মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে ফের আরেক দফা বন্যার আশঙ্কা বিরাজ করছে। গত দুই দিন ধরে থেমে থেমে ভারি ও মাঝারি বৃষ্টিপাতে আবারো বাড়তে শুরু করেছে নদ-নদী ও হাওরের পানি। এতে আবারো আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন বন্যা দুর্গত মানুষেরা। প্রথম ধাপের বন্যার আঘাত কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই দ্বিতীয় দফা বন্যার শঙ্কা সবাইকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে।
প্রথম ধাপের বন্যায় উপজেলার বিভিন্ন আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা দুর্গত মানুষেরা সবেমাত্র বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। অধিকাংশ মানুষজন আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজ বাড়িঘরে গিয়ে কোন রকমে বসবাস করছেন। পানি কমে যাওয়ায় সবে ভেসে উঠতে শুরু করেছে রাস্তাঘাট সহ ডুবে যাওয়া স্থানগুলো। তবে এখনো পানি থাকায় পৌর শহরের হেলিপ্যাড হয়ে সি/এ মার্কেট পর্যন্ত নলজুর নদীর উপরে থাকা বিকল্প বেইলি সেতু দিয়ে চলাচল করা যাচ্ছে না। নির্মাণাধীন আর্চসেতুর পাশে থাকা বিকল্প বাঁশের সেতু দিয়ে কিছু মানুষ পায়ে হেঁটে চলাচল করছেন। এতেও দিন দিন ঝুঁকি বাড়ছে। নদীর পূর্বপাড়ের পিচ্চিল রাস্তায় চলাচল করতে গিয়ে অনেকে পা পিছকে পড়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটছে। শুধু মাত্র পৌর শহরের শহীদ মিনার এলাকায় থাকা সেই পুরনো সরু সেতু দিয়ে মানুষজন কোন রকমে চলাচল করছেন। এতে সারাক্ষণ যানজট লেগেইে থাকে। পুলিশ ও আনসার ভিডিপি সদস্যরা যানজট নিরসনে কিছু সময় এপারের গাড়ি ওপারে, আবার কিছু সময় ওপারের গাড়ি এপারে নিয়ম শৃঙ্খলার মাধ্যমে যাতায়াতের ব্যবস্থা করায় কোন রকমে জগন্নাথপুর-সিলেট লাইনে যোগাযোগ করা যাচ্ছে। যদিও উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলে ডুবে যাওয়া নি¤œাঞ্চল এখনো ভেসে উঠেনি। বন্যা কবলিত এলাকার মানুষজন নানা ভোগান্তির শিকার হয়ে বসবাস ও চলাচল করছেন। সবার আশা ছিল, আরো পানি কমে গেলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাবে। আগের মতো সাধারণভাবে জীবন-যাপন করা যাবে। কর্মতৎপর হয়ে উঠবেন দুর্গত মানুষজন। বন্যার ক্ষত কাটিয়ে আবারো নিজের ঘর-সংসার সাজাবেন গৃহিনীরা। এমন আশা নিয়ে সরকারি ও বেসরকারি আশ্রয়কেন্দ্র ছেড়ে নিজ বাড়িতে গিয়েছিলেন মানুষজন।
এর মধ্যে গত দুই দিন ধরে বৃষ্টিপাতে আবারো পানি বাড়তে শুরু করায় আরেক দফার বন্যার আশঙ্কা চারদিকে ছড়িয়ে পড়েছে। ১ জুলাই সোমবার দিনের অধিকাংশ সময় থেমে থেমে ভারি ও মাঝারি বৃষ্টিপাত হয়েছে। ফলে অল্প হলেও পানি বাড়ছে। এতে আবারো চিন্তিত হয়ে পড়েছেন বলে আশ্রয়কেন্দ্র থেকে বাড়ি ফেরা বেশ কয়েকজন বন্যা দুর্গত পরিবারের নারী-পুরুষ জানান।
এ বিষয়ে জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আল-বশিরুল ইসলাম জানান, বন্যার পানি কমে যাওয়ায় আশ্রয়কেন্দ্রে থাকা মানুষজন নিজ বাড়ি ফিরে গেছেন। শুধু আবদুস সামাদ আজাদ অডিটোরিয়ামে কিছু মানুষ আছেন। এর মধ্যে স্কুল-কলেজ খোলে গেছে। এখন সুরমা নদীতে কিছু পানি বাড়লেও কুশিয়ারায় বাড়েনি। এখানে কুশিয়ারা নদী হয়ে পানি বেড়ে থাকে। তবুও পরিস্থিতি বুঝে ব্যবস্থা নেয়া হবে।