সপ্তাহের ব্যবধানে নগরীতে দু’বার পানি

12

 

স্টাফ রিপোর্টার

ভারি বৃষ্টিতে এক সপ্তাহের মধ্যে আবার ডুবল নগরীর অর্ধশতাধিক এলাকা। শনিবার রাত সাড়ে ৯টা থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলা এ বৃষ্টিতে নগরীর অনেক স্থানে হাঁটু থেকে কোমরসমান পানি দেখা দেয়।
সিলেটে শনিবার রাতে মাত্র ৩ ঘন্টায় রেকর্ড ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়েছে। এই ভারি বৃষ্টিতে আবার তলিয়ে যায় সিলেট নগরী। এনিয়ে এক সপ্তাহের ব্যবধানে দুইবার জলাবদ্ধতার দুর্ভোগ পোহাতে হলো সিলেট নগরীর বাসিন্দাদের।
শনিবার রাত ৯ টার দিকে বৃষ্টি শুরু হয় এবং এক টানা তা রাত ১২টা পর্যন্ত চলে। এতে নগরীর বেশিরভাগ এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানি ঢুকে পড়ে বাসাবাড়ি ও দোকানপাটে। পানিতে তলিয়ে যায় ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের নিচতলাও। এতে দুর্ভোগে পড়েন রোগীরা। অবশ্য রবিবার সকালে পানি নেমে যায়।
এরআগে গত ২ জুন রাতে ভারি বৃষ্টিতে সিলেট নগরীতে জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। পানিতে তলিয়ে যায় নগরীর শতাধিক এলাকা। এতে দুর্ভোগে পড়েন এসব এলাকার বাসিন্দারা। সে রাতেও ওসমানী হাসপাতালে পানি ঢুকে পড়েছিলো।
শনিবার রাত ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত সরেজমিন দেখা গেছে, নগরীর দরগামহল্লা, পায়রা, চৌহাট্টা, জিন্দাবাজার, কাজলশাহ, মেডিকেল রোড, বাগবাড়ি, কালীবাড়ি, হাওলাদারপাড়া, সোবহানীঘাট, শাহজালাল উপশহর, যতরপুর, তেরোরতন, সোনারপাড়া, কেওয়াপাড়া, সাগরদিঘিরপার, পাঠানটুলা, মিয়া ফাজিলচিশত, জালালাবাদ, হাউজিং এস্টেট, শাহী ঈদগাহ, ঘাসিটুলা, হাওয়াপাড়া, মীরাবাজার, শিবগঞ্জ, মাছিমপুর, জামতলা, তালতলা ও নগরীর দক্ষিণ সুরমার বিভিন্ন এলাকায় পানি থৈথৈ করছে। ঘরমুখী মানুষেরা যানবাহনের অভাবে পানি মাড়িয়ে হেঁটেই ফিরছিলেন। এসব এলাকার বেশিরভাগ বাসায় পানি ঢুকে পড়ে।
সিলেট আবহাওয়া অফিসর সহকারী আবহাওয়াবিদ মো. সজিব জানিয়েছেন, শনিবার সন্ধ্যা ৬টা থেকে ৯টা পর্যন্ত ৩ মিলিমিটার এবং ৯ টা থেকে ১২ টা পর্যন্ত ২২০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়। আর রাত ১২ টা থেকে রবিবার সকাল ৬ টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয় ৩৪ মিলিমিটার।
নগরীর দরগাহ মহল্লা এলাকার বাসিন্দা, প্রকাশনা সংস্থা চৈতন্য’র সত্ত¡াধিকারী রাজিব চৌধুরী বলেন, শনিবার রাতে কয়েক ঘন্টার বৃষ্টিতেই দরগাহ মহল্লা এলাকায় জলাবদ্ধতা দেখা দেয়। সড়কে হাঁটু সমান পানি জমে। এলাকার বিভিন্ন বাসা বাড়িতেও পানি ঢুকে পড়ে। তিনি বলেন, মাত্র এক সপ্তাহের ব্যবধানে এনিয়ে দুইবার বাসায় পানি ঢুকলো। সিলেটে সবচেয়ে বড় যন্ত্রনার নাম জলাবদ্ধতা।
নগরীর একাধিক বাসিন্দা বলেন, নগরীর ৪২টি ওয়ার্ডের সব নিচু এলাকা তলিয়ে গেছে। অনেকে রাতের খাবার প্রস্তুত করার আগেই রান্নাঘর পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় ভোগান্তিতে পড়েন। এ ছাড়া অনেক বাসাবাড়িতে বৃষ্টির পানির সঙ্গে ভেসে ময়লা-আবর্জনাও ঢুকে পড়েছে। সব মিলিয়ে চরম ভোগান্তি পোহান লোকজন। অথচ জলাবদ্ধতা নিরসনে সিটি করপোরেশন গত দেড় দশকে প্রায় ১ হাজার ১০০ কোটি টাকা ব্যয় করেছে।
এর আগে গত ২৯ মে এক রাতের ঢলে তলিয়ে গিয়েছিলো সিলেটের পাঁচ উপজেলা। পুরো জেলায় দেখা দিয়েছিলো বন্যা পরিস্থিতি। তবে বন্যার পানি এখন কমে আসছে। বন্যা পরিস্থিতি উন্নতির মধ্যে এক সপ্তাহের মধ্যে দুইবার ডুবল সিলেট নগরী।
সিলেট সিটি করপোরেশনের জনসংযোগ কর্মকর্তা সাজলু লস্কর বলেন, রেকর্ড বৃষ্টিপাতের কারনে কিছুক্ষন জলাবদ্ধতা দেখা দিয়েছিলো। তবে সকাল হওয়ার আগেই পানি নেমে গেছে।