সিলেটের বৃহত্তর নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় নদী তীরবর্তী জনসাধারণ শ্রাবণী বন্যার আশংকায় ভুগছেন। এখনও গত বন্যায় ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষয়ক্ষতি পুষিয়ে এখনও মাথা তুলে খাঁড়া হয়ে উঠতে পারেননি। ফের বন্যায় পতিত হলে কৃষি ক্ষেত সামাল দেয়া সম্ভব হবে না। তাই নদীর তীরবর্তী জনসাধারন উদ্বিগ্ন ও উৎকণ্ঠায় ভুগছেন।
সিলেট অঞ্চল ভারতের মেঘালয়, আসামের জৈন্তা পাহাড়ের পাদদেশে অবস্থিত হওয়ায়, ছোট বড় পাহাড়ের পানি গুলো প্রবাহিত হয়, পাহাড় থেকে প্রবাহিত ছোট-বড় অসংখ্যক নদ-নদী ও নালার মাধ্যমে এ অঞ্চলের সমস্ত সমতল ভূমি ডুবিয়ে অকাল বন্যার সৃষ্টি করে ফেলে। বর্ষার সময়ে পাহাড়ী অঞ্চলে অতিরিক্ত বৃষ্টির ফলে প্রচন্ড বন্যার সৃষ্টি হয়। ভাষিয়ে নেয় সাধারণ মানুষের উৎপাদিত ফসলের মাঠসহ বাড়ীঘরের আসবাবপত্র ছাড়া ও গৃহ পালিত পশু-পাখি।
সিলেটের প্রধান নদ-নদীর মধ্যে ভারত থেকে উৎপন্ন হয়ে বয়ে আসা বরাক নদীর শাখা নদী সুরমা-কুশিয়ারা ছাড়াও জৈন্তার পাহাড় থেকে উৎপন্ন লোভা, সারী, পিয়াইন, ধলাই নদী ছাড়া ও অসংখ্যক ছোট বড় নদী রয়েছে। এ গুলোতে শ্রাবণী বন্যার আশংকা বিরাজ করছে। এ মৌসুমে এ সব নদীতে বন্যা দেখা দিলে আমন চাষ করা সম্ভব হবে না বলে অনেকে মনে করছেন।
বিভিন্ন সূত্র মতে আসামের পাহাড় সমুহে বৃষ্টিপাত বৃদ্ধি হলে বরাক নদীতে পানি বৃদ্ধি হবে, এতে সুরমা-কুশিয়ারা নদীতে পানি বৃদ্ধি পাবে, দেখা দিবে সিলেট অঞ্চলে প্রচন্ড বন্যা। এ শ্রাবণী বন্যার হাত থেকে বাঁচতে সবচেয়ে বড় প্রয়োজন সুরমা-কুশিয়ারার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধকে শক্তিশালী করে তৈরি করা। সুরমা-কুশিয়ারার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণে ব্যর্থ হলে সিলেট অঞ্চলের বন্যা নামক ব্যাধি দূর করা সম্ভব হবে না।
উল্লেখ্য এক সময়ে সিলেট অঞ্চলে প্রতিনিয়ত বন্যায় ভাষিয়ে নিত কৃষকের উৎপাদিত ফসল সহ বাড়ীঘরের আসবাবপত্র, গৃহপালিত পশু-পাখি। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রধান জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে এ অঞ্চলের জনপ্রতিনিধি আব্দুল লতিফ দেখা করে জকিগঞ্জ তথা সিলেটের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের বন্যা দূরীকরণের পদক্ষেপ নিতে কুশিায়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণের দাবি জানান। সে সময় থেকে শুরু হয় সুরমা-কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধের কাজ, বর্তমান সরকারের সময়ে জকিগঞ্জ তথা পূর্বাঞ্চলের কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ থাকায় এ অঞ্চলের মানুষ কুশিয়ারা নদীর প্রচন্ড বন্যার হাত থেকে রক্ষা পেলেও বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নড়ে-বড়ে হয়ে পড়েছে, তাই সুরমা- কুশিয়ারা নদীর তীরবর্তী জনসাধারণ চলতি শ্রাবণী বন্যার আশংকায় ভুগছেন।
সিলেটের উত্তর-পূর্ব অঞ্চল বন্যার হাত থেকে রক্ষা করতে হলে সর্ব প্রথম সুরমা-কুশিয়ারা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ প্রতি বছর সংস্কার ও রক্ষণা-বেক্ষণের ব্যবস্থা করা খুবই জরুরী।