জগন্নাথপুরে অল্প দিনে এগিয়ে যাওয়া হবিবপুর কেশবপুর ফাযিল মাদ্রাসা

50

 

মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর

যে কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে সামনের দিকে এগিয়ে নিতে সরকারের পাশাপাশি সমাজের উদ্যমি, যোগ্য ও কর্মঠ শিক্ষানুরাগী মানুষের প্রয়োজন হয়। যাঁদের মেধা, যোগ্যতা, শ্রম ও কর্মদক্ষতায় অনেক কঠিন কাজও সহজ হয়ে যায়। যে সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা কমিটিতে এমন মানুষকে কাজে লাগাতে পেরেছে, তারাই দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে। আর যারা সেই গুণীমানুষদের কদর করতে পারেনি, তারাই যুগযুগ ধরে পিছিয়ে আছে। এ রকমই গুণীমানুষদের যথাযথ মূল্যায়নের মাধ্যমে কাজে লাগিয়ে অল্পদিনে সামনের দিকে দ্রæত এগিয়ে যাওয়া একটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সুনামগঞ্জ জেলার জগন্নাথপুর উপজেলার হবিবপুর কেশবপুর ফাযিল মাদ্রাসা। যার নেপথ্যে রয়েছেন অনেক তরুণ প্রতিভাবান গুণীমানুষজন। যারা নিজে ও প্রবাসী এবং বিত্তাশালী স্বজনদের সহযোগিতা নিয়ে রীতিমতো অসাধ্যকে সাধন করেছেন।
জানাগেছে, ১৯৫৯ সালে হবিবপুর কেশবপুর ফাযিল মাদ্রাসা প্রতিষ্ঠত হয়। মাদ্রাসাটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এলাকায় ইসলামী শিক্ষার আলো ছড়িয়ে পড়ে। শিক্ষার আলোয় আলোকিত হয়ে উঠে অত্র অঞ্চল। চারদিকে ছড়িয়ে পড়ে মাদ্রসারা নাম। গড়ে উঠেন অনেক আলোকিত মানুষ। তবুও বিভিন্ন দিক থেকে পিছিয়ে ছিল ঐতিহ্যবাহী এ মাদ্রাসা।
অবশেষে গত ২০২৩ সালের সেপ্টেম্বরে গঠিত মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি ক্রীড়াবিদ আবিবুল বারী আয়হান, সহ-সভাপতি তরুণ প্রতিভাবান ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন চৌধুরী রেহান, দাতা সদস্য বজলুর রশীদ চৌধুরী, অভিভাবক সদস্য রাসেল রহমান, মাশ্বাদুল হক চৌধুরী রাসেল, প্রতিনিধি সদস্য ক্বারী জিল্লুর রহমান সহ নবীন ও প্রবীণ উদ্যমি শিক্ষানুরাগী গুণীমানুষজন দায়িত্ব পান। তাঁরা দায়িত্ব পাওয়ার মাত্র ৪ মাসের মাথায় মাদ্রাসার অভুতপূর্ব উন্নয়ন হয়। যা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। এগিয়ে যাওয়া মাদ্রাসার অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা আবদুল হাকিম।
উল্লেখযাগ্য উন্নয়নের মধ্যে মাদ্রাসার শিক্ষক মিলনায়তন বর্ধিতকরণ ও টাইলসধারা আধুনিকায়ন করা হয়েছে। শিক্ষিকাদের জন্য আলাদা মিলনায়তন ও বাথরুম আছে। ছাত্রীদের জন্য আলাদা অজুর ব্যবস্থা ও নামাজের রুম নির্ধারণ করা হয়েছে। মাদ্রসারা অফিস রুম টাইলসধারা আধুনিকায়ন করা হয়। মাদ্রাসার নিজস্ব নামে ওয়েবসাইড তৈরি করা হয়েছে। যাতে মাদ্রাসার শিক্ষক-শিক্ষিকা, কর্মচারী, ছাত্রছাত্রী ও গভনির্ংবডির সকল সদস্যদের তথ্য সহজে পাওয়া যায়। এছাড়া মাদ্রাসার ইতিহাস-ঐতিহ্য তুলে ধরাসহ দাতাগণের নাম অর্ন্তভ‚ক্ত করা হয়েছে। মাদ্রাসার সকল শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ডের ব্যবস্থা করা হয়। ডিজিটাল পদ্ধতিতে উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য বায়োমেট্রিক যন্ত্র স্থাপন করা হয়েছে। যা শিক্ষার্থীদের আইডি কার্ড স্পর্শ করলেই তাদের অভিভাবকদের কাছে ম্যাসেজ চলে যায়।
মাদ্রাসার কেজি শিশু শ্রেণি থেকে তৃতীয় শ্রেণি পর্যন্ত শ্রেণিকক্ষ সংস্কার করা সহ আধুনিক শিক্ষনীয় তথ্য যুগোপযুগি পেইন্টিং সজ্জিত করা হয়েছে। শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপকরণসহ ক্লাসরুমে ডেস্ক ও পৃথক বসার চেয়ার রয়েছে। মাদ্রাসার একটি শ্রেণিকক্ষে মাল্টিমিডিয়া ক্লাস পরিচালনার জন্য প্রজেক্টর বসানো হয়েছে। দুর্বল শিক্ষার্থীদের জন্য বিশেষ ক্লাসের ব্যবস্থা আছে। লেখাপড়ার মান এগিয়ে নিতে প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত পাঠদান বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। সাথে রয়েছে খেলাধুলার ব্যবস্থা। মাদ্রাসার ১০০ জন শিক্ষার্থীকে বিনামূল্যে ড্রেস প্রদান ও দরিদ্র শিক্ষার্থী খাতা প্রদান করা হয়। পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগ প্রদান ও এমপিওভ‚ক্তি করা সহ নানাভাবে এগিয়ে গেছে মাদ্রাসার কার্যক্রম। যা অভিভাবক সহ স্থানীয়দের মধ্যে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে।
এ বিষয়ে ২২ জানুয়ারি সোমবার জানতে চাইলে মাদ্রাসা কমিটির সহ-সভাপতি তরুণ প্রতিভাবান ব্যবসায়ী শিহাব উদ্দিন চৌধুরী রেহান বলেন, মাত্র ৪ মাসের মাথায় প্রবাসী ও বিত্তবান দানশীল ব্যক্তিদের সহায়তায় মাদ্রাসার অনেক উন্নয়ন হয়েছে। আগামীতে নতুন ক্যাম্পাস নির্মাণ ও ছাত্র হোস্টেল স্থাপন সহ মাদ্রাসাটি কামিলে উন্নীত করার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। এতে সকলের সহযোগিতা প্রয়োজন।