সুনামগঞ্জে পাহাড়ি ঢলে ২৬টি নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি, দোয়ারায় ২৪টি গ্রাম প্লাবিত

6

সুনামগঞ্জ সংবাদদাতা

পাহাড়ি ঢলে সুনামগঞ্জের সুরমা, যাদুকাটা, কুশিয়ারাসহ ২৬ নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। গত ২৪ ঘণ্টায় সুরমা নদীর পানি ২৮ সেন্টিমিটার বৃদ্ধি পেয়ে বিপৎসীমার ১৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে বলে জানা গেছে। শনিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার।
নির্বাহী প্রকৌশলী মামুন হাওলাদার বলেন, ভারতের চেরাপুঞ্জিতে প্রচুর বৃষ্টিপাত হওয়ায় উজান থেকে পাহাড়ি ঢল নামছে। আর সেই ঢলের পানিতে সুনামগঞ্জের সব নদ-নদীর পানি দ্রæত বাড়ছে। মামুন হাওলাদার আরও বলেন, এভাবে পাহাড়ি ঢল নামা অব্যাহত থাকলে আজকেই নদ-নদীর পানি বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হবে। এতে সুনামগঞ্জে স্বল্প মেয়াদি বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হতে পারে। এদিকে দ্রæত নদীর পানি বেড়ে যাওয়ায় বন্যা আতঙ্কে দিন পার করছেন জেলার ২০ লাখ বাসিন্দা।
বাসিন্দাদের শঙ্কা, যেভাবে নদীর পানি বাড়ছে তাতে ঈদের আগে বন্যা হয়ে যেতে পারে। আর বন্যা হলে তাদের ঈদ আনন্দ শেষ হয়ে যাবে।
দোয়ারাবাজার সংবাদদাতা জানান, সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার ল²ীপুর ইউনিয়নের খাসিয়ামারা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে প্লাবিত হয়েছে বক্তারপুর, চৌকিরঘাট, ইদ্রিসপুর, ঝিরারগাও, ল²ীপুর, নোয়াপাড়া, রসরাই, সুলতানপুর, এরুয়াখাই, মাঠগাঁও ও রণভুমিসহ ২৪টি গ্রাম। গত তিনদিন ধরে টানা বর্ষণ ও পাহাড়ি ঢলে জেলার সুরমা, চেলা, চলতি, মরাচেলা, খাসিয়ামারা, মৌলা, কালিউরি ও ধূমখালিসহ অনেক নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়েছে। শনিবার সকালে খাসিয়ামারা নদীতে প্রবল বেগে পাহাড়ি ঢল নামে।
এতে খাসিয়ামারা নদীর বেড়িবাঁধ এবং নোয়াপাড়া, বক্তারপুর, ও চৌকিরঘাট এলাকায় বাঁধ ভেঙে প্রবল পানির স্রোতে এসব গ্রাম প্লাবিত করে। হঠাৎ করে বাঁধ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করায় স্থানীয় বাসিন্দাদের ঘরবাড়ি গবাদিপশু রাস্তাঘাটের ক্ষয়ক্ষতি হয়। এছাড়া আমনের বীজতলা, আউশ ও সবজি ক্ষেত তলিয়ে যায়।
ল²ীপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মো. জহিরুল ইসলাম বলেন, সকালে বাঁধ ভেঙে গ্রামগুলো প্লাবিত হয়েছে। বিকেলের দিকে পানি প্রবাহ কমে গেছে। বৃষ্টিপাত না হলে দ্রæত পানি কমে যাবে। তবে কয়েক ঘণ্টার ঢলে অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।
দোয়ারাবাজার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোহাম্মদ আম্বিয়া আহমদ বলেন, সকাল ৮টা থেকে ১১টা পর্যন্ত খাসিয়ামারা নদী দিয়ে পাহাড়ি ঢলের পানি প্রবাহিত হয়। পানির প্রবল স্রোতে খাসিয়ামারা নদীর বেড়িবাঁধের তিনটি অংশে ভাঙন দেখা দেয়। এখন পুরো এলাকা থেকে পানি নেমে গেছে। তাই কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।
দোয়ারাবাজার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নেহার নিগার তনু বলেন, খাসিয়ামারা নদীর বেড়িবাঁধ ভেঙে সকালে কিছু এলাকায় পানি উঠেছিল। বিকেলে নেমে গেছে। একটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার তথ্য পেয়েছি।