কোম্পানীগঞ্জে যৌতুক না পেয়ে স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করে লাশ মাটিচাপা

56

স্টাফ রিপোর্টার :
কোম্পানীগঞ্জে যৌতুক না পাওয়ায় স্ত্রীকে গলাটিপে হত্যা করেছে ঘাতক স্বামী। পরে লাশ গুম করতে গিয়ে হাওড়ে মাটিচাপা দিয়েছে। গত শুক্রবার রাত ৮টায় কোম্পানীগঞ্জের পারকুল এলাকার রাকুবিল থেকে লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত আনোয়ারা বেগম (৪৮) কোম্পানীগঞ্জের পুটামারা যুগীরগাও বরজুর এলাকার আবদুল বাছিতের স্ত্রী। পুলিশ স্ত্রী হন্তারক বাছিতকে আটক করেছে। পরে ময়নাতদন্তের জন্য সিলেট এমএজি ওসমানী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে লাশ প্রেরণ করে পুলিশ।
পুলিশ ও নিহতের পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, ভোলাগঞ্জ পাথর কোয়ারির শ্রমিক আবদুল বাছিত কোয়ারিতে কাজ করার সময় তার চেয়ে প্রায় ১৫ বছরের বড় আনোয়ারাকে বিয়ে করে। এটি ছিলো বাছিতে দ্বিতীয় বিয়ে। প্রথম স্ত্রী দ্বিতীয় বিয়ের পর থেকে তার পিত্রালয়ে অবস্থান করছে। বিয়ের পর বিভিন্ন সময় আবদুল বাছিত আনোয়ারার কাছে যৌতুক দাবি করে আসছিলো। এ নিয়ে পারিবারিকভাবে একাধিক শালিস বৈঠকও হয়।
এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার রাতে হঠাৎ করেই নিঁেখাজ হয়ে যায় আবদুল বাছিত ও আনোয়ারা দম্পতি। প্রায় ২৪ ঘন্টা পর বৃহস্পতিবার রাত ১১টার দিকে সারা শরীরে কাদা মাখিয়ে বাছিত গ্রামের ফিরে আসে। এ সময় সে জানায় তাকে দৃর্বৃত্তরা মারধোর করে স্ত্রী আনোয়ারাকে ছিনিয়ে নিয়েছে। এলাকাবাসী বিষয়টি স্থানীয় পুটামারা ইউপি চেয়ারম্যান এখলাসুর রহমানকে অবগত করেন। ইউপি চেয়ারম্যান বিষয়টি পুলিশকে জানানোর জন্য আবদুল বাছিতকে থানায় নিয়ে যান। স্ত্রীকে অপহরণের অভিযোগ করার সময় আবদুল বাছিতের কথাবার্তায় গরমিল পেলে পুলিশ তাকে নিবিড়ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে। জিজ্ঞাসাবাদে আবদুল বাছিত তার স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে হত্যার কথা স্বীকার করে জানায়, আনোয়ারাকে গলাটিপে হত্যা করে স্থানীয় রাকুবিলে লাশ পুঁতে রেখেছে। শুক্রবার রাত ৮টায় তার দেখানো মতে কোম্পানীগঞ্জ থানা পুলিশ আনোয়ারার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতাল মর্গে পাঠায়। গতকাল শনিবার ময়নাতদন্ত শেষে লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়।
এ ব্যাপারে নিহতের ছেলে ফরহাদ আহমদের অভিযোগ তার পিতা আবদুল বাছিত প্রথমপক্ষের শ্বশুরবাড়ি লোকজন নিয়ে এ হত্যাকান্ড ঘটিয়েছেন।
এ ব্যাপারে পুটামারা ইউপি চেয়ারম্যান এখলাসুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, আবদুল বাছিত নাটক সাজিয়ে স্ত্রী হত্যার বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করে।
কোম্পানীগঞ্জ থানার ওসি দেলোয়ার হোসেন বলেন, যৌতুক না পাওয়ায় পারিবারিক বিরোধের জের ধরে ঘাতক বাছিত স্ত্রীকে হত্যা করে লাশ হাওড়ে পুতে রাখে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই থানায় মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।