জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাটে বেসরকারী পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির অভিযান শুরু

50

গোয়াইনঘাট থেকে সংবাদদাতা :
জৈন্তাপুর-গোয়াইনঘাটের সকল পাথর ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত ২১ সদস্যের বেসরকারি পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির উদ্যোগে প্রচার অভিযান চালানো হয়েছে।
জৈন্তাপুর ও গোয়াইনঘাট উপজেলার আওতাধীন সড়ক, মহা সড়ক, স্কুল, কলেজ, মসজিদ, মাদ্রাসা, হাসপাতাল, হাটবাজার ও বসতবাড়ি সহ গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা থেকে নির্দিষ্ট দূরবর্তী স্থানে পাথর ভাঙ্গার যন্ত্র (ক্রাশার মেশিন) সরিয়ে নিয়ে পরিবেশ সম্মত ভাবে স্থাপন করার জন্য গতকাল বৃহস্পতিবার জৈন্তাপুর হতে জাফলং পর্যন্ত দিনব্যাপী এ অভিযান চালানো হয়। অভিযানে ওই সংগঠনের নেতৃবৃন্দ সংশ্লিষ্ট দুই উপজেলার মিল মালিকদেরকে তাদের মেশিন গুলো রাস্তার পাশ থেকে সরিয়ে নির্দিষ্ট দূরবর্তী স্থানে স্থাপন করার জন্য পরামর্শ দেন। পাশাপাশি মাইকিং করে দিনভর এলাকার সর্বত্র এ ব্যাপারে প্রচারণাও চালানো হয়। বেসরকারি পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি সূত্রে জানা যায় পরিবেশের ক্ষতি সাধন করে জৈন্তা-গোয়াইনঘাটে গড়ে উঠা সকল ক্রাশার মেশিন সরিয়ে নিতে সিলেট-৪ আসনের সংসদ সদস্য ইমরান আহমদকে প্রধান উপদেষ্টা করে ২১ সদস্যের জৈন্তা-গোয়াইনঘাট বেসরকারি পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটি সরকারি পরিবেশ নীতিমালা অনুসরন করে পরিবেশ বিধি মোতাবেক শহর, উপজেলা সদর, পৌরসভা, গ্রোথ সেন্টার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং হাসপাতাল হতে ৫শত মিটার, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ি হতে ১ শত মিটার, সড়ক মহা সড়ক হতে ৫০ মিটার দূরে এবং ধুলো বালু নিয়ন্ত্রণ করে ষ্টোন ক্রাশার মেশিন স্থাপন করা হবে। উল্লেখিত বিধি মোতাবেক গতকাল বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় জৈন্তা-গোয়াইনঘাট বেসরকারী পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি সংশ্লিষ্ট দুই উপজেলায় সর্বত্র এই প্রচার অভিযান পরিচালনায় নামে। প্রচার অভিযানের সময় যে সকল ষ্টোন ক্রাশার মেশিন নির্ধারিত সীমানার মধ্যে পড়েছে সে সকল মিল মালিকদের ৭ দিনের সময় বেঁধে দিয়ে তাদের নিজ নিজ মিল সরিয়ে নেওয়ার মৌখিক নোটিশ প্রদান করছে পরিবেশ কমিটি। পাশাপাশি কমিটির পক্ষ থেকে রাস্তা হতে নির্ধারিত মাপ নিয়ে সীমানা চিহ্নত করে দেওয়া হয়েছে। যদি ব্যবসায়ীরা ৭ দিনের মধ্যে তাদের এ সকল স্থাপনা সরিয়ে না নেন তাহলে সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রশাসনের ও আইন শৃংখলা বাহিনীর সহযোগিতায় তাদের ক্রাশার মেশিন অপসারণ করা হবে। এ সময় তারা ক্রাশার মিল মালিকদের হাতে ষ্টোন ক্রাশার মেশিন স্থাপানের ক্ষেত্রে সরকারী নীতিমালার একটি করে কপি তুলে দেন। অভিযান পরিচালনায় নেতৃত্ব দেন জৈন্তা-গোয়াইনঘাট বেসরকারি পরিবেশ উন্নয়ন কমিটি আহ্বায়ক লিয়াকত আলী, যুগ্ম আহ্বায়ক হামিদুল হক ভূঁইয়া বাবুল, এখলাছুর রহমান, আলমগীর হোসেন, আব্দুল হান্নান, হেনরী লামীন, আব্দুল হাফিজ, ইলিয়াছ উদ্দিন লিপু, সরওয়ার হোসেন সেদু, বাবলু বখত, মস্তাক আহমদ চৌধুরী, গোলাম নবী ভূইয়া , আব্দুর রাজ্জাক রাজা, শফিকুল ইসলাম শফিক, আরব আলী, ফয়জুল হক, বিলাল আহমদ, কামাল আহমদ, আব্দুছ শুক্কুর হরুহুনা, সৈয়দ আব্দুন নুর, আলী আকবর, মাসুক আহমেদ, সাইফুল ইসলাম, নির্মল চন্দ্র রায়, শহিনুর রহমান, নজরুল ইসলাম প্রমুখ। এ ব্যাপারে জৈন্তা-গোয়াইনঘাট বেসরকারী পরিবেশ উন্নয়ন কমিটির আহ্বায়ক লিয়াকত আলী বলেন- বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পর্যটকরা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলা ভূমি সিলেটের জৈন্তাপুর এবং জাফলং এলাকায় বেড়াতে আসেন। এ সময় বিভিন্ন ষ্টোন ক্রাশার মিলের ধূলো বালু জৈন্তা-গোয়াইনঘাট অঞ্চলের পরিবেশ দূষণ করে বলে তারা অভিযোগ করেন। জৈন্তা-গোয়াইনঘাটের সুন্দর পরিবেশ রক্ষার জন্য সরকারি বিধি মোতাবেক আমাদের সংগঠনটি নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করবে। তাই এ অভিযান সফল করে পরিবেশ সম্মত ভাবে ক্রাশার মেশিন স্থাপনে ব্যবসায়ীরা আমাদেরকে সহযোগিতা করবে বলে আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস। আমরা আশা করছি জৈন্তা-গোয়াইনঘাটের ব্যবসায়ীদের অস্ত্র দিয়ে নয়, কথা দিয়ে তাদের মন জয় করে এ অঞ্চলের পরিবেশ রক্ষায় আমাদের মিশন সফল হবে।