ভিলিয়ার্স ঝড়ে বিধ্বস্ত ক্যারিবীয়রা

15

555_55819স্পোর্টস ডেস্ক :
দক্ষিণ আফ্রিকাকে কেন চলতি বিশ্বকাপে ‘হট ফেভারিট’ বিবেচনা করা হচ্ছে তার প্রমাণ দিতেই যেন টর্পেডো এক ইনিংস খেললেন এবি ডি ভিলিয়ার্স। প্রোটিয়া অধিনায়ক সিডনিতে ক্যারিবীয় বোলারদের দুঃস্বপ্ন উপহার দিয়ে ৬৬ বলে খেলেছেন ১৬২ রানের ইনিংস।
ওয়ানডে ক্রিকেটের ইতিহাসে দ্রুততম ১৫০ রানের ইনিংসটি এখন প্রোটিয়া এই ব্যাটসম্যানের দখলে। তথ্যটি পাওয়ার পর যারা  খেলা দেখতে পারেননি তারা নিশ্চয়ই আফসোস করছেন!
সিডনিতে পুল বি’র নিজেদের তৃতীয় ম্যাচে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে ২৫৭ রানের বিশাল ব্যবধানে হারিয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টসে জিতে আগে ব্যাট করতে নেমে প্রোটিয়ারা ৫ উইকেট হারিয়ে ৪০৮ রানের বিশাল স্কোর দাঁড়ায় করায়।
পাহাড়াসম টার্গেট তাড়া করতে নেমে ৩৩.১ ওভারে মাত্র ১৫১ রানে অলআউট হয়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিং প্রদর্শনী বর্ণনা করতে ‘ধ্রুপদী কিন্তু আক্রমণাত্মক’ ব্যাকাংশটাই যথার্থ। দলীয় ১৪৫ রানের মাথায় ডু প্লেসিস আউট হওয়ার পর যখন ডি ভিলিয়ার্স ক্রিজে আসেন তখন ইনিংসের বাকি আছে ১২৪ বল। সময়ের দাবি মিটিয়ে ব্যাটিং করেছেন এই মারকুটে ব্যাটসম্যান। ৩০ ওভার শেষে প্রোটিয়াদের স্কোর ছিল দুই উইকেটে ১৪৭ রান। স্বাভাবিক ক্রিকেটীয় বিবেচনায় অনেকেই ভেবেছিলেন শেষ পর্যন্ত হয়তো ৩৩০ থেকে ৩৫০ রানের মধ্যে শেষ হবে প্রোটিয়াদের ইনিংস।
কিন্তু ওয়ানডে ইতিহাসের দ্রুততম সেঞ্চুরির মালিক লিখলেন অন্য রূপকথা। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বোলারদের নামিয়ে আনলেন কোনো এক গলির বোলারের পর্যায়ে। তবে অসাধারণ ইনিংসটি দেখে শুদ্ধ ক্রিকেট পছন্দ করেন এমন দর্শকরাও আনন্দ পেয়েছেন। মারকুটে মানসিকতা এবং ধ্রুপদী ক্রিকেট শটের যুগলবন্দি যেন ডি ভিলিয়ার্সের এই ইনিংসটি।
ইনিংসটিতে ১৭ চার এবং ৮টি ছয়ের মধ্যে ছিলো ক্রিকেটীয় শুদ্ধতা এবং উদ্ভাবনী সব শট। প্রোটিয়া অধিনায়ক সিডনিতে দেখালেন ক্রিকেটীয় ফিউশন।
দক্ষিণ আফ্রিকার ইনিংসে আসে হাশিম আমলা, ডু প্লেসিস এবং রিলে রোসুঊয়ের ব্যাট থেকে ৬৫, ৬২ এবং ৬১ রানের ইনিংস।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ কখনোই ৩০০ রানের বেশি তাড়া করে ম্যাচ জেতেনি। ৪০৯ রান তাড়া করতে জিততে হলে তাই রেকর্ডই গড়তে হতো ক্যারিবীয়দের। তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের ক্রিস গেইল ফিরেছেন ফর্মে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলেছেন ২১৫ রানের ইনিংস।  তার ভরসাতেই ছিল ক্যারিবীয়রা।
কিন্তু ক্রিস গেইল দ্বিতীয় ওভারের তৃতীয় বলে অ্যাবটের বলে বোল্ড হলে শেষ হয়ে যায় ক্যারিবীয় ঝড়ের সম্ভাবনা। তখন ওয়েস্টের ইন্ডিজের স্কোর ১ উইকেটে ১২ রান। ১৬ রানের মাথায় স্যামুয়েলস আউট হলে বড় ধাক্কা খায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
ক্যারিবীয় বোলাররা যেমন ডি ভিলিয়ার্সের ব্যাটিংয়ের কোনো জবাব দিতে পারেননি তেমনি ব্যাটসম্যানদেরও ছিল না প্রোটিয়া লেগ স্পিনার ইমরান তাহিরের ঘূর্ণির জবাব।  ডোয়াইন স্মিথ, লেন্ডন সিমন্স, দিনেশ রামদিন, ড্যারেন সামি এবং আন্দ্রে রাসেলের উইকেট নিয়ে ক্যারিয়ারে প্রথমবারের মতো ৫ উইকেট নেন ইমরান তাহির। এক পর্যায়ে ক্যারিবীয়দের স্কোর দাঁড়ায় সাত উইকেটে ৬৩ রান।
তবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক জেসন হোল্ডারের ৫৬ রানের ইনিংসটি পরাজয়ে সামান্য ব্যবধান কমিয়েছে।