বালাগঞ্জ প্রতিনিধি
বালাগঞ্জে চলতি বছর ৩দফা বন্যায় নিম্নাঞ্চলের বীজতলা এবং রোপণকৃত আমন আক্রান্ত হওয়ার পরও এবার রোপা আমনের বাম্পার ফলন হয়েছে। মাঠের পর মাঠ জুড়ে কাচা-পাকা ধানের বাম্পার ফলন দেখে কৃষকের আনন্দের শেষ নেই। আনন্দিত কৃষক-কৃষাণীদের এখন সুবর্ণ সময়। ধান কাটা, মাড়াই আর রক্ষণাবেক্ষণের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন। কৃষকরা আশাবাদী বাম্পার ফলন উঠবে তাদের ঘরে। সরেজমিন পরিদর্শনকালে মাঠের দিকে থাকালে দেখা যায় সকালে সূর্যের আলোয় মুক্তার মত ঝলমল করছে দূর্বা, মৃদু বাতাসে দুলছে মাঠে মাঠে ধানের শীষ।
এরকম নয়নাবিরাম দৃশ্য দেখে মন জুড়িয়ে যায়। এরই মাঝে প্রতিটি গৃহস্থ ঘরে এখন শুরু হয়েছে অগ্রহায়ণের ধান কাটার মহা উৎসব। প্রয়োজনীয় সময়ে প্রথমদিকে বন্যা থাকলেও শেষদিকে আবহাওয়া অনুকুল থাকায় এবার রোপা আমনের ফসল অনেক ভাল হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানাগেছে, এ বছর বালাগঞ্জের ৬টি ইউনিয়নের ১৮টি কৃষি বøকে মোট ৭হাজার ৫শ ৭৭হেক্টর জমিতে রোপা আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে হাইব্রিড ৩৬ হেক্টর, উফশী ৭হাজার ২শ৯০ ও স্থানীয় জাতের ২শ ৫১ হেক্টর। ইতোমধ্যে কেনোকোনো স্থানে জমিতে কৃষকরা ধান কাটা আরম্ভ করে দিয়েছেন। তবে আগামী সপ্তাহে পুরোধমে ধান কাটা শুরু হবে এবং ৮/১০ দিনের মধ্যেই ধান কাটা শেষ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এবার ধানের ফলন হেক্টরপ্রতি প্রায় ৪মেট্রিকটন হিসেবে ধান সংগ্রহ হবে বলে ধারণ করা হচ্ছে। উপজেলার ৬টি ইউনিয়নের মধ্যে সর্বাধিক রোপা আমন আবাদ হয়েছে দেওয়ানবাজার ইউনিয়নে এবং সবচেয়ে কম আবাদ হয়েছে পশ্চিম গৌরীপুর ইউনিয়নে।
চলতি মৌসুমের রোপা আমনের ফলন বিষয়ে আলাপকালে- উপজেলার হামছাপুর গ্রামের কৃষক সামছুল আলম, রশিদ পুর গ্রামের কৃষক মবশির খান, জালালপুর গ্রামের কৃষক রুমন মিয়া, শিওরখাল গ্রামের মুসলিম আলী, নুরুল ইসলাম, মবু মিয়া, জামালপুর গ্রামের ছানাওর আলী ও দিলাওর আলীসহ কয়েকজন কৃষক বলেন, বন্যাসহ বিভিন্ন প্রতিকৃলতার মধ্যেও আল্লাহর রহমতে এবার ফসল বেশ ভালো হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসার কৃষিবিদ মো. আশিকুর রহমান জনান, এ বছর ৩দফা বন্যায় বালাগঞ্জের নিম্নাঞ্চলের আমন বীজতলা ও রোপণকৃত আমন আক্রান্ত হয়েছিল। পরবর্তীতে সরকারী কৃষি পুনর্বাসন কর্মসূচির আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত ২হাজার ১শ ৫০ জন কৃষককে বীজ সার সহায়তা দেওয়া হয়েছে। কৃষি বিভাগের মাঠপর্যায়ে কর্মরত উপসহকারী কৃষি অফিসারগণ যথাসময়ে কৃষকদের পরামর্শ প্রদান করেছেন। এবার আমন ধানে রোগবালাই আক্রমণ খুব কম ছিল। আশাকরি বাম্পার ফলন উঠবে কৃষকের ঘরে।