আজমিরীগঞ্জে ভুয়া চিকিৎসকের জেল-জরিমানা

13

আজমিরীগঞ্জ সংবাদদাতা

হবিগঞ্জের আজমিরীগঞ্জে পৌরসদর ও সদর ইউনিয়নে বিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে অভিনব কায়দায় সাধারণ রোগীদের ডিজিটাল মেশিনের মাধ্যমে সারা শরীর পরিক্ষা নিরীক্ষা করে চিকিৎসা দেয়ার নামে হাজার হাজার টাকা হাতিয়ে নিয়েছে প্রদীপ সরকার (৩৫) নামে এক প্রতারক। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি তার। স্থানীয়রা তাকে আটক করে উপজেলা প্রশাসন ও স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স অবগত করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে তিন মাসের কারাদন্ড ও নগদ এক হাজার টাকা অর্থদন্ড প্রদান করেন।
রবিবার বিকেল সাড়ে তিনটায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে প্রতারক প্রদীপ সরকারকে ভ্রাম্যমাণ আদালতে দন্ডাদেশ প্রদান করেন উপজেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো.শফিকুল ইসলাম। দন্ডপ্রাপ্ত প্রদীপ সরকার জেলার বানিয়াচং উপজেলার মক্রমপুর ইউনিয়নের নোয়াবাদ গ্রামের প্রফুল্ল সরকারের পুত্র। এ সময় তার কাছ থেকে ওজন মাপার মেশিন ১টি, ল্যাপটপ ১ টি, আর এম এনালাইজার মেশিন ১টি, প্রায় এক কার্টন ঔষধ, ইনজেকশন সিরিঞ্জ ১ বক্স ও একটি পেনড্রাইভ জব্দ করা হয়।
স্থানীয় সুত্রে জানা যায়, প্রদীপ সরকার বিগত প্রায় তিন সপ্তাহ যাবত পৌরসদরের শনির আখড়ার এলাকার দুলু সরকারের বাসায় থেকে পৌরসভার কৃঞ্চনগর, জালোহাটি, সদর ইউনিয়নের শুক্রিবাড়ি, ফতেপুর, বিরাট সহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন এলাকার সাধারণ রোগীদের অনলাইন শপ থেকে কেনা একটি বডি এনালাইজার মেশিন ল্যাপটপে সংযোগ করে হাতের ছাপ নিয়ে রোগ নির্ণয় করতেন। তারপর রোগীদের শরীরে বিভিন্ন সমস্যা আছে বলে তাদের দেয়া হতো বিভিন্ন ভিটামিন ও স্টেরয়েড ইনজেকশন এবং ইউনানীর নামে শরীরের জন্য ক্ষতিক্ষারক বিভিন্ন জাতের বেনামী ঔষধ। রবিবার দুপুরে স্থানীয় কয়েকজন যুবকের বিষয়টি সন্দেহ হলে প্রদীপ সরকারকে আটক করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তারা। সেখানেই তার প্রতারণার বিষয়টি ধরা পড়ে।
বিষয়টি উপজেলা প্রশাসনকে অবগত করা হলে উপজেলা এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো. শফিকুল ইসলাম ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে বাংলাদেশ ইউনানি ও আয়ুর্বেদিক প্রেকটিশনার অর্ডিন্যান্স আইন ১৯৮৩ এর ৩২ ধারা অনুযায়ী নগদ এক হাজার টাকা অর্থদন্ড ও তিনমাসের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা.অভিজিৎ পাল।
এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট ও সহকারী কমিশনার (ভুমি) মো.শফিকুল ইসলাম বলেন, প্রশাসনের পক্ষ থেকে আমাদের এই অভিযান অব্যাহত থাকবে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা কালে আজমিরীগঞ্জ থানার নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল সার্বিক সহযোগিতা প্রদান করেন।