প্রেমের কারণেই বিউটিশিয়ান রিয়াকে এসিড নিক্ষেপ করা হয় ॥ দুই দুর্বৃত্তের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান

40

স্টাফ রিপোর্টার :
প্রেমের কারণেই বিউটিশিয়ান সুমি আক্তার রিয়াকে ৫শ’ টাকার বিনিময়ে এসিড নিক্ষেপ করেছে দুর্বৃত্তরা। গত শনিবার বিকেলে সিলেটের মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট প্রথম আদালতে এভাবে ২ দুর্বৃত্ত ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী প্রদান করে। আদালতের ভারপ্রাপ্ত বিচারক মোঃ সায়েদুল করিম ফৌজদারী কার্যবিধির ১৬৪ ধারায় তাদের স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী রেবর্ড করেন।
এর আগে গত শুক্রবার রাতে শাহপরান থানার এসআই সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য্য মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে নগরী থেকে বিশ্বনাথ উপজেলার শিমুলতলা গ্রামের মৃত ফজর আলীর পুত্র দুর্বৃত্ত মোঃ দুলু মিয়া (২১) ও একই এলাকার মদরিছ আলীর পুত্র দুর্বৃত্ত অলিউর রহমান অলি (২০)কে গ্রেফতার করা হয়।
মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা শাহপরান থানার উপ পুলিশ পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ্ত শেখর ভট্টাচার্য্য জানান, গত শুক্রবার রাতে নগরী থেকে মোবাইল ট্যাকিংয়ের মাধ্যমে প্রথমে দুলুকে ও পরে অলিকে গ্রেফতার করে শনিবার তাদের উক্ত আদালতে সেচ্ছায় ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেয়। ওইদিন রাতে জবানবন্দী শেষে গ্রেফতারকৃতদের আদালতের নির্দেশে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ধৃতদের জবানবন্দীর বরাত দিয়ে তিনি আরো জানান, দুলু মিয়া ৫/৬ মাস পূর্বে শাহজালাল উপশহরস্থ দুলহান বিউটি পার্লারে বিউটিশিয়ানের চাকুরী জোগাড় করে দেয় সুমি আক্তার রিয়াকে। এর পর থেকে তার সাথে রিয়ার প্রেম চলে আসছিল। রিয়া ওই পার্লারের মালিক মালেহা বেগম সুমার শাহজালাল উপশহরের এ ব্লকের ৪ নং রোডের ১৫ নং বাসায় বসবাস করে এসেছিল। ঘটনার কয়েকদিন আগ থেকে অন্য রিয়া ছেলেদের সাথে মোবাইলে প্রেম করে যাচ্ছিল। এ বিষয়টি দুলু মিয়া আঁচ করতে পেরে তার সাথে প্রেমের সম্পর্কে ভাটা পড়তে থাকে। এক পর্যায়ে দুলু তার এলাকার গ্রাম্য ভাতিজা সম্পর্কে অলিউর রহমান অলিকে চাকুরী দেয়ার কথা বলে রিয়াকে দু’জন মিলে এসিড মারার পরিকল্পনা করে। ঘটনার দিন রাত পৌনে ৯ টায় দুলুর সংগ্রহ করা সিএসজি অটোরিক্সা থেকে প্লাষ্টিকের মগে রক্ষিত এসিড নিয়ে অলি রিয়ার বাসার গেইটের সামনে রিয়ার মুখে ও শরীরের এসিড নিক্ষেপ করে পালিয়ে যায়। পরে দুলু তাকে ৫শ’ টাকা দেয়। মামলাটি তদন্তাধীন রয়েছে বলে জানান এসআই সুদীপ্ত।
মামলার সংক্ষিপ্ত বিবরণে জানা গেছে, গত ২২ নভেম্বর রাত পৌনে ৯টার দিকে সুমি আক্তার রিয়া (১৭) ডিউটি শেষ করে বাসায় ঢুকার সময় কে বা কারা তার মুখমন্ডলসহ চোখ, গাল, হাত, বুক, পেট ও দু’পা ঝলসে দিয়ে পালিয়ে যায়। পরে তার শোরচিৎকারে পার্লারের মালিক মালেহা বেগম সুমা তার স্বামী আবুল কালামসহ স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে সিলেট ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ৪র্থ তলার ৬ নং ওয়ার্ডে ভর্তি করেন। আহত রিয়া সুনামগঞ্জ জেলার ছাতক উপজেলার আনননগর গ্রামের আমির আলীর কন্যা। এ ঘটনায় আহত রিয়ার মা সুমা বেগম বাদি হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামী করে শাহপরান থানায় একটি এসিড মামলা দায়ের করেন। নং- ২০ (২৩-১১-১৪)।