জগন্নাথপুরে আমনের বাম্পার ফলন কৃষকদের গোলায়

6

মো. শাহজাহান মিয়া, জগন্নাথপুর
সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুরে রোপা আমনের বাম্পার ফলন উঠেছে কৃষকদের গোলায়। এতে কৃষক-কৃষাণীর মুখে ফুটে উঠেছে আনন্দের হাসি। হাওরাঞ্চলের কৃষক পরিবারে রীতিমতো চলছে উৎসব। তবে ঘূর্ণিঝড় নিধিলির প্রভাবে কিছু ধানের ক্ষতি হয়েছে। ফলে আশারুপ ফলন পাননি অনেকে।
জানাগেছে, এবার আমন মৌসুমে অতীতের অনাবাদি জমিগুলো আবাদের আওতায় আনতে তৎকালীন জগন্নাথপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো.সাজেদুল ইসলাম ও উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ নানামুখি উদ্যোগ গ্রহণ করেন। লক্ষ্য বাস্তবায়নে মাঠে ঝাঁপিয়ে পড়েন জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ সহ অন্যান্য কর্মকর্তাগণ। নিয়মিত আবাদি জমির পাশাপাশি অনাবাদি জমি আবাদ করতে প্রান্তিক কৃষকদের উৎসাহিত করেন। সেই সাথে বিনামূল্যে সার-বীজ সহ কৃষি উপকরণ ও পরামর্শ দিয়ে সহায়তা করা হয়। সরকারি ভাবে কৃষি উপকরণ প্রদানের পাশাপাশি তৎকালীন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক দিদারে আলম মোহাম্মদ মাকসুদ চৌধুরীর নিজ উদ্যোগে জগন্নাথপুরে বিনামূল্যে কৃষি উপকরণ বিতরণ করা হয়। ফলশ্রæতিতে জগন্নাথপুরে এবার ৪৭ হেক্টর পতিত জমি আবাদের আওতায় আসে। এতে লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফলন উঠে কৃষকদের গোলায়।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানাগেছে, জগন্নাথপুরে এবার রোপা আমন আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৯ হাজার ৫৫৫ হেক্টর জমি। উপজেলা প্রশাসন ও উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরের প্রচেষ্টায় অতিরিক্ত আরো ৪৭ হেক্টর জমি আবাদ হয়। সরকারি ভাবে ফসল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২৫ হাজার ৮৩০ মেট্রিকটন ধান। তা ছাড়িয়ে প্রায় অধিক ফলন কৃষকদের গোলায় উঠেছে। এতে উপজেলা প্রশাসন ও কৃষি অধিদপ্তরের গৃহীত উদ্যোগ সফল ও সার্থক হয়েছে। সেই সাথে লাভবান হয়েছেন কৃষকেরা।
এ বিষয়ে ২১ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার আবদুর রহিম, আমিন উল্লাহ, রশিদ আলী, রমেশ বিশ্বাস সহ উপজেলার বিভিন্ন অঞ্চলের কৃষকদের মধ্যে অনেকে জানান, এবার কৃষি অফিসের পরামর্শে পতিত জমিতে ভালো ধান পেয়েছি। সাইদুল ইসলাম, কবির উদ্দিন, এনামুল হক সহ অন্য কৃষকেরা বলেন, জমিতে ভালো ধান হয়েছিল। তবে ঘূর্ণিঝড়ের কারণে তোড় ধান পড়ে গিয়ে জমিতে শুয়ে যাওয়ায় কিছুটা ক্ষতি হয়েছে। যেখানে কেদার প্রতি কমপক্ষে ১৫ মণ ধান পাওয়ার কথা থাকলেও পেয়েছি মাত্র ১০ থেকে ১১ মণ ধান। যাদের জমির ধান দাঁড়ানো ছিল, তারা ভালো ফলন পেয়েছেন।
জগন্নাথপুর উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কাওসার আহমেদ জানান, জগন্নাথপুরে এখন আমন ধান কর্তন শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আগামী কিছু দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জগন্নাথপুরে এবার আমন ও শাক-সবজি সহ ৯৫ হেক্টর অনাবদি জমি আবাদের আওতায় এসেছে। এর মধ্যে আমন রয়েছে ৪৭ হেক্টর জমি। তাই বেশি জমি আবাদ হওয়ায় লক্ষ্যমাত্রার অধিক ফলন কৃষকদের গোলায় উঠেছে। এতে সার্থক হয়েছে আমাদের শ্রম ও লাভবান হয়েছেন কৃষক ভাইয়েরা।