হবিগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
ঈদুল আযহাকে সামনে রেখে জমে উঠেছে হবিগঞ্জের নবীগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ পশুর হাট দিনারপুর জনতার বাজার। প্রতিবছর এ হাটে কোটি কোটি টাকার গরু-ছাগল বিক্রি হয়। বিশেষ করে ঈদুল আযহা উপলক্ষে জনতার বাজারে দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে হাজার হাজার গরু-ছাগল নিয়ে আসে বিক্রেতারা। সপ্তাহে তিন দিন (শনি, সোম ও বৃহস্পতিবার) বসে এ হাট।
সূত্র জানায়, প্রতিবছর জনতার বাজার থেকে কোটি কোটি টাকার রাজস্ব আদায় হলেও রহস্যজনক কারণে ইজারা দেওয়া হয় না। আদায় করা রাজস্বের টাকা নিয়ে নানা প্রশ্ন তুলেছে সচেতন মহল। আইনি জটিলতা দেখিয়ে দীর্ঘ একযুগ ধরে বাজার ইজারার কার্যক্রম বন্ধ রেখেছে প্রশাসন। এতে করে রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে সরকার। এই ব্যবস্থাপনা নিয়ে দীর্ঘ ক্ষোভ বিদ্যমান রয়েছে। ১/১১ সময় জনতার বাজার পশুরহাটকে কেন্দ্র করে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. আবদুর রহিমকে চরম খেসারত দিতে হয়। রাতের আঁধারে তিনি নবীগঞ্জ ত্যাগ করেন। এরপরও এর কোনো সুরাহা হয়নি। ধূ¤্রজাল নিয়েই চলছে এর কার্যক্রম। গত (১৮ আগষ্ট) শনিবার সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, ঢাকা-সিলেট মহাসড়কের উভয় পাশে জনতার বাজার পশুর হাটে ক্রেতা-বিক্রেতার প্রচণ্ড ভিড়,ক্রেতা-বিক্রেতাদের উপচে পড়া ভিড় ছিল রাত ১০টা পর্যন্ত। ঈদের আর মাত্র তিনদিন বাকী তাই পশুর হাটের ভিড় বিরাট আকার ধারণ করেছে। জনতার বাজারের পশুর হাট সম্পূর্ণ হাট ছিল গরু, ছাগল পশুতে পরিপূর্ণ। তবে দাম গত বছরের তুলনায় বেশি জানিয়েছেন বাজারে আসা ক্রেতাগণ। ঈদের শেষ বাজার সোমবারে কোরবানীর পশু কিনবেন বলে জানিয়েছেন অনেকে। এদিকে অনেকেই স্মার্টফোনে ভিডিও কলের মাধ্যমে বিদেশে বা বাড়িতে থাকা লোকজনকে গরু দেখায়। হাটে ভিড় থাকায় মহাসড়কে যান চলাচলে বিঘœন ঘটে। শনিবার জনতার বাজারে কয়েক হাজার গরু ও ছাগল বেচাকেনা হয়। উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রতি হাজারে ৪০ টাকা হারে রাজস্ব আদায় করা হয় ।
জনতার বাজারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা ও বাজার ব্যবস্থাপনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কাজী তোফায়েল আহমেদ বলেন, জনতার বাজার থেকে প্রতি বছর কমপক্ষে ১ কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হয়। প্রতিবছর আদায়কৃত রাজস্ব সরকারের কোষাগারে জমা হওয়ার কথা। এ রাজস্বের একটি অংশ এলাকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেওয়ার কথা থাকলেও সেটা হচ্ছে না। এত টাকা রাজস্ব আদায় করা হলেও বাজারের উন্নয়নে এক টাকাও ব্যয় করা হয় না। ফলে কাদা ও পানির মধ্যে অনেক ক্রেতা-বিক্রেতা পশু কেনাবেচা করছে।
এ ব্যাপারে সরকারী আইনজীবী নিজামুল হক লস্কর সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন জনতা বাজার সংক্রান্ত সবকটি মামলা বাদীর নিষ্কিয়তার জন্য মামলাটি ১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৫ইং সালে নিষ্পত্তি হয়ে যায়।
এ বিষয়ে নবীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদ বিন হাসান বলেন, জনতার বাজারের পশুর হাট থেকে প্রতি বছর প্রায় ১০ লাখ টাকা রাজস্ব আদায় করা হয়, এই বাজারকে কেন্দ্র করে আদালতে একটি মামলা রয়েছে যা চলমান,মূলত দীর্ঘদিন ধরে আইনি জটিলতার কারনেই ইজারা দেয়া যাচ্ছেনা । মামলা শেষ হওয়ার কোনো কাগজ পত্র পাইনি, প্রতিবছর যে রাজস্ব আদাঢ করা হয় সেই টাকা হাট-বাজারের খাতে জমা হয়। রাজস্ব আদায়কৃত টাকার মধ্যে একটি অংশ এলাকার ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে দেওয়ার ব্যাপারে তিনি বলেন, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে টাকার একটি অংশ দেয়ার ব্যাপারে কোনো নির্দেশনা নেই। রাজস্ব আদায়কৃত টাকা গুলো সরকারের বিভিন্ন খাতে ব্যয় করা হয়।