গোলাপগঞ্জের এক শিক্ষানবীশ আইনজীবীকে হয়রানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। লক্ষীপাশার মৃত ইদ্রিস আলীর পুত্র লোকমান হোসেন গতকাল রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে তার ওপর হয়রানির অভিযোগটি তুলে ধরেন।
লিখিত বক্তব্যে তিনি জানান, বিনা অপরাধে দীর্ঘ ২ মাস ১০ দিন তাকে কারাবরণ করতে হয়েছে। তিনি কোন রাজনৈতিক দলের সাথে জড়িত না থাকা সত্তে¡ও কারাগারে যাওয়ার পর তাকে যুবলীগের যুগ্ম সম্পাদক হিসেবে পুরো নগরীতে পোষ্টারিং করানো হয়। তার অভিযোগ এসব করিয়েছেন প্রভাবশালী আওয়ামী লীগ নেত্রী শাহানা বেগম শানু ও তার ভাসুর মো. নুরুল ইসলাম, ভাই বেলাল আহমদ, ছেলে ছাত্রলীগ নেতা রায়হান, রেদওয়ান ও ছেলের বন্ধু রিপন তালুকদার, ছাত্রদল নামধারী ‘ভুয়া সাংবাদিক’ রাজন আহমদ আরিয়ান।
সংবাদ সম্মেলনে তিনি জানান, আমার বড় ভাই সিলেটের প্রতিষ্ঠিত গরুর খামার ব্যবসায়ী। শিক্ষানবীশ আইনজীবী হিসেবে কাজের পাশাপাশি আমার বড় ভাই ফটিক মিয়ার ব্যবসা দেখা শুনা করি।
সংবাদ সম্মেলনে লোকমান হোসেন জানান, শানু, তার ভাসুর, ভাই ও ছেলে এবং ছেলের বন্ধুরা মিলে গত ৫ আগস্টের পর বিভিন্ন ব্যক্তিদের দিয়ে অর্থের বিনিময়ে আমাকে ৩টি রাজনৈতিক মামলায় জড়ায়। মামলার বাদীদের আমি নিজেও চিনি না। আমি কারাগারে থাকা অবস্থায় আমার বড় ভাই ২টি মামলার বাদীর সাথে যোগাযোগ করলে তারা আমাকে চিনেন না বলে জামিন শুনানিতে অংশ নিয়ে আমাকে জামিন দিতে কোনো বাধা নেই বলে আদালতকে জানান। কিন্তু শানুর ছেলের বন্ধু ভুয়া সাংবাদিক রাজন আহমদ আরিয়ানের মামলায় আমি দীর্ঘ দিন কারাগারে ছিলাম।
লোকমান হোসেন আরো জানান, নগরীর খুলিয়াটুলায় নীলিমা আবাসিক এলাকার ৫২/৫ নং বাসাটি ক্রয় সূত্রে মালিক তিনি। আমি মৃত মুকিত মিয়ার ছেলে নুরুল ইসলামের মাধ্যমে মৃত নুরুল হুদা চৌধুরীর পুত্র তারেকুল হুদা চৌধুরী গংদের কাছ থেকে কাছ থেকে বাসাটি ২০২১ সালের মে মাসে সাফকবালা দলিল সম্পাদনের মাধ্যমে ক্রয় করি। এছাড়া, শাহানা বেগম শানুকে ২৪ লক্ষ টাকা পরিশোধ করে তার সাথে ভ‚মি বিক্রয় চুক্তি সম্পাদন করি। অপর দখলকার মো রকিবের সাথে চুক্তিপত্র সম্পাদন করে তাকে ১২ লক্ষ টাকা পরিশোধ করি। এভাবে, আমি মোট ৭৪ লক্ষ টাকা সকল পক্ষকে পরিশোধ করি। বাসার দামের অতিরিক্ত ৯ লক্ষ টাকা নুরুল ইসলাম আমার কাছ থেকে ঋণ হিসেবে গ্রহণ করে এবং সেই বাবত আমাকে ৯ লক্ষ টাকার ৩ টি চেক প্রদান করে। শাহানা বেগম শানুকে টাকা প্রদানকালে সিলেট সিটি কর্পোরেশনের ৯ নং ওয়ার্ডের সাবেক কাউন্সিলর মখলিছুর রহমান কামরান ও সিলেট জেলা পরিষদ সাবেক সদস্য সহুল আল রাজি চৌধুরীও উপস্থিত ছিলেন এবং তারা শানুর সাথে সম্পাদিত বিক্রয় চুক্তিতে সাক্ষী হিসেবে স্বাক্ষর করেন।
আওয়ামী লীগ সরকার পতনের পর বিভিন্ন ধরনের এই চক্রটি অস্ত্র শস্ত্র নিয়ে এসে তার বাসার ভাড়াটিয়াদের বের করে বাসাটি দখল করে নেয়। বিষয়টি জানতে পেরে তিনি ঘটনাস্থলে গেলে তাকে বিভিন্ন ধরনের কথা বার্তা বলতে থাকে। ভাড়াটিয়াগন তাদের বিরুদ্ধে কোর্টে মামলা দায়ের করেন। এলাকার মুরুব্বিরা বিষয়টি সমাধানে ব্যর্থ হন। গত ১০ জানুয়ারি এই চক্রটি তার কাজিরবাজারের ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে এসে ১৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে। ২১ জানুয়ারি এ ব্যাপারে কোতোয়ালি থানায় একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করলে শানুর ভাসুর নুরুল ইসলামকে পুলিশ গ্রেফতার করে। কিন্তু বাকিদের এখনও গ্রেফতার করা হচ্ছে না। তিনি জান মালের নিরাপত্তায় প্রশাসনের উর্ধতন মহলের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।