শাহ্ মাশুক নাঈম, দোয়ারাবাজার
সোনালি হলুদ রঙের আমের মুকুলের মনকাড়া ঘ্রাণ। মৌমাছির দল ঘুরে বেড়াচ্ছে গুনগুন শব্দে। শীতের জড়তা কাটিয়ে কোকিলের সেই মধুময় কুহুতানে মাতাল করতে আবারও আসছে ঋতুরাজ বসন্ত। তাই ছোট-বড় আম গাছে ফুটতে শুরু করেছে নতুন মুকুল। মুকুলের পাগল করা ঘ্রাণ। যে ঘ্রানে মানুষের মনকে বিমোহিত করে। পাশাপাশি মধুমাসের আগমনী বার্তা শোনাচ্ছে আমের মুকুল।
আবহমান গ্রামবাংলায় সাধারণত আগাম জানান দেয় তার আগমনী বার্তা। তেমনি ঋতুরাজ বসন্তের আগেই সুনামগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলায় আম গাছে আমের মুকুল জানান দিচ্ছে মধু মাসের আগমনী বার্তার।
দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা, লক্ষীপুর, বগুলা, মান্নারগাঁও, ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে সরেজমিন দেখা যায়, বাড়ির আঙ্গিনায়, পুকুরপারে রাস্তার কিনারে সর্বত্রই আম গাছগুলো তার মুকুল নিয়ে হলুদ রঙ ধারণ করতে চলেছে। ধীরে ধীরে আমের মুকুলে ছেয়ে যাচ্ছে গাছের প্রতিটি ডাল। সৌন্দর্য বাড়তে শুরু করেছে প্রকৃতির।
স্থানীয়রা জানান, এ বছর আবহাওয়া অনুক‚লে থাকার কারণে বসন্তের আগেই আম গাছে মুকুল আসতে শুরু করেছে। তবে মাঘ মাস প্রায় শেষ এখন প্রতিটি গাছে পুরোপুরিভাবে মুকুল ফুটবে। তারা আরও জানান, সুনামগঞ্জের
দোয়ারাবাজার উপজেলায় বাণিজ্যিকভাবে আমের চাষ না হলেও স্থানীয়রা বিভিন্ন হাট-বাজার থেকে বিভিন্ন প্রকার চারা সংগ্রহ করে বাড়ির আঙিনায় রোপণ করে থাকেন।
স্থানীয়রা আরও জানান, আমের মুকুলের প্রধান শত্রæ কুয়াশা। কুয়াশার কারণে আমের মুকুল নষ্ট হয়ে যায়। তবে আমের মুকুল আগে পরে যে আবহাওয়া প্রয়োজন তা এখনো বিরাজমান রয়েছে। এবার আবহাওয়ার কারণে আম গাছে আগাম মুকুল এসেছে। ভালোভাবে পরিচর্যা করা হলে ফলন ভালো হবে।
উপজেলা সুরমা ইউনিয়নের হাছনবাহার গ্রামের অমৃত মিয়া কাজির বাজারকে বলেন, মাঘ মাসের প্রথম দিকে আম গাছে আমের মুকুল ফুটতে শুরু করেছে। এবার আমের মুকুল অন্য বছরের চেয়ে অনেক বেশি ফুটেছে। বৃষ্টির জন্য অনেক মুকুল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগ না হলে ও আবহাওয়া অনুক‚লে থাকলে এ বছর আমের বাম্পার ফলনের সম্ভাবনা রয়েছে।
উপজেলা লক্ষীপুর ইউনিয়নের রসরাই গ্রামের আব্দুস ছালাম কাজির বাজারকে বলেন, অন্যবারের চেয়ে কিছুটা আগে এসেছে মুকুল। মুকুল আসার পর থেকেই গাছের প্রাথমিক পরিচর্যা শুরু করেছেন। মুকুল রোগ বালাইয়ের আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে স্থানীয় কৃষি বিভাগের পরামর্শ অনুযায়ী প্রয়োজনীয় ওষুধ স্প্রে করছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শেখ মুহাম্মদ মহসিন কাজির বাজারকে জানান, দোয়ারাবাজারে আমের নির্ধারিত কোন বাগান নাই। যাই আছে ব্যক্তিগত আম গাছ। যদি কেউ বাণিজ্যিকভাবে আম চাষ করার আগ্রহী থাকে তাকে উপজেলা কৃষি অফিস সুপরামর্শ দিয়ে সহযোগিতা করবে।