স্টাফ রিপোর্টার
সিলেটে আবার বৃষ্টি শুরু হয়েছে। মঙ্গলবার থেকে শুরু হওয়া বৃষ্টি বুধবার ও বৃহস্পতিবারও অঝোর ধারায় নামে। এতে সিলেটের বন্যাকবলিত লোকজন আবার নতুন করে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন। আবহাওয়া অধিদপ্তর আরও টানা দুই দিন ভারী বর্ষণের পূর্বাভাস দিয়েছে। এতে নতুন করে বন্যার শঙ্কা দেখা দিয়েছে। ইতোমধ্যে সিলেটের বেশ ক’টি এলাকায় পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। বুধবার বিকেল থেকে টানা বৃষ্টির ফলে বেশ কয়েক জায়গায় জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হয়েছে। কুশিয়ারা তীরবর্তী জনপদ জকিগঞ্জ, বালাগঞ্জ, ওসমানীনগর, দক্ষিণ সুরমা, বিয়ানীবাজার, গোলাপগঞ্জ ও ফেঞ্চুগঞ্জের বন্যা পরিস্থিতি অপরিবর্তীত।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী দীপক রঞ্জন দাস বলেন, নদীগুলো ভরাট থাকায় পানি ধীর গতিতে নামছে। সিলেটে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৪৪ ঘণ্টায় ১৩৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে। এতে সুরমা ও কুশিয়ারার পানি বেড়েছে। বুধবার বেলা ৩টায় কানাইঘাটে সুরমার পানি বিপৎসীমার ২৫ সেন্টিমিটার, অমলসিদে কুশিয়ারার পানি বিপৎসীমার ৩৫ সেন্টিমিটার ও ফেঞ্চুগঞ্জে ৯২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
এমনিতেই তিন দফা বন্যায় সিলেটে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। রাস্তাঘাট ভেঙেছে। বাড়িঘর ফসলি জমি ডুবে আছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে মন্দা চলছে। পর্যটন ব্যবসায় ধস নেমেছে। গত ২৭ মে থেকে শুরু হওয়া বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরা এখনো ঘুরে দাঁড়াতে পারছেন না। এবারের বন্যায় আউশের ক্ষতির পর আমন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষকেরা। ‘বন্যার পানি নামছে না ও এলোমেলো আবহাওয়ার কারণে আমনের হালি চারা বপণ করতে পারছি না’Ñবললেন সুনামগঞ্জ জেলার শান্তিগঞ্জ উপজেলার কৃষক বেলাল আহমদ চৌধুরী। কৃষি বিভাগ জানায়, এবারের বন্যায় সিলেটের ১ লাখ ৬৭ হাজার ৩৪৩ জন কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
এদিকে টানা বৃষ্টির পর আবারও সারাদেশে তাপমাত্রা বাড়ছে। গরমে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে জনজীবন। তবে এর মধ্যেই ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। সংস্থাটি বলছে, দেশের পাঁচ বিভাগে ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। যার ফলে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভ‚মিধসের শঙ্কা রয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১১ জুলাই) আগামী ৪৮ ঘণ্টার জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে এমন তথ্য জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রাজশাহী, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের কোথাও কোথাও ১১ জুলাই বেলা ১১টা থেকে পরবর্তী ৪৮ ঘণ্টায় ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে। ভারি বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভ‚মিধসের শঙ্কা রয়েছে।
অপর এক পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, রাজশাহী, ময়মনসিংহ, ঢাকা, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অধিকাংশ জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি বা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও ভারি থেকে অতি ভারি বর্ষণ হতে পারে।