স্টাফ রিপোর্টার :
টানা অবরোধে চতুর্থ ও পঞ্চম দিনে পুলিশী প্রহরায় হাতে গোনা কয়েকটি দূরপাল্লার যান চলাচল করলেও নগরীতে হালকা যানবাহন চলাচল স্বাভাবিক রয়েছে। আর এতেই নগরীর জিন্দাবাজার পয়েন্টে যানজটের সৃষ্টি হয়েছে।
গতকাল সরেজমিনে নগরী ঘুরে দেখা গেছে, পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে নগরীর মোড়ে মোড়ে। চোরাগুপ্তা হামলায় সড়কে গাড়ি ভাংচুর, ককটেল বিস্ফোরণ অব্যাহত থাকায় আতঙ্ক বিরাজ করছে গাড়ি চালকদের মাঝে। গতকাল শনিবার ছুটির দিনে অফিস আদালত বন্ধ, অন্যদিকে অবরোধে নগরীতে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে। মোটর সাইকেল দেখলেই সিগন্যাল দিচ্ছে পুলিশ। গাড়ির কাগজপত্র যাচাই, আরোহীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এতে নগরীতে হঠাৎ করেই মোটরসাইকেল চলাচল কমে গেছে। কারণ, মোটর সাইকেল নিয়ে বের হলে আরোহী নিজে আটক, অথবা সাইকেল জব্দ করা হচ্ছে। পরে কাগজপত্র যাচাই করে ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে। তাই ঝামেলা এড়াতেই নগরীতে মোটরসাইকেল নিয়ে বেরুচ্ছেন না আরোহীরা। সিএনজি অটোরিক্সা, ইজিবাইক ও রিক্সা চলছে। অবরোধেও খানিকটা যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে জিন্দাবাজার মোড়ে। এদিকে, বেশিরভাগই শপিংমল গুলো বন্ধ আছে। ছোট ছোট দোকানপাট খোলা থাকলের ক্রেতাদেও ভিড় তেমনটা নেই। অনেকটা দোকান খুলে অলস সময় পার করছেন ব্যবসায়ীরা।
বন্দরবাজারের ব্যবসায়ী বাবলা বলেন, ‘দোকান কুলিয়া কিতা খরতাম দোকান খুলে কি করব কোন কাষ্টমার নাই।
চন্ডিপুল ঘুরে দেখা গেছে, গাড়ি ভাঙচুরের আতঙ্কে সিলেট-ঢাকা মহাসড়কে সিএনজি অটোরিক্সাসহ হালকা যানবাহন চলছে। তবে ভারি কোনো যানবাহন দেখা যায়নি। সিলেট ঢাকা-মহাসড়কের চন্ডিপুল হচ্ছে রাজনৈতিক সংঘাতের জন্য একটি ঝুঁকিপূর্ণ পয়েন্ট। এখানে হরতাল-অবরোধে গাড়ি ভাংচুর-অগ্নিসংযোগ নিয়মিতই হয়। তাই দক্ষিণ সুরমা পুলিশ এখানে দিনরাত সতর্ক অবস্থান নিয়েছে।
কদমতলী কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল ঘুরে দেখা গেছে, দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যাচ্ছে না। আবার আসছেও না। সকালে ঝুঁকি নিয়ে মামুন পরিবহনের একটি বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে যায়। এ সময় যাত্রীদের কিছু চাপ লক্ষ্য করা গেছে। গত শুক্রবার রাতে পুলিশ প্রহরায় হুমায়ুন রশিদ চত্বর হতে প্রায় ১০ থেকে ১৫টি যাত্রীবাহী বাস ঢাকার উদ্দেশ্যে ছেড়ে গেছে।
মামুন পরিবহনের কাউন্টার পরিচালক খালেদ হোসেইন বলেন, গত শুক্রবার থেকে পুলিশী নজরদারি বৃদ্ধি করায় পাঁচদিন পর একটি বাস ঢাকায় ছেড়ে গেছে। পুলিশী নিরাপত্তা সড়কে বাড়াতে হবে। অবরোধ উঠলে পুরোদমে বাস চলবে।’
সিলেট সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি সেলিম আহমদ ফলিক বলেন, ‘বাস চালকরা ঝুঁকি নিয়ে দূর পাল্লার বাস বের করছেন না। কারণ, ভাংচুরের পাশাপাশি আগুন লাগিয়ে দেয় পিকেটাররা। তাই চালকদের মাঝে আতঙ্ক কাজ করছে। সিলেটের জেলা প্রশাসকের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। আমরা জানিয়েছি ঝুঁকি নিয়ে বাস চালানো সম্ভব নয়। তবে দু’একটি বাস চলবে। যদি ভালো নিরাপত্তা থাকে।’
নিরাপত্তা জোরদারের বিষয়ে জানতে চাইলে সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের উপ-পুলিশ কমিশনার (মিডিয়া) রহমত উল্লাহ বলেন,‘ সিলেটের বাস টার্মিনালসহ প্রতিটি মোড়ে মোড়ে পুলিশ নিরাপত্তা চৌকি বসিয়েছে। আতঙ্কিত হবার কিছু নেই।‘