আল-হেলাল, সুনামগঞ্জ থেকে :
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার টেংরাটিলায় গ্যাস ক্ষেত্রে বিপজ্জনকভাবে গ্যাস ব্যবহারের সময় আগুনে জ্বলসে গেছে এক বৃদ্ধার শরীর। উপজেলার টেংরাটিলা গ্রামে এ মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটেছে।
জানা যায়, শনিবার রাত ১০টার দিকে টেংরাটিলা গ্রামের আব্দুছ সোবহানের বসত ঘরের অবৈধ সংযোগের গ্যাসের চুলা থেকে আগুন ধরে দগ্ধ হয়েছেন মানুষিক ভারসাম্যহীন এক মহিলা। এসময় ঘরের লোকজন আসার আগেই পরিচয়হীন ঐ বৃদ্ধার পুরো শরীর জ্বলসে যায়। স্থানীয়রা রাতেই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন অগ্নিদগ্ধ বৃদ্ধাকে। এখানে ডাক্তার বিহীন বিনা চিকিৎসায় অসহ্য যন্ত্রণায় কাতরাতে থাকলে রবিবার দুপুরে সুরমা ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কামরুজ্জামানের মানবিক উদ্যোগে উন্নত চিকিৎসার জন্য সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রেরণ করা হয় তাকে। অগ্নিদগ্ধ পরিচয়হীন ওই বৃদ্ধা দীর্ঘদিন ধরে উপজেলার টেংরা বাজারে থাকতেন বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
এলাকার বাসিন্দারা জানান, গত কয়েক বছর ধরে টেংরাটিলা গ্যাস ফিল্ড এলাকার আশপাশ দিয়ে বুদবুদ আকারে বের হওয়া গ্যাস নিজেদের পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে বিপজ্জনক ভাবে ব্যবহার করছে এক শ্রেণীর দুষ্কৃতিকারী লোক। মাঝে মধ্যে নিজেরাই বুদ বুদে আগুন ধরিয়ে দিয়ে এলাকায় আতঙ্ক সৃষ্টি করে। গ্রামের আবুল কাসেম সহ চিহ্নিত একটি সিন্ডিকেট অবৈধভাবে গ্যাসের ব্যবহারের ফলে প্রায় দুর্ঘটনা ঘটে এখানে গ্যাস ক্ষেত্রে। কিছু দিন আগেও আবুল কাসেম তার বাড়ীতে নিজের পদ্ধতিতে বুদবুদ থেকে গ্যাস সংরক্ষণ করে রান্নাবান্না সহ বেচাকেনার উদ্যোগ নেয়। নাইকো সহ স্থানীয় প্রশাসন এভাবে ঝুঁকিপূর্ণ গ্যাসের বিপজ্জনক ব্যবহার নিষেধ করলেও দুষ্কৃতিকারী ব্যক্তিরা বাধা নিষেধ মানেনি। এখন তারা আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে। কোনো কিছু হওয়ার আগেই নিজেরাই আগুন ধরিয়ে দিয়ে এলাকায় আতঙ্কের সৃষ্টি করে থাকে।
জানতে চাইলো টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রের নাইকো’র নিরাপত্তা কর্মকর্তা আব্দুল হাকিম বলেছেন, স্থানীয় কিছু সংখ্যক লোকজন বিপজ্জনক ভাবে গ্যাসের ব্যবহার করতে নিষেধ করা হলেও কেউ মানছেনা। এব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসক সহ স্থানীয় প্রশাসনকে অবহিত করা হয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দা ‘আবাদি কৃষক’ আব্দুল আওয়াল জানিয়েছেন, দীর্ঘদিন ধরে টেংরাটিলা গ্যাস ক্ষেত্রের আশপাশে জমি, পুকুর, টিউবওয়েল দিয়ে বুদ বুদ আকারে বের হওয়া গ্যাস বিপজ্জনক ভাবে ব্যবহার করছে আবুল কাসেমসহ আরো অনেকে। তার নিকটবর্তী বসত ঘরের অবৈধ গ্যাস সংযোগের চুলায় রান্না করতে গিয়ে মানষিক ভারসাম্যহীন ওই মহিলা দগ্ধ হয়েছেন।
ইউপি চেয়ারম্যান শাহজাহান মাস্টার জানান, দীর্ঘদিন ধরে ঝুঁকিপূর্ণ ভাবে গ্যাস ব্যবহার করায় প্রায়ই দুর্ঘটনা সংঘটিত হয়ে থাকে। বার বার নিষেধ করলেও তারা গ্যাসের বিপজ্জনক ব্যবহার বন্ধ করেনি।