ছাতকে বিএনপি-ছাত্রলীগ সংঘর্ষ ॥ ২৫ রাউন্ড গুলি ও ককটেল বিস্ফোরণ

43

5ছাতক থেকে সংবাদদাতা :
ছাতকে হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে মিছিল দেয়াকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও বিএনপির মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গতকাল মঙ্গলবার সকালে উপজেলার গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় পথচারিসহ উভয় পক্ষের অন্তত ২৫ ব্যক্তি আহত হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ২৫ রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। সংঘর্ষ চলাকালে কয়েকেটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষ চলাকালে গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্ট এলাকায় মানুষের মধ্যে আতংক ছড়িয়ে পড়ে। মুহূর্তের মধ্যে দোকানপাঠ বন্ধ হয়ে যায় এবং পয়েন্টে এলাকায় রাখা ছোট-বড় গাড়ী দ্রুত সরিয়ে নেয়া হয়। প্রায় ঘন্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনায় সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়কে এ্যাম্বুলেন্সসহ মাল ও যাত্রীবাহী গাড়ী আটকা পড়ে দীর্ঘ যানজটের সৃষ্টি হয়। স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ৭২ ঘন্টা হরতালের সমর্থনে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরীর নেতৃত্বে বিএনপির মিছিল শেষে ট্রাফিক পয়েন্টে পথসভায় মিলিত হয়। এ সময় ছাত্রলীগ হরতাল-অবরোধ বিরোধী মিছিল বের করে  ট্রাফিক পয়েন্টের দিকে এগিয়ে এলে উভয় পক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। এক পর্যায়ে ঢিল ছোঁড়া-ছোঁড়ি শুরু হলে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। দফায়-দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ও সংঘর্ষে ঘটনায় এক ভীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ ফাঁকা গুলি ও টিয়ারসেল নিক্ষেপ করে। এ সময় ৫-৬টি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনাও ঘটে। বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান মিজানুর রহমান চৌধুরী এ ঘটনার জন্য ছাত্রলীগকে দায়ী করে জানান, বিএনপি গোবিন্দগঞ্জে পুলের মুখে সমাবেশ শেষে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ট্রাফিক পয়েন্টে পৌছলে পরিকল্পিত ভাবে ছাত্রলীগ তাদের উপর হামলা চালায়। ছাত্রলীগের পক্ষ নিয়ে পুলিশ ২৫ রাউন্ড গুলি ও টিয়ারসেল ছুঁড়েছে। এতে তিনিসহ বিএনপি নেতা আব্দুর রশীদ, যুবদল নেতা জাহাঙ্গীর আলম, ওসমান মিয়া, আবু তালেব, ফজলু খান, পিংকু দত্ত, সিরাজ মিয়া, তৌরিছ খানসহ ১৫ নেতাকর্মী আহত হয়। এদিকে উপজেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মঞ্জুর আলম ও জেলা ছাত্রলীগের মানব সম্পদ উন্নয়ন বিষয়ক সম্পাদক আব্দুল গফ্ফার এ ঘটনার জন্য বিএনপিকে দায়ী করে জানান, ছাত্রলীগের পূর্ব নির্ধারিত হরতাল-অবরোধ বিরোধী মিছিলে ইচ্ছাকৃতভাবে বাধা দেয় বিএনপি। তারা শান্তিপূর্ণ পরিবেশকে অশান্ত করতে রাজপথ অবরোধ করে রাখে। এ সময় বিএনপির পথ সভা থেকে ছাত্রলীগের মিছিলে ঢিল ছোঁড়া হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত ঘটে। এতে ইউনিয়ন আ’লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রইছ আলী, ছাত্রলীগ নেতা শিপলু আহমদ, দ্বীনুল ইসলাম শ্যামল, সুমন আহমদ, আবুল কাসেম শাহিন, সুহেল আহমদ খালেছ, আল-আমিন, আব্দুস সালাম সুজেল, বুরহান উদ্দিনসহ ১০নেতা-কর্মী আহত হয়। ছাতক থানার ওসি শাহজালাল মুন্সি ২০ রাউন্ড গুলি ও ২রাউন্ড টিয়ারসেল ছোঁড়ার ঘটনা স্বীকার করে জানান, কয়েক দফা সংঘর্ষের ঘটনা ঘটলেও বর্তমানে এখানের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। গোবিন্দগঞ্জ পয়েন্টে মোতায়েন করা হয়েছে অতিরিক্ত পুলিশ। এদিকে বিএনপির শান্তিপূর্ণ মিছিলে ছাত্রলীগ হামলা করেছে দাবী করে বিএনপি জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য, জেলা বিএনপির আহবায়ক কমিটির প্রথম সদস্য, সাবেক এমপি কলিম উদ্দিন আহমদ মিলন এ ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, পুলিশের সহযোগিতা নিয়ে এ হামলা করা হয়। এসব হামলা-মামলা করে সরকার পতনের আন্দোলন ঠেকানো যাবে না।