হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
হবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে জলাশয়ে বাঁধ দেয়াকে কেন্দ্র করে দুই গ্রামবাসীর মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। কয়েক ঘণ্টা ব্যাপী দফায় দফায় সংঘর্ষে স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানসহ অর্ধশতাধিক লোক আহত হয়েছেন।
শুক্রবার (১৮ ডিসেম্বর) সকাল ৮টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত উপজেলার কামালখানী ও মজলিশপুর গ্রামবাসীর মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে অন্তত ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ারশেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে ১৮ জনকে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, কানিভাঙ্গা নামে একটি পঞ্চায়েতি জলাশয়ে বাঁধ দিয়েছিল কামালখানী গ্রামের বাসিন্দারা। শুক্রবার পার্শ্ববর্তী মজলিশপুর গ্রামের লোকজন বাঁধটি ভেঙে ফেলে। বিষয়টি নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হলে মজলিশপুরের লোকজন কোনো সদুত্তর দিতে পারেনি। তখন তাদেরকে ওই এলাকা থেকে তাড়িয়ে দেয় প্রতিপক্ষ।
এরপর মজলিশপুরের লোকজন মাইকে ঘোষণা দিয়ে তাদের লোকজনকে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে বাঁধ এলাকায় যাওয়ার আহ্বান জানায়। খবর পেয়ে কামালখানী গ্রামের লোকজনও মাইকে তাদের লোকজনকে আহ্বান জানায়।
উভয়পক্ষ দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হলে চরম উত্তেজনা দেখা দেয়। একপর্যায়ে উভয়পক্ষের লোকজন পরস্পরের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়লে সংঘর্ষ শুরু হয়। থেমে থেমে কয়েক দফায় চলে হামলা-পাল্টা হামলা।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) মাসুদ রানা, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বানিয়াচং সার্কেল) শেখ মো. সেলিম স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বিপুল সংখ্যক পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে ছুটে যান। তাদের দীর্ঘক্ষণের চেষ্টায় সংঘর্ষ নিয়ন্ত্রণে আসে।
এ সময় পুলিশ অন্তত ২০ রাউন্ড রাবার বুলেট ও টিয়ার সেল নিক্ষেপ করে। ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়ে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান গিয়াস উদ্দিন আহমেদ।
আহতদের মধ্যে মজলিশপুর গ্রামের নজির মিয়া (২৫) নামে এক যুবককে গুরুতর অবস্থায় সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। এছাড়া আহতদের মধ্যে নাম জানা গেছে- আবিদুর, লাল মিয়া, মনছুর, অলি হোসেন, জমির, অপু সরকার, নিপু, সাজিদ, নূরুল আমীন, সাজলু, ফজলু, জিলু, নাজমুল, হারুন, জসিম ও আনসার মিয়ার।
অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শেখ মো. সেলিম জানান, দুর্গম হাওরে জলাশয়ে দুদল গ্রামবাসী বাঁধ দেয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
ইউএনও মাসুদ রানা বলেন, পুলিশ, জনপ্রতিনিধিসহ উপজেলা প্রশাসন ঘটনাস্থলে গিয়ে উভয়পক্ষকে শান্ত করেছে। পরিস্থিতি প্রশাসনের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।