শেখ হাসিনার ট্রেন বহরে হামলা ॥ ২৫ বছর পর রায় আজ

39

কাজিরবাজার ডেস্ক :
দীর্ঘ ২৫ বছর পর আওয়ামী লীগ সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ট্রেনবহরে হামলা মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে। বুধবার পাবনার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালত-১ এর বিচারক রোস্তম আলী গত সোমবার উভয় পক্ষের যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে এ মামলার রায় ঘোষণার আদেশ দেন। এ সময় আসামিদের মধ্যে জেলহাজতে থাকা বিএনপির ৩০ নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন। পরে তাদের জামিন বাতিল করে জেলহাজতে পাঠিয়েছে আদালত। চাঞ্চল্যকর এ মামলার প্রধান আসামি ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টু পৌর বিএনপির সাবেক সভাপতি ও ঈশ্বরদী পৌরসভার সাবেক মেয়র মকলেছুর রহমান বাবলু এবং বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবীর দুলাল এদিন আদালতে হাজির না থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করে আদালত।
পাবনার সরকারী কৌঁসুলি আখতারুজ্জামান মুক্তা জানান, শেখ হাসিনার গুলিবর্ষণ মামলায় ৩৮ সাক্ষী আসামিদের বিরুদ্ধে সাক্ষ্য দিয়েছেন। সাক্ষ্য প্রমাণে সুস্পষ্টভাবে হামলার ঘটনায় আসামিদের সংশ্লিষ্টতা প্রমাণিত হয়েছে। ন্যক্কারজনক এ ঘটনায় তারা আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা করছেন বলেও জানান।
আসামিপক্ষের আইনজীবী মাসুদ খন্দকার জানান, এ মামলায় হাইকোর্টে লিভ টু আপীল চলমান, এরপরও রায়ের দিন ধার্য হয়েছে। তিনি জানান কোন সাক্ষীই সুনির্দিষ্টভাবে অভিযুক্ত আসামিরাই যে বোমাবাজি, গুলি করেছে তা বলেননি। রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত রায় হলে অবশ্যই আসামিরা খালাস পাবেন বলে তিনি জানান।
মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন সিনিয়র আইনজীবী গোলাম হাসনায়েন, আখতারুজ্জামান মুক্তা ও ওবায়দুল হক প্রমুখ। আসামি পক্ষে ছিলেন এ্যাডভোকেট নুরল ইসলাম গ্যাদা, মাসুদ খন্দকার ও সনৎ কুমার প্রমুখ।
উল্লেখ্য, তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ১৯৯৪ সালের ২৩ সেপ্টেম্বর দলীয় কর্মসূচীতে ট্রেনবহর নিয়ে রেলপথে খুলনা থেকে সৈয়দপুর যাচ্ছিলেন। পথে ঈশ্বরদী রেলওয়ে জংশনে তাকে বহনকারী ট্রেনটি যাত্রাবিরতি করলে ঐ ট্রেনে অতর্কিতে বৃষ্টির মতো গুলি চালানো হয়। এ ঘটনায় দলীয় কর্মসূচী সংক্ষিপ্ত করে শেখ হাসিনা ঈশ্বরদী ত্যাগ করেন। পরে ওই দিনই ঈশ্বরদী জিআরপি থানার ওসি নজরুল ইসলাম বাদী হয়ে তৎকালীন ছাত্রদল নেতা ও বর্তমানে ঈশ্বরদী পৌর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া পিন্টুসহ ৭ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠন করার পর মামলাটি তদন্ত শেষে ঈশ্বরদীর শীর্ষস্থানীয় বিএনপি, যুবদল ও ছাত্রদলের নেতাকর্মীসহ ৫২ জনকে এ মামলার আসামি করা হয়। মামলাটি দায়ের করার বছরে এ মামলায় পুলিশ কোন সাক্ষী না পেয়ে আদালতে চূড়ান্ত রিপোর্ট দাখিল করে। কিন্তু আদালত সে রিপোর্ট গ্রহণ না করে অধিকতর তদন্তের জন্য মামলাটি সিআইডিতে পাঠান। পরে সিআইডি তদন্ত করে ১৯৯৭ সালের ৩ এপ্রিল আদালতে চার্জশীট দাখিল করে।