মৌলভীবাজার থেকে সংবাদদাতা :
মৌলভীবাজারে প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে আরিফ হোসেন (১৮) নামে এক প্রতিবন্ধী যুবককে হত্যা করেছেন তারই চাচা ইয়াকুত মিয়া। এমন তথ্য বেরিয়ে এসেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশনের (পিবিআই) তদন্তে।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) দুপুরে পিবিআই মৌলভীবাজার কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘটনার তথ্য দেয় পিবিআই। এর আগে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী ইয়াকুত মিয়া ও হত্যাকাণ্ডের সহযোগী তোফায়েল আহমেদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পিবিআই’র অতিরিক্ত পুলিশ সুপার শাহাদাত হোসেন সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ২০১৭ সালের ২৮ জুন মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলের হাজিপুর গ্রামে যৌথ পুকুর নিয়ে দুই প্রতিবেশী আরবেশ আলী ও আব্দুল খালিকের বিরোধের জের ধরে দু’পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। সেসময় আরবেশ আলীর প্রতিবন্ধী ছেলে আরিফ হোসেন খুন হন। পরে আব্দুল খালিকের লোকের হাতে আরিফ খুনের অভিযোগে আরবেশ আলী বাদী হয়ে আব্দুল খালিককে প্রধান আসামি করে ১৫ জনের বিরুদ্ধে শ্রীমঙ্গল থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এ পরিপ্রেক্ষিতে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা উপ পরিদর্শক (এসআই) মো. রফিকুল ইসলাম তদন্ত শেষে আব্দুল খালিকসহ ১৫ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন এবং তিনজনকে অব্যাহতি দেন। তিন আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ায় বাদী চার্জশিটের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ আদালতে না-রাজি আবেদন করেন। আদালত আবেদনটি মঞ্জুর করে মামলাটি অধিকতর তদন্তের জন্য পিবিআই মৌলভীবাজারকে নির্দেশ দেন। দীর্ঘ তদন্ত শেষে পিবিআই তিনটি যৌক্তিক প্রশ্নকে সামনে রেখে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য গত ১৩ জানুয়ারি আরিফের চাচা ইয়াকুত মিয়াকে এবং ১৬ জানুয়ারি হত্যাকাণ্ডের অন্যতম সহযোগী তোফায়েল আহমেদকে আটক করে। পরে বৃহস্পতিবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে তারা আদালতে ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
জবানবন্দিতে তারা জানান, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ইয়াকুত আলীর পরিকল্পনায় খুন করা হয় আরিফ হোসেনকে। পরিকল্পনা মতো প্রথমে ইয়াকুত মিয়া আরিফের মাথায় আঘাত করেন। পরে তার নির্দেশে তোফায়েল, বেলাল ও জুনায়েদ হাসপাতালে নেওয়ার পথে সিএনজি অটোরিকশার ভেতর আরিফকে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধ করে খুন করে হাসপাতালে নিয়ে যান।
পরে ইয়াকুত মিয়া ও অন্যতম সহযোগী তোফায়েল আহমেদকে কারাগারে পাঠানো হয়।