৫ দিনের মধ্যে বন্ধ থাকা সিলেটের সকল পাথর কোয়ারী খুলে দেয়া, আটক বারকি নৌকা ফেরত ও শ্রমিক নির্যাতন বন্ধের দাবিতে মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট জেলা প্রশাসক বরাবরে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন পাথর শ্রমিক বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ।
স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, দীর্ঘ ৭ বছর ধরে পতিত আওয়ামী ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে বৃহত্তর সিলেটের সকল পাথর কোয়ারী ও বিভিন্ন বালু মহাল থেকে পাথর ও বালু উত্তোলন বন্ধ রয়েছে। দীর্ঘদিন থেকে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় এ অঞ্চলের প্রধানতম বারকী পেশায় সম্পৃক্ত দশ লক্ষাধিক মানুষ ও বিশ সহস্রাধিক ব্যবসায়ী আয়-রোজগার হারিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।
স্মারকলিপিতে আরও উল্লেখ করা হয়, সিলেটে ভয়াবহ বন্যার অন্যতম প্রধান কারণ হচ্ছে পাথর কোয়ারী বন্ধ করা। দীর্ঘদিন ধরে পাথর কোয়ারী ও বালু মহাল বন্ধ থাকায় ভোলাগঞ্জ, বিছনাকান্দি, জাফলং সহ অন্যান্য পাথর মহালগুলোর উৎসমুখ ভরাট হয়ে গেছে। পাশাপাশি উজান থেকে নেমে আসা পাহাড়ী ঢলের স্রোতে ভেসে আসা পলিমাটি, বালুতে সিলেটের সকল নদ-নদী, খাল বিল, নদীনালা, হাওর ভরাট হয়ে গেছে। ফলে নদ-নদী, খাল বিলের পানির ধারণ ক্ষমতা না থাকায় মানুষের ভিটে বাড়ি তলিয়ে জনজীবনে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। অপরদিকে মাছের বিচরণ বিনষ্ট হয়েছে। রিজার্ভের ডলার সংকট, রিজার্ভের ডলার দিয়ে নি¤œমানের পাথর আমদানী, দেশের হাজার হাজার ব্যবসায়ীদের শত শত কোটি টাকা অবৈধ চোরাই পথে ভারতের ব্যবসায়ীরা নিয়ে যাচ্ছে, এদেশের পাথর মহাল বন্ধ থাকায় বিদেশ থেকে আমদানীকৃত বিভিন্ন স্থানে এলসির পাথর চড়া দামে বিক্রি হচ্ছে। দেশের পাথর মহালগুলো উন্মুক্ত থাকলে প্রতিযোগিতার বাজারে কম দামে পাথর পাওয়া যাবে। ৫ দিনের মধ্যে পাথর কোয়ারী খুলে দেয়া, তিন দিনের মধ্যে আটককৃত বারকি নৌকা ফেরত এবং সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে নিরীহ শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের মামলা থেকে অব্যাহতির দাবি জানানো হয়। ৫ দিনের মধ্যে পাথর কোয়ারি খুলে দেয়া না হলে ০১ নভেম্বর বিভিন্ন স্থানে প্রতিবাদ সমাবেশ, ০৩ নভেম্বর সিলেট ভোলাগঞ্জ মহাসড়ক এবং সিলেট-জাফলং মহাসড়ক অবরোধ।
স্মারকলিপি গ্রহনকালে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ শের মাহবুব মুরাদ এক সপ্তাহের মধ্যে এ বিষয়ে পাথর শ্রমিক বাঁচাও আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ সহ সংশ্লিষ্টদের সাথে আলোচনায় বসবেন বলে আশ্বাস প্রদান করেন।
এসময় উপস্থিত ছিলেন, পাথর শ্রমিক বাঁচাও আন্দোলনের প্রধান উপদেষ্টা, গোয়াইনঘাটের বিশিষ্ট সালিস ব্যক্তিত্ব মো. জুলহাস উদ্দিন শিকদার, আহবায়ক সাংবাদিক আবুল হোসেন, সদস্য সচিব সৈয়দ ফখরুল ইসলাম, সুমন আহমদ, জহিরুল হক, আজমল হোসেন, ইকবাল হোসেন ইমন, বাদল মিয়া প্রমুখ।