কাজিরবাজার ডেস্ক :
পুলিশের অভিযান বিস্তৃত হচ্ছে ওসমানীনগরে। যাকে পাচ্ছে তাকেই গ্রেফতার করছে পুলিশ। চলছে বাড়ি বাড়ি তল্লাশিও। শতাধিক পুলিশ সদস্য রয়েছেন এ অভিযানে। থানার সব কয়টি বাজারে বসানো হয়েছে পুলিশী তল্লাশি। এ অবস্থায় থানা জুড়ে আতঙ্ক বিরাজ করছে। জনজীবনে নেমে এসেছে স্থবিরতা। তৃতীয় দিনের মতো গতকালও অন্যতম বাণিজ্যিক কেন্দ্র গোয়ালাবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠান খোলা হয়নি। জুম্মার নামাজে মসজিদগুলো জনশূন্য। পুলিশের অভিযানে গ্রেফতার হচ্ছেন নিরীহ মানুষও। এতে অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে পুরো থানা। স্থানীয়রা জানিয়েছেন, ওসি মৃত্যুর ঘটনায় যারা দায়ী তাদের অনেকেই এখন পালিয়ে বেড়াচ্ছে। আর পুলিশ সাধারণ মানুষকে করছে হয়রানি। এ অবস্থা থেকে রক্ষা পেতে বর্তমান ও সাবেক সংসদ সদস্যের দ্বারস্থ হচ্ছেন ভুক্তভোগীরা। কিন্তু তাদের কথাও শুনছে না প্রশাসন। ওসমানীনগরের গোয়ালাবাজারে শ্রমিকদের সংঘর্ষ চলাকালে ওসি মোস্তাফিজুর রহমানের মৃত্যুর ঘটনার পর থেকে এলাকায় ভুতুড়ে অবস্থা বিরাজ করছে। ব্রাহ্মণগ্রাম ও নিজকরনসী ছাড়া গতকাল থেকে পাশের কছবুরাই, নোয়ারাই, তেরহাতী গ্রামে পুলিশি অভিযান চালানোর কারণে এসব গ্রামও এখন প্রায় পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে। বৃহস্পতিবার রাতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে বেশ কিছু লোককে আটক করলেও ৪ জনকে হত্যা মামলায় গ্রেফতার দেখিয়ে গতকাল সকালে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠিয়েছে। গ্রেফতারকৃতরা হচ্ছে আবদুল হামিদ, আবদুল মুমিন, আবদুর রশিদ ও দিলশাদুর রহমান। তবে এদের পরিচয় দিতে অপারগতা প্রকাশ করে পুলিশ। গতকাল জুম্মার নামাজের সময় গোয়ালাবাজার, ব্রাহ্মণগ্রাম, করনসীসহ কয়েকটি গ্রামের মসজিদগুলো ছিল প্রায় মুসলিম শূন্য। এ ছাড়া গতকাল সকাল থেকে বিভিন্ন বাজারে টহল বসিয়ে চালকসহ ১০টি অটোরিক্সা আটক করা হয়েছে। অটোরিক্সাকে মহাসড়কে উঠতে না দেয়ার উদ্দেশ্যে গোয়াবাজার, দয়ামীর, তাজপুরসহ অন্যান্য স্থানে পুলিশ টহল বসানো হয়েছে। যার কারণে ওসমানীনগরের সর্বত্র এখন অটোরিক্সাশূন্য হয়ে পড়েছে। এতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকার লক্ষাধিক সাধারণ মানুষকে। অনাহার-অর্ধাহারে দিন কাটাচ্ছে এলাকার হাজার হাজার অটোরিক্সা শ্রমিকের পরিবার।
গত বুধবার দুপুরে অটোরিক্সা শ্রমিক সংগঠনের নতুন শাখা প্রদানকে কেন্দ্র করে শ্রমিকদের দুটি পক্ষের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। এ সময় সংঘর্ষ থামাতে টিয়ার শেল নিক্ষেপ করার পর ওসি মোস্তাফিজুর রহমান হঠাৎ অজ্ঞান হয়ে মাটিতে পড়ে যান। সিলেটে যাওয়ার পর তার মৃত্যু হয়। এ ঘটনায় পুলিশ ইউপি চেয়ারম্যান, সাংবাদিকসহ শতাধিক ব্যক্তির নাম উল্লেখ করে ৭০০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দিয়েছে। স্থানীয়রা অভিযোগ করেছেন, পুলিশ একপক্ষকে আসামি করলেও অন্যপক্ষকে আসামী করেনি। এ ছাড়া গ্রেফতার অভিযান দেখিয়ে মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তারা আসামী ধরপাকড়ে টাকা কামাইয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন।