সরকারি চাকরির কোটার বিষয়ে চার সপ্তাহের স্থিতাবস্থা

13

 

কাজির বাজার ডেস্ক

সরকারি চাকরির কোটা ব্যবস্থা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার আদেশ দিয়েছেন আপিল বিভাগ। বুধবার (১০ জুলাই) প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের আপিল বিভাগ এ আদেশ দেন। আদেশের সঙ্গে আপিল বিভাগ কিছু পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনাও দিয়েছেন। আগামী ৭ আগস্ট এ বিষয়ে পরবর্তী শুনানি হবে।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, ‘আপিল বিভাগ সাবজেক্ট ম্যাটারে স্থিতাবস্থা জারি করেছেন। ফলে হাই কোর্টের রায়ের আগে যেমন ছিল, সব তেমন থাকবে। অর্থাৎ, কোটা বাতিলসংক্রান্ত ২০১৮ সালের যে পরিপত্র কার্যকর ছিল, সেটা বহাল থাকবে।’
পর্যবেক্ষণ ও নির্দেশনায় আপিল বিভাগ বলেন, ‘সব প্রতিবাদী কোমলমতি শিক্ষার্থীকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরে গিয়ে লেখাপড়ায় মনোনিবেশ করতে বলা হলো।’ দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য, প্রক্টর ও অন্যান্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের প্রধানরা তাদের শিক্ষার্থীদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ফিরিয়ে নিয়ে শিক্ষার উপযুক্ত পরিবেশ নিশ্চিত করবেন বলে আদালত আশা ব্যক্ত করেন।
আদালত বলেন, প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীরা চাইলে আইনজীবীর মাধ্যমে তাদের বক্তব্য আদালতে তুলে ধরতে পারবেন। মূল আবেদন নিষ্পত্তির সময় তাদের বক্তব্য আমলে নেয়া হবে।
প্রধান বিচারপতি ওবায়দুল হাসান বলেন, ‘আপিল বিভাগ প্রয়োজনে সংবিধানের ১০৪ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী হাইকোর্টের রায় সংশোধন কিংবা বিষয়টি নিয়ে উচ্চক্ষমতা সম্পন্ন কমিটিও করতে পারে।’
শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীদের আন্দোলনের মুখে ২০১৮ সালের ৪ অক্টোবর সরকারি চাকরিতে ১০ শতাংশ নারী কোটা, ৩০ শতাংশ মুক্তিযোদ্ধা কোটা ও ১০ শতাংশ জেলা কোটা বাতিল করে পরিপত্র জারি করা হয়। ওই পরিপত্রের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে ২০২১ সালে রিট করেন মুক্তিযোদ্ধার সন্তান অহিদুল ইসলামসহ সাতজন। গত ৫ জুন সেই আবেদনের চ‚ড়ান্ত শুনানি শেষে বিচারপতি কে এম কামরুল কাদের ও বিচারপতি খিজির হায়াতের হাইকোর্ট বেঞ্চ কোটা পদ্ধতি বাতিলের সিদ্ধান্ত অবৈধ ঘোষণা করেন। পরে রাষ্ট্রপক্ষ এর বিরুদ্ধে আপিল করে। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার দুই শিক্ষার্থীও হাইকোর্টের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করার অনুমতি চেয়ে আপিল বিভাগে আবেদন করেন। চেম্বার জজ বিচারপতি আশফাকুল ইসলাম তাদের হলফনামা করার অনুমতি দেন এবং বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য বুধবারের (১০ জুলাই) কার্যতালিকায় রাখেন।
এদিকে হাইকোর্টের ৫ জুনের রায়ের পর নতুন করে আন্দোলনে নামেন শিক্ষার্থী ও চাকরিপ্রত্যাশীরা। ‘বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন’ ব্যানারে তারা কোটা বাতিলসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ করছিলেন। এর মধ্যে গত মঙ্গলবার চার দফা থেকে দাবি এক দফায় নামিয়ে আনেন আন্দোলনকারীরা। তাদের এক দফা হলোÑসব গ্রেড থেকে অযৌক্তিক ও বৈষম্যমূলক কোটা বাতিল করে এবং অনগ্রসর গোষ্ঠীর জন্য কোটাকে ন্যূনতম পর্যায়ে এনে সংসদে আইন পাসের মাধ্যমে কোটা পদ্ধতি সংশোধন করতে হবে।