উপজেলা চেয়ারম্যানদের দায়িত্ব পালন করবেন ইউএনও

8

স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটে যেসব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন সেসব উপজেলা পরিষদে চেয়ারম্যানের হাতে থাকা আর্থিক ও প্রশাসনিক দায়িত্বগুলো ইউএনওরা পালন করবেন। এই আদেশ স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয় জানিয়েছে।
ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর সিলেটের বেশিরভাগ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের দেখা মিলছে না। অনেকে চলে গেছেন আত্মগোপনে। এতে করে স্থানীয় সরকারের গুরুত্বপূর্ণ সেবা-পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন জনগণ। ব্যাহত হচ্ছে নাগরিক সেবা কার্যক্রম। জনপ্রতিনিধিদের আত্মগোপনে চলে যাওয়ায় এ অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা গেছে, সিলেটের ১৩ উপজেলার মধ্যে ১১টিতে আওয়ামী পন্থী চেয়ারম্যান রয়েছেন। তদের মধ্যে বেশিরভাগই এখন আত্মগোপনে রয়েছেন। অনেকেই দেশত্যাগ করেছেন বলে গুঞ্জন রয়েছে। ৫ আগস্টের পর থেকে ১৩ আগস্ট পর্যন্ত অফিসে আসেননি বেশিরভাগ চেয়ারম্যানরা। মোবাইলও বন্ধ করে রেখেছেন অনেকে।
আদেশে জানানো হয়, সম্প্রতি উ™‚¢ত পরিস্থিতির কারণে বিভিন্ন উপজেলা পরিষদে অনেক চেয়ারম্যান ধারাবাহিকভাবে কর্মস্থলে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং যোগাযোগ করেও তাদের উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না মর্মে সংশ্লিষ্ট উপজেলা পরিষদ সূত্রে জানা যায়। উপজেলা পরিষদের অনেক প্যানেল চেয়ারম্যানও কর্মস্থলে ধারাবাহিকভাবে অনুপস্থিত রয়েছেন এবং তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেও উপস্থিতি নিশ্চিত করা যাচ্ছে না। এজন্য উপজেলা পরিষদগুলোর অনেক ধরনের কার্যক্রম স্থবির হয়ে পড়েছে এবং জনসেবা বিঘিœত হচ্ছে উল্লেখ করে আদেশে বলা হয়, যেসব উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এবং প্যানেল চেয়ারম্যান অনুপস্থিত রয়েছেন সেসব উপজেলা পরিষদে সব ধরনের জনসেবা অব্যাহত রাখা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম চালু রাখতে সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে পুনরাদেশ না দেওয়া পর্যন্ত সাময়িকভাবে উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যানের পূর্ণ আর্থিক ও প্রশাসনিক ক্ষমতা অর্পণ করা হলো।
আত্মগোপনে থাকা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানরা হলেন- সিলেট সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি সুজাত আলী রফিক, ওসমানীনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও সিলেট জেলা যুবলীগের সভাপতি ভিপি শামীম আহমদ, বালাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও বালাগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আনহার মিয়া, জৈন্তাপুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক লিয়াকত আলী, কোম্পানীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক মো. মজির উদ্দিন, গোলাপগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য মঞ্জুর কাদির শাফি চৌধুরী এলিম, ফেঞ্চুগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি আশফাকুল ইসলাম সাব্বীর এবং জকিগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও প্রবীণ আওয়ামী লীগ নেতা লোকমান উদ্দিন চৌধুরী। তবে লোকমান চৌধুরীর দীর্ঘদিন থেকে অসুস্থ থাকায় অফিস করতে পারছেন না বলে জানা গেছে।
এদিকে বিয়ানীবাজার উপজেলা চেয়ারম্যান ও আওয়ামী লীগ নেতা আবুল কাশেম পল্লব নিয়মিত অফিস করছেন। আর দক্ষিণ সুরমা উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুল ইসলাম ১৩ আগস্ট থেকে অফিস করতে শুরু করেছেন বলে একটি সূত্র নিশ্চিত করেছে। এছাড়া বিশ্বনাথ ও গোয়াইনঘাটে বিএনপি পন্থী চেয়ারম্যান থাকায় তারা নিয়মিত অফিস করছেন বলে জানা গেছে।
আত্মগোপনে থাকা চেয়ারম্যানদের ঘনিষ্ঠজনেরা জানিয়েছেন, তারা অফিস করছেন না হামলা ও সহিংসতার আশঙ্কায়। কারণ এই মুর্হুতে পুলিশ আইনশৃঙ্খরা নিয়ন্ত্রণে সক্রিয় ভ‚মিকা পালন করছে না।