জরিনা ও বাদাইর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী ॥ খুন করে পুকুর পারে লাশ চাপা দিতে চেয়েছিলাম

120

OIUTস্টাফ রিপোর্টার :
ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শাহজাহানকে জরিনাসহ বাদাই মিয়া ও সাইদুর রহমান দা ও বাঁশের লাঠি দিয়ে খুন করে। পরে লাশটি পুকুরের পারে চাপা দিতে গেলে লোকজনের শব্দ পেয়ে তারা লাশ ফেলে আসে। গতকাল সদর উপজেলার শিবেরবাজার এলাকার হাটখোলা প্রামের শুটকি ব্যবসায়ী আতাউর রহমান শাহজাহানকে খুনের ঘটনায় গ্রেফতারকৃত ৪ জনের মধ্যে জরিনা বেগম (৩২) ও বাদাই মিয়া (৩২) আদালতে ১৬৪ ধারায় এভাবে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দিয়েছেন। গতকাল সোমবার মাগরিবের পর সিলেট মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট (আমলী-২) মোঃ সায়েদুল করিমের আদালতে তারা এ জবানবন্দী দেন। ম্যাজিস্ট্রেটের খাসকামরায় প্রায় ২ ঘন্টায় জবানবন্দীতে তারা পুরো ঘটনার বর্ণানা দেয়। ধৃত জরিনা জালাবাবদ থানার উত্তর হাটখোলা গ্রামের মৃত রিফাত উল্লাহর স্ত্রী ও বাদাই মিয়া একই এলাকার আব্দুজ জহিরের পুত্র।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা জালালাবাদ থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোঃ তারিকুল ইসলাম জানান, ঘটনার সাথে জড়িত অপর আসামী একই এলাকার আব্দুন নূরের পুত্র সাইদুর রহমান (২৪ )কে ওই মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে ও মকবুল হোসেনের পুত্র দিলদার হোসেন (৩০)কে ঘটনার সাথে জড়িত সন্দেহে আপাতত ৫৪ ধারায় আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। যদি তদন্তে খুনের সাথে দিলদারের কোন সংশ্লিতা পাওয়া যায় তাহলে ওই মামলায় তাকেও গ্রেফতার দেখানো হবে। এদিকে, গতকাল রাতে জরিনা বেগম ও বাদাই মিয়া আদালতে জবানবন্দী শেষে কারাগারে পাঠানো হয়।
আদালতে জরিনা বেগম ও বাদাই মিয়া ১৬৪ ধারায় জবানবন্দীর বরাত দিয়ে এসআই তারিকুল ইসলাম জানান, জরিনা বেগম স্বামীর কাছ থেকে তালাকপ্রাপ্ত হওয়ার পর এক প্রতিবন্ধী ছেলে নিয়ে বাবার বাড়িতে থাকতেন। তার ঘরে বাদাই মিয়া ও সাইদুর রহমান নিয়মিত আসা-যাওয়া করতো। গত শুক্রবার রাতে জরিনার ঘরে ব্যবসায়ী আতাউর রহমান শাহজাহানকে তারা দেখে ক্ষিপ্ত হয়। এনিয়ে প্রথমে বাকবিতন্ডা হয়। এক পর্যায়ে জরিনাসহ বাদাই মিয়া ও সাইদুর রহমান দা ও বাঁশের লাঠি দিয়ে তাকে খুন করে। পরে লাশটি পুকুরের পাড়ে চাপা দিতে গেলে লোকজনের শব্দ পেয়ে তারা লাশ ফেলে আসে। সকালে সবাই পালিয়ে যায় বিভিন্ন স্থানে। পুলিশ তদন্ত করে গত রবিবার সকালে প্রথমে অভিযান চালায় কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার কাঁঠালবাড়ি এলাকায়। এক পর্যায়ে সেখান থেকে জালালাবাদ থানার ওসি আখতার হোসেন বিকেলে আটক করেন বাদাই মিয়াকে। পরে একে একে আটক করা হয় জরিনা বেগম ও সাইদুর রহমান এবং দিলদারকে। পরে ঘটনাস্থল থেকে একটি রক্তমাখা দা ও একটি রক্তমাখা বাঁশ উদ্ধার করে আলামত হিসেবে জব্দ করেছে পুলিশ।
উল্লেখ্য, গত শনিবার সকাল থেকে স্থানীয় লোকজন হাটখোলা ঈদগাহ ময়দানের উত্তর পাশে শাহজাহানের গলাকাটা লাশ দেখতে পান। ওইদিন সকাল ৮টার দিকে শিবেরবাজার ফাঁড়ি পুলিশ তার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ওসমানী হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করে। এ ঘটনায় নিহত ব্যবসায়ী শাহজাহানের ছোটভাই কবীর আহমদ বাদী হয়ে জালালাবাদ থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। যার নং ১২। তারিখ-২১/৩/১৫।