বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর
সামান্য বৃষ্টিতে ডুবে যায় সড়ক। এতে ভোগান্তিতে পড়েন এ পথে যাতায়াতকারী ৩ উপজেলার ৪ লক্ষাধিক মানুষ। তাহিরপুর উপজেলা সদর থেকে জেলা সদর সুনামগঞ্জের সড়ক পথের দৈর্ঘ্য ৩১ কিলোমিটার। এর মধ্যে তাহিরপুর থেকে আনোয়ারপুর পর্যন্ত ৬ কিলোমিটার সড়ক ও জনপথ বিভাগের। আনোয়ারপুর বাজার থেকে বালিজুরী পূর্ব পাড়া পর্যন্ত ৪ কিলোমিটার সড়ক এলজিইডির।
অপরদিকে বালিজুরীর শেষ সীমা শক্তিয়ারখলা থেকে বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা সদর পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার সড়ক ইলজিইডি এবং বিশ^ম্ভরপুর উপজেলা সদর থেকে অবশিষ্ট সড়ক পথ টুকু সড়ক ও জনপদের। এ পথে সড়ক ও জনপথের যতটুকু সড়ক রয়েছে সেগুলো অপেক্ষাকৃত উচু থাকার কারনে ভযাবহ বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি না হলে ডুবে না।
এলজিইডর সড়ক পথ টি তুলনামুলক নিচু থাকার কারণে সামন্য পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যায়।
সম্প্রতি পাহাড়ি ঢলের কারণে বন্যা দেখা দিলে সুনামগঞ্জ তাহিরপুর সড়কে এলজিইডির আনোয়ারপুর থেকে বালিজুরী সড়ক এবং শক্তিয়ারখলা বাজারের পূর্ব থেকে ১শ’ মিটার এবং দুর্গাপুর নামক স্থানে আরও ১শ’ মিটার সড়ক পথ পানিতে নিমজ্জিত থাকে কমপক্ষে ১৫ দিন। তখন এ পথে যাতাযাতকারী লোকজন ভেঙে ভেঙে সুনামগঞ্জ জেলা সদরের সাথে যাতায়াত করেন। গত দু’তিন দিন ধরে সড়কপথে যোগাযোগ কিছুটা স্বাভাবিক হলেও শনিবার বিকেল থেকে এ সড়কের বেশ কয়েকটি স্থান আবারও পাহাড়ি ঢলের পানিতে তলিয়ে যায়। সে সময় ডুবন্ত পথে কিছু কিছু সিএনজিও লেগুনা চলাচল করলে তার ভাড়া গিয়ে দাড়ায় দ্বিগুন। যাত্রীরা বিপাকে পরে ৫’শ টাকার ভাড়া ১২’শটাকা থেকে ১৫’শ টাকা দিয়ে থাকেন। শুক্রবার অনেকেই টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরতে আসেন। শনিবার বিকেলে আবহাওয়া খারাপ হলে পাহাড়ি ঢল নেমে আনোয়ারপুর, শক্তিয়ারখলা ও দূর্গাপুর সড়কে পানি উঠলে অনেকইে গাড়ি পাননি জেলা সদর যেতে। সে সময় পূর্ব র্নিধারিত ভাড়ার দ্বিগুন ভাড়া দিয়ে অনেকেই সুনামগঞ্জ পৌঁছেন।
ঢাকা থেকে টাঙ্গুয়ার হাওর ঘুরতে আসা ট্রাভেলার রাসেল ভুইয়া জানান, শনিবার সন্ধ্যায় আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণে প্রতিটি সিএনজি ১৫শ’ টাকা দাবী করে। শেষ পর্যন্ত ১২শ’ টাকায় যেতে রাজি হয়। কি করবো বাধ্য হয়ে যেতে হয়েছে।
তাহিরপুর একটি বাড়ি একটি খামার প্রকল্পে চাকুরী করেন হোসাইন আহমদ। তিনি সুনামগঞ্জ জেলা সদরে অবস্থান করেন। মোটর বাইক নিয়ে তিনি প্রতিদিন এ পথে তাহিরপুর যাতায়াত করেন। প্রায়ই তিনি ডুবন্ত সড়ক দিয়ে বাইক চালিয়ে আসেন। কখনো কখনো বাইক নৌকা করে ডুবন্ত পথটুকু পাড়ি দেন। আজ রবিবারও তিনি এ ডুবন্ত পথে বাইক চালিয়ে এসেছেন।
শুধু হোসাইন আহমদ নয় তাহিরপুরের কম পক্ষে শতাধিক চাকুরীজীবী (স্বাস্থ্য বিভাগ, স্কুল শিক্ষক, উপজেলা প্রশাসন) জেলা সদর সুনামগঞ্জ অবস্থান করেন। তাদের প্রত্যেকেই বর্ষাকালে তাহিরপুর অফিস করতে এসে কিংবা যেতে ১’শ মিটার নামক স্থানে পাহাড়ি ঢলের পানির কারণে বিপাকে পড়েন। কোন কোন দিন দুর্গাপুর থেকে জেলা সদরে ফিরে যান আবার কোন কোন দিন তাহিরপুর থেকে যান। অপরদিক এ পথে সুনামগঞ্জ জেলা সদর সহ সিলেট বিভাগে যাতায়াত করেত গিয়ে শুধু মাত্র পাহাড়ি ঢলের সমস্যায় পরেন এ পথে যাতায়াতকারী মধ্যনগর, তাহিরপুর ও বিশ^ম্বরপুর উপজেলার দক্ষিন বাদঘাট ইউনিয়নরে লোকজন সহ ৪ লক্ষাধিক জনগোষ্ঠী।
এ পথে যাতায়াতকারী ভোক্তভোগীদের অনেকের দাবী ডুবন্ত সড়কে কয়েকটি উঁচু সেতু দিয়ে পানি প্রববাহের ব্যাবস্থা করে দিলে তারা নির্বিঘেœ বর্ষা-হেমেন্ত এ পথে যাতায়াত করতে পারবেন। তাহিরপুর সদর ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান জুনাব আলী বলেন, বর্ষাকালে শক্তিয়ারখলার ১শ মিটার সড়কটি প্রায়ই ডুবে থাকে। তখন ভেঙ্গে ভেঙ্গে জেলা সদরের সাথে যোগাযোগ করতে হয়। এলজিইডি নির্বাহী প্রকৌশলী সুনামগঞ্জ মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহের জন্য এ সড়কের দু তিনটি স্থান নীচু রাখা হয়েছে। আমরা অনেক চেষ্টা করেছি এ স্থানগুলো উচু করার জন্য। দেখলাম এ টুকু উচু করলে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহের আর কোন বিকল্প পথ থাকবে না। তাই এ ভাবেই বর্ষাকালে চলতে হবে আমাদের।