স্টাফ রিপোর্টার
যথাযথ ধর্মীয় মর্যাদা, ভাবগাম্ভীর্য ও উৎসাহ-উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে সোমবার সিলেটে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম ধর্মীয় উৎসব পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপিত হয়েছে। মহান আল্লাহর অপার অনুগ্রহ লাভের আশায় ঈদের জামাত শেষে ধর্মপ্রাণ মুসলমানরা সামর্থ্য অনুযায়ী পশু কুরবানি করেন। ঈদের দিন থেকে তিনদিন চলে এই কুরবানি।
আল্লাহর রাহে নিজের জানমাল ও প্রিয়তম জিনিস সন্তুষ্ট চিত্তে বিলিয়ে দেওয়ার এক সুমহান শিক্ষা নিয়ে প্রতি বছর আমাদের মধ্যে ফিরে আসে ঈদুল আজহা। ইসলামি শরিয়া অনুযায়ী পশু কুরবানি করা ওয়াজিব। পবিত্র কুরআনের সূরা কাউসারে বলা হয়েছে, ‘অতএব তোমার পালনকর্তার উদ্দেশ্যে নামাজ পড় এবং পশু কুরবানি করো।’ নামাজ শেষে মুসল্লিদের অনেকে যান কবরস্থানে। চির বিদায় নেয়া স্বজনদের কবরের পাশে দাঁড়িয়ে অশ্রæসজল চোখে এ আনন্দের দিনে তাদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে আল্লাহর দরবারে অনেকে আকুতি জানান। মুসলমানদের পবিত্র এ ধর্মীয় উৎসব উপলক্ষ্যে সিলেট নগরীর বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক ও ক্বীন ব্রীজে সাজ সজ্জিত করা হয়।
এবার ভারি বৃষ্টির কারণে জামাত অনুষ্ঠিত হয়েছে প্রধানতঃ পাড়া-মহল্লার মসজিদে। ঈদগাহ বা খোলা মাঠে খুব বেশি ঈদ-জামাতের আয়োজন করা যায়নি। সিলেট নগরীতে সবচেয়ে বড় জামাত অনুষ্ঠিত হয় সকাল ৮টায় ঐতিহাসিক শাহী ঈদগাহ ময়দানে। তবে মুসল্লিদের উপস্থিতি ছিল অন্যান্য সময়ের চেয়ে খুবই কম। ঈদের অধিকাংশ জামাত অনুষ্ঠিত হয় মসজিদে। খোলা মাঠেও বেশি জায়গায় নামাজ আদায় করা সম্ভব হয়নি।
সিলেটে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী শফিকুর রহমান চৌধুরী টিলাগড় জামে মসজিদে এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি সাবেক পররাষ্ট্র মন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন নাইওরপুল জামে মসজিদে ঈদের নামাজ পড়েন। তবে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আনোয়ারুজ্জামান চৌধুরী ঈদের নামাজ আদায় করেন শাহী ঈদগাহে। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে তিনি কথাও বলেন। এসময় মেয়র বলেন, বন্যা থেকে সিলেটসহ সারা দেশের মানুষকে এবং ইসরায়েলি আগ্রাসন থেকে ফিলিস্তিনিদের রক্ষা করতে তিনি আল্লাহতা’লার কাছে মোনাজাত করেছেন।
এদিকে টানা ভারি বর্ষণে মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হওয়ায় ও বাসাবাড়িতে পানি উঠে যাওয়ায় কুরবানি ব্যাহত হয়। পানি ধীরে ধীরে নামার পর অনেকেই পশু জবাই করেন।
এদিকে সুষ্ঠুভাবে ঈদের জামাত ও ঈদের যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতাসহ ঈদ উৎসব নির্বিঘেœ পালনে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী স্ব স্ব এলাকায় তাদের তৎপরতা অব্যাহত রাখে। ঈদ-উল-আজহা উপলক্ষ্যে বিভিন্ন হাসপাতাল, কারাগার, সরকারি শিশুসদন, ভবঘুরে কল্যাণ কেন্দ্র ও দুস্থ কল্যাণ কেন্দ্রে বিশেষ খাবার পরিবেশন করা হয়।