জগন্নাথপুর-সিলেট লাইনে মিনিবাস চলাচলের সিরিয়াল নিয়ে ক্ষোভ ও উত্তেজনা, সংঘর্ষের আশঙ্কা

31

জগন্নাথপুর থেকে সংবাদদাতা :
জগন্নাথপুর-সিলেট সড়কে চলাচলকারী যাত্রীবাহী মিনিবাস চলাচলের সিরিয়াল নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে জগন্নাথপুর মিনিবাস-মাইক্রোবাস গ্র“পের মালিক এবং শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। যে কোন সময় অর্নিদিষ্টকালের জন্য জগন্নাথপুর-সিলেট লাইনে বাস চলাচল বন্ধ সহ বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা বিরাজ করছে।
জানা গেছে, বিগত প্রায় ১৮ বছর আগে এ ধরণের বিরোধ নিয়ে বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এ সময় প্রশাসনের হস্তক্ষেপে জগন্নাথপুর-সিলেট সড়কে জগন্নাথপুর মিনিবাস সমিতি, সিলেটের লোকাল সমিতি ও বিশ্বনাথের সোহাগ সমিতি সহ ৩ টি সমিতির মিনিবাস সমান অধিকার নিয়ে চলাচল করবে মর্মে বিষয়টি নিষ্পত্তি হয়। এরপর থেকে শান্তিপূর্ণভাবে এ লাইনে গাড়ি চলাচল করছে। তবে গাড়ির সিরিয়ালে অনিয়ম করায় আবারো পরিস্থিতি অশান্ত হয়ে উঠেছে।
জগন্নাথপুর মিনিবাস সমিতির মালিক ও শ্রমিকরা জানান, প্রতিনিয়ত ১০ মিনিট পরপর যাত্রীবাহী মিনিবাস জগন্নাথপুর থেকে সিলেট ছেড়ে যায়। এক্ষেত্রে সিলেটের লোকাল সমিতির ২টি ও বিশ্বনাথের সোহাগ সমিতির ২টি গাড়ি ছেড়ে গেলেও জগন্নাথপুর সমিতির মাত্র ১টি গাড়ি যায়। অধিকার সমান হলেও তারা প্রভাব খাটিয়ে অন্যায়ভাবে জগন্নাথপুর মিনিবাস সমিতিকে বঞ্চিত করছে। এতে জগন্নাথপুর মিনিবাস সমিতির মালিক ও শ্রমিকরা প্রতিনিয়ত আর্থিক ক্ষতির শিকার হচ্ছেন। এ ঘটনায় দিনদিন জগন্নাথপুর মিনিবাস সমিতির মালিক ও শ্রমিকদের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বেড়েই চলেছে। এ নিয়ে যে কোন সময় অর্নিদিষ্টকালের জন্য শ্রমিক ধর্মঘট সহ বড় ধরণের সংঘর্ষের আশঙ্কা বিরাজ করছে।
বিষয়টি শান্তিপূর্ণভাবে সমাধানের লক্ষ্যে জগন্নাথপুর মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহ নিজামুল করিম অনেক চেষ্টা করেও সিলেটের লোকাল ও সোহাগ সমিতির অসহযোগিতার কারণে নিষ্পত্তি হয়নি। অবশেষে গত ১৪ ফেব্র“য়ারি সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেন জগন্নাথপুর মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহ নিজামুল করিম। যার অনুলিপি অর্থ ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী, সিলেট বিভাগীয় কমিশনার, সিলেট পুলিশের ডিআইজি, সিলেট জেলা প্রশাসক, সিলেটের পুলিশ সুপার, সুনামগঞ্জের পুলিশ সুপার, জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, বিশ্বনাথ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা, সহকারি পুলিশ সুপার জগন্নাথপুর (সার্কেল), জগন্নাথপুর থানার ওসি, বিশ্বনাথ থানার ওসি ও সিলেটের দক্ষিণ সুরমা থানার ওসিকে প্রদান করা হয়। তাতেও এ পর্যন্ত কোন সমাধান না হওয়ায় উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে মালিক ও শ্রমিক নেতারা জানান।
এ ব্যাপারে জগন্নাথপুর মিনিবাস মালিক সমিতির সভাপতি শাহ নিজামুল করিম বলেন, রেজ্যুলেশনে সমান অধিকার হলেও দীর্ঘ ১৮ বছর ধরে তারা আমাদের বঞ্চিত করে আসছে। গাড়ি চলাচলের সিরিয়াল লঙ্ঘন করে অন্যায়ভাবে তাদের ৪টি গাড়ি যাওয়ার পর আমাদের মাত্র ১টি গাড়ি যায়। এতে আমরা আর্থিকভাবে ক্ষতির শিকার হচ্ছি। যে কারণে শ্রকিদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। দ্রুত এ সমস্যার সমাধান না হলে যে কোন সময় শ্রমিক ধর্মঘট সহ বড় ধরণের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটতে পারে। এ ব্যাপারে জানতে বারবার চেষ্টা করেও সিলেটের লোকাল ও বিশ্বনাথের সোহাগ সমিতির সভাপতির সাথে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। তবে বিষয়টি দ্রুত নিষ্পত্তি করে শান্তি ফিরিয়ে আনতে সরকারের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানান স্থানীয় সচেতন মহল।