ব্যবসায়ীদের মানসিক পরিবর্তন দরকার

47

 

যে লক্ষ্য নিয়ে আলু, পেঁয়াজ ও ডিমের দাম নির্ধারণ করা হয়েছে তা অর্জন হয়নি। বাজার নিয়ন্ত্রণে নিয়মিত মাঠে কাজ করছে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর। সেই সঙ্গে ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের মাধ্যমে বেঁধে দেওয়া নির্ধারিত দাম কার্যকর করার চেষ্টা চলছে। ৬ অক্টোবর শুক্রবার বিকালে রংপুরে তিন দিনের সফরে এসে নগরীর লেকসিটি পার্ক বাসভবনে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি আরও বলেন, আমদানি বেড়েছে ফলে আমদানি ব্যয়ও বেড়েছে। এতে সমস্যার কিছু নেই। রপ্তানি আয় ১০ শতাংশ বেড়েছে। তবে গত মাসে রেমিট্যান্স কম এসেছে, একটু সমস্যা হয়েছে। এটা কাটিয়ে উঠবে। এখন পর্যন্ত সবকিছু স্বাভাবিক আছে। এটা সত্য, বাজারে বাড়তি দামে আলু, পেঁয়াজ ও ডিম বিক্রি হচ্ছে। সরকারের বেঁধে দেয়া দামকে ব্যবসায়ীরা তোয়াক্কা করছে না।
এটা স্বীকার করতেই হবে, বাজার সিন্ডিকেটের কাছে জিম্মি দেশের মানুষ। সিন্ডিকেট ভাঙতে না পারলে মানুষকে স্বস্তি দেওয়া সম্ভব নয়। নিত্যপণ্যের বাজারে রীতিমতো তাদেরই রাজত্ব চলছে। যার ফলে সরকার বেঁধে দেওয়া সত্তে¡ও নির্ধারিত দামে বিক্রি হয় না পণ্য। কোনোরকম মনিটরিং ও স্বচ্ছতা-জবাবদিহিতা না থাকায় চাল, ডাল, ডিম, পেঁয়াজ, রসুন, আলু, দুধ, চিনি, তরিতরকারি, মাছ, মাংসসহ সব ধরনের নিত্যপণ্যের বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। এক প্রতিবেদনে প্রকাশ, ১৫ দিনের ব্যবধানে অঞ্চল ভেদে ৮০ টাকার কাঁচা মরিচ বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩০০ টাকায়। ভোক্তা অধিকারের অভিযানের মুখেও আলু ও পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে না সরকার নির্ধারিত দামে। কখনো কখনো দোষী কিংবা দায়ী ব্যক্তিরা চিহ্নিত হলেও তাদের কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হয় না। বরং লঘু পাপে গুরু দন্ড দিয়ে লোক দেখানো শাস্তি দেওয়া হয়। আবার কখনো কখনো অসৎ ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে হুঁশিয়ারি দিয়েই দায়িত্ব শেষ করে। বাজার সিন্ডিকেট অবৈধ ও অযৌক্তিকভাবে দাম বাড়াতে মজুত গড়ে তুলছে। দেশি-বিদেশি সব ধরনের ফলেও বাজারে সিন্ডিকেটের দৌরাত্ম্য। বাজার করতে আসা ক্রেতার বক্তব্য হচ্ছে, বর্তমান সময়ে বাজারে এসে একদামে কোনো সবজি পাওয়া অনেক কষ্টকর। বাজারে যে সবজি আছে তার দাম সকালে এক রকম আবার বিকালে আরেক রকম। আবার এই বাজারে ৪০ টাকা হলে অন্য বাজার তা হয়তো ৪৫ অথবা ৩৫ টাকা। কেবল সবজি নয়, প্রায় সব পণ্যের ক্ষেত্রেই দোকান বা বাজার ভেদে তারতম্য রয়েছে। এ সব হচ্ছে বাজার সিন্ডিকেটের কারসাজি। এরা জনগণের স্বার্থের দিকে নজর দেয় না। এরা বাজারসন্ত্রাসী। কীভাবে অসৎ উপায় অবলম্বন করে দ্রম্নত ধনী হবে এটাই তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। ফলে তাদের কাছে দেশের অসহায় জনগণ জিম্মি হয়ে পড়ে। ক্ষেত্র বিশেষ সরকারও তাদের কাছে জিম্মি।
আমরা মনে করি, বিক্রেতাদের মানসিকতার পরিবর্তন যতদিন না ঘটবে ততদিন নিত্যপণ্যের বাজার অস্থির থাকবেই এবং দেশের জনগণও তাদের কাছে জিম্মি থাকবে।