কানাইঘাট থেকে সংবাদদাতা :
গত ১৭ ডিসেম্বর কানাইঘাট এলজিইডি অফিসের এম.এল.এস রুবানা বেগম (৫৫) এর মোবাইল ফোন ছিনিয়ে নিতে না পেরে জাতীয় স্বেচ্ছাসেবক পার্টির এক নেতা কর্তৃক তার ডান গালে উপর্যুপরি কামড় দিয়ে মাংস তুলে নেওয়ার মতো পাশবিক ন্যাক্কার জনক ঘটনায় তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। রুবানা বেগমের আঘাতের চিহ্নে বড় ধরনের গর্ত হওয়ায় তাকে সিলেট ওমেক হাসপাতাল থেকে হস্তান্তর করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে তার পুত্র রুবেল মোল্লা জানিয়েছেন। এ ঘটনার তার পুত্র রুবেল মোল্লা বাদী হয়ে গত ১৯ ডিসেম্বর এখলাছ উদ্দিনকে আসামী করে কানাইঘাট থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। অভিযুক্তকে গ্রেফতার করার জন্য পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে থানার ওসি আব্দুল আউয়াল চৌধুরী জানিয়েছেন। অভিযোগে জানা যায়, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার পাশের কোয়ার্টারে বসবাসরত এলজিইডি অফিসের এমএলএস রুবানা বেগম গত ১৭ ডিসেম্বর রাত ১১টায় তার বাসার বারান্দায় হাটছিলেন। এ সময় স্থানীয় রায়গড় গ্রামের জমির উদ্দিনের পুত্র উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক এখলাছ উদ্দিন (২৭) রুবানা বেগমের হাত থেকে তার মোবাইল ফোনটি জোরপূর্বকভাবে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে তিনি শোরচিৎকার করেন। একপর্যায়ে এখলাছ উদ্দিন ক্ষুব্ধ হয়ে রুবানা বেগমের ডান গালে উপর্যুপরি কামড় দিয়ে মাংস ছিঁড়ে নিয়ে যায়। সাথে সাথে তাকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়ার পর তার রক্ত ক্ষরণ বন্ধ না হওয়ায় ডাক্তাররা ওমেক হাসপাতালে প্রেরণ করেন। সেখান থেকে উন্নত চিকিৎসার জন্য তাকে ঢাকার সিএমএইচ এ ভর্তি করা হয়। রুবানা বেগমের স্বামী আলহাজ্ব সুলতান মোল্লা একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা এবং সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত একজন সৈনিক। রুবানা বেগম চাকুরীর সুবাদে তার পুত্র উপজেলা নির্বাহী অফিসের কার্যালয়ের অস্থায়ীভাবে এমএলএস পদে কর্মরত রুবেল মোল্লাকে নিয়ে উপজেলা কোয়ার্টারে দীর্ঘদিন ধরে বসবাস করে আসছেন, আর স্বামী ঢাকার মোহাম্মদপুর এলাকায় পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নিয়ে বসবাস করেন। ঘটনার অভিযুক্তকারী এখলাছ উদ্দিনের বিরুদ্ধে এলাকায় মোবাইল ছিনতাইসহ নানা ধরনের অপরাধ কর্মকান্ডের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি সে উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক মনোনীত হওয়ার পর সিলেট-৫ আসনের সংসদ সদস্য জাপার কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব আলহাজ্ব সেলিম উদ্দিন সহ জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির নেতাদের ছবি বড় আকারে এবং তার ছবিসহ ডিজিটাল ব্যানার পৌর শহরে লাগিয়েছে। জাপার কয়েকজন দায়িত্বশীল নেতৃবৃন্দ জানিয়েছেন, মূলত অনৈতিক কর্মকান্ড করার জন্য বসন্তের কোকিলের মতো গর্জিয়ে উঠা কিছু নেতাদের এ ধরনের কর্মকান্ডে পার্টির সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তারেক মোহাম্মদ জাকারিয়ার সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ঘটনার দিন থেকে অদ্যবধি পর্যন্ত তিনি প্রশাসনিক কাজে ঢাকায় অবস্থান করছেন। ঘটনাটি তিনি শুনার পর এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। জেলা স্বেচ্ছাসেবক পার্টির সিনিয়র সহ-সভাপতি কিউএম ফররুখ আহমদ ফারুকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, এখলাছ উদ্দিনকে স্বেচ্ছাসেবক পার্টি থেকে সম্প্রতি অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে জানিয়ে বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।