয়ন ১০২টি, মোট ওয়ার্ড ৩০৬টি, মোট অস্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ২৪৪৮টি, মোট স্থায়ী টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ১২টি, মোট ইউনিয়ন অতিরিক্ত কেন্দ্রের সংখ্যা ১০২টি, মোট ভ্রাম্যমান টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ৩৭টি, মোট টিকাদান কেন্দ্রের সংখ্যা ২৫৯৯টি, মোট স্বেচ্ছাসেবীর সংখ্যা ৬৯৭২জন, সিলেট জেলার (৬-১১) মাস বয়সী শিশুর মোট সংখ্যা ৪৮৭৬৯জন, (১২-৫৯) মাস বয়সী শিশুর মোট সংখ্যা ৪০৮৯২১ জন (৬-১১) মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশুর মোট সংখ্যা ১৭৫জন ও (১২-৫৯) মাস বয়সী প্রতিবন্ধী শিশুর মোট সংখ্যা ৬৮২ জন।
সিকিকের সংবাদ সম্মেলন : জাতীয় ভিটামিন ‘এ’ প্লাস ক্যাম্পেইন উপলক্ষে আগামী ২৫ এপ্রিল শনিবার সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪ টা পর্যন্ত সারা দেশের ন্যায় সিলেট সিটি কপোরেশনের আওতাধীন ২৭ ওয়ার্ডেও একযুগে শিশুদেরকে ভিটামিন এ খাওয়ানো হবে। সিলেট সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুরে সিটি করপোরেশন হল রুমে সংবাদ সম্মেলন করে এ তথ্য জানানো হয়েছে। এ দিন নগরীর ২১০ টি স্থায়ী-অস্থায়ী এবং ভ্রাম্যমান কেন্দ্রে ৬ থেকে ১১ মাস বয়সী প্রত্যেক শিশুকে ১টি করে নীল রংয়ের ভিটামিন এ ক্যাপসুল ও ১২ থেকে ৫৯ মাস বয়সী শিশুকে বছরে দুবার ১টি করে লাল রংয়ের ভিটামিন এ ক্যাপসুল খাওয়ানো হবে। ২১০ টি কেন্দ্রের মধ্যে রেলওয়ে স্টেশন, বাস টার্মিনাল, লঞ্চ ঘাটও রয়েছে। সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য রাখেন,সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডা.সুধাময় মজুমদার। উপস্থিত ছিলেন,সচিব রেজা-ই আরফিন, ইউনিসেফের প্রতিনিধি মিম্মি হোসেন, সিসিকের স্বাস্থ্য বিভাগের কর্মকর্তা গোপাল রঞ্জন দাস, আলবাব আহমদ চৌধুরী এবং প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকবৃন্দ।