মালয়েশিয়া থেকে সংবাদদাতা :
বিএনপির চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার ছোট ছেলে আরাফাত রহমান কোকো আর নেই। গতকাল শনিবার মালয়েশিয়ার (ইউপিপিএম) পান্তাই ডালাম হাসপাতালে তিনি ইন্তেকাল করেন। (ইন্নালিল্লাহি…রাজিউন)।
মালয়েশিয়া সময় বেলা ১টার দিকে হাসপাতালে নিয়ে গেলে আড়াইটা ও বাংলাদেশ সময় বেলা সাড়ে ১২টার দিকে কুয়ালালামপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি হাসপাতালে হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত মালয়েশিয়া বিএনপির সদস্য সচিব মোশাররাফ হোসেন, শহিদউল্লাহ শহিদ, তালহা মাহমুদ, ওয়ালী উল্লা জাহিদ, কাজী সালাহ উদ্দিন, আলমগীর হোসেন, স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মো: হাবিবুর রহমান তালুকদার রতন, সাধারণ সম্পাদক মো: বশির আলম, কাজী সোহেল মাহমুদ, যুবদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আহমেদ হোসেন সাগর সহ প্রবাসী কমিউনিটির নেতা কর্মীরা তাকে এক নজর দেখার জন্য হাসপাতালে ছুটে যান। এ দিকে বিকেল সাড়ে ৬ টায় ফরেন্সিক রিপোর্ট পাওয়ার পর হাসপাতালের সামনে জড়ো হওয়া নেতা কর্মীদের লাশ দেখতে দেওয়া হয়। পরে আবার হাসপাতালের হিমাগারে লাশটি রাখা হয়েছে। মালয়েশিয়া বিএনপির সদস্য সচিব মোশাররাফ হোসেন এ প্রতিবেদককে জানান, আগামী আজ রবিবার বাদ জোহর মালয়েশিয়ার জাতিয় মসজিদ (মসজিদ নেগারা) প্রাঙ্গণে নামাজে জানাযা অনুষ্ঠিত হবে এবং ২৬ জানুয়ারী সোমবার মরদেহ দেশে পাঠানো হবে বলে তিনি জানিয়েছেন। এ দিকে কোকোর মৃত্যুর খবর শুনে গোটা প্রবাসী কমিউনিটির মধ্যে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। দুই মেয়ের জনক কোকোর বয়স ৪৫ বছর। স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে কুয়ালালামপুরের একটি বাড়িতে ভাড়া থাকতেন তিনি।
জরুরি অবস্থার সময় গ্রেফতার হওয়া আরাফাত ২০০৮ সালের ১৭ জুলাই তৎকালীন সেনা-নিয়ন্ত্রিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের নির্বাহী আদেশে মুক্তি পাওয়ার পর চিকিৎসার জন্য থাইল্যান্ড যান। সেখান থেকে তিনি মালয়েশিয়ায় যান। ওই বছরের ২৩ জুন মুদ্রা পাচারের মামলার রায়ে আরাফাতকে ছয় বছরের কারাদন্ড দেয় বিচারিক আদালত; সেই সঙ্গে ১৯ কোটি টাকা জরিমানাও করা হয়। আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন মহাজোট ২০০৯ সালে ক্ষমতা নেওয়ার পর কোকোর সাময়িক মুক্তির মেয়াদ আর না বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর আদালত তাকে পলাতক দেখিয়ে বিচার এবং সাজার রায় দেয়। পলাতক থাকায় আপিলের সুযোগ পাননি তিনি। তবে বিএনপির দাবি, এই মামলাটি রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত। এর আগে জরুরি অবস্থার সময় ২০০৭ সালের ৩ সেপ্টেম্বর মা বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাড়ি থেকে গ্রেফতার হয়েছিলেন আরাফাত।
তখন খালেদার বড় ছেলে তারেক রহমানও গ্রেফতার হয়েছিলেন। তিনিও সেনা নিয়ন্ত্রিত ওই সরকারের সময় মুক্তি পেয়ে বিদেশ যান। সপরিবারে এখন লন্ডন রয়েছেন তারেক। সাবেক রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার বড় ছেলে তারেক সরাসরি রাজনীতিতে যুক্ত হলেও কোকো সেই পথ ধরেননি। ২০০১ সালে আরাফাত জাতীয় ক্রিকেট বোর্ডের উপদেষ্টা কমিটির সদস্য হয়েছিলেন। তখন বিসিবির ডেভেলপমেন্ট কমিটির চেয়ারম্যানও হয়েছিলেন তিনি।