বাবরুল হাসান বাবলু, তাহিরপুর থেকে
তাহিরপুর উপজেলার ৭ ইউনিয়নের আভ্যন্তরীন সড়কে উন্নয়নের তেমন ছোঁয়া লাগেনি গত ৫০ বছরে। বছরের অধিকাংশ সময় চলাচল অনুপযোগী কর্দমাক্ত ও ভাঙ্গাচোরা থাকে এ সড়কগুলো। তাই বছরের পর বছর গ্রীষ্ম-বর্ষা বা হেমন্তে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রাম, এক ইউনিয়ন থেকে অন্য ইউনিয়ন, ইউনিয়ন থেকে উপজেলা সদর কিংবা জেলা সদরের সাথে ভোগান্তি করেই যোগাযোগ করেন শতাধিক গ্রামের লক্ষাধিক জনগন। ৭ টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ভেতর কমপক্ষে ৫০ কিলোমিটার গ্রামীণ সংযোগ সড়ক রয়েছে। যে গুলো সামান্য পাকা করণ কিংবা মেরামত করলেই বারো মাস চলাচলের উপযোগী হয়। কিন্তু সড়ক গুলো বছরের পর বছর মেরামত না করায় চলাচল অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। ফলে এ সমস্ত সড়কে যাতায়াতকারী ভোক্তভোগী লোকজন গ্রামীণ সড়কগুলো পাকা করনে সংশ্লিষ্ঠ উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট সু দৃষ্টি কামনা ও জরুরী প্রতিকার চেয়ছেন। সরজমিন উপজেলার ট্যাকেরঘাট বীরেন্দ্র নগর সড়কে গিয়ে দেখা যায়, লাকমা গ্রামের পশ্চিম থেকে বীরেন্দ্র নগর পর্যন্ত দীর্ঘ ৭ কিলোমিটার সড়কের মধ্যে অধিকাংশ সড়কই খানাকন্দ। অনেক স্থানে মাত্রাতিরিক্ত কাদা থাকার কারণে বাইক চলাচলের অনুপযোগী। কখনো বাইক তেকে নেমে কাদা স্থান দুজনে বাইক ঠেলে পারাপার করতে হচ্ছে। কখনো চালক একা কোন রকম বাইক নিয়ে পথ পাড়ি দিচ্ছেন। আর প্রিিতদিন এ পথে যাতায়াতকারী লোকজন পড়ছেন নান ভোগান্তীতে। শুধু এ পথই নয় উপজেলার আ্যভন্তরীন সবগুলো সড়কেরই বর্তমানে এ অবস্থা।
কানাখন্দে বেহাল সড়কগুলো হলো উপজেলার শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়নের লালঘাট গ্রামের পূর্ব দিক চারার মুখ হতে বীরেন্দ্র নগর বাঙ্গালভিটা পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার, নতুন বাজার থেকে কাউকান্দি বাজার পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, বড়দল উত্তর ইউনিয়নে কাশতাল বিকি বিলের দক্ষিন পার থেকে বোরখারা রামেশ^রপুর গ্রাম পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, একই ইউনিয়নের ইউনিয়ন পরিষদ ভবন থেকে শান্তিপুর বাজার, পুরানঘাট গ্রাম ও জনতা বাজার পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার, মাহরাম নদীর উত্তরপার থেকে কড়ইগড়া পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, মাহরাম নদী থেকে পার থেকে বারেকটিলা নীচ যাদুকাটা নৌকাঘাট পর্যন্তÍ ২ কিলোমিটার, তাহিরপুর সদর ইউনিয়নের চিকসা দক্ষিন হাটি গ্রামের মসজিদ থেকে চিকসা সীমানা গ্রাম পর্যন্ত ২কিলোমিটার, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হতে লক্ষীপুর ভাটিজামালগড় পর্যন্ত ৩ কিলোমিটার, বালিজুরি ইউনিয়নের আনোয়ারপুর বাজার থেকে দক্ষিনকুল উচ্চ বিদ্যালয় পর্যন্ত ২ কিলোমিটার, একই স্থান থেকে ফাজিলপুর ফেরি ঘাট পর্যন্ত ২ কিলোমিটার সহ উপজেলায় আরো একাদিক অভ্যন্তরীন সংযোগ সড়ক রয়েছে যা সামান্য মাটি কেটে পাকা করণ করলেই সারা বছর চলাচলের উপযোগী হয়। কিন্তু দেখা যাচ্ছে বছরের পর বছর এ সড়কগুলোর মধ্যে দু চারটিতে সামন্য মাটি ভরাটের কাজ করলেও অধিকাংশ সড়কগুলোতে কোন প্রকার কাজ না করার কারণে সড়ক পথগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যাচ্ছে।
উপজেলার বড়দল উত্তর ইউনিয়নের পুরাণঘাট গ্রামের দলিল লিখক জসীম উদ্দিন, পুরানখালাস গ্রামের সমাজসেবক রাখাব উদ্দিন ও ইউনিয়নের ৩ নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জিল্লু মিয়া, সহ আরো একাধিক লোকজন জানান, বড়দল উত্তর ইউনিয়নে বিভিন্ন গ্রামের সাথে কমপক্ষে ১৫ কিলোমিটার সংযোগ সড়ক রয়েছে। যে গুলো সামন্য কাজ করলেই বারো মাস চলাচলের উপযোগী হবে বলে তারা জানান। শ্রীপুর উত্তর ইউনিয়ন কলাগাও গ্রামের চান মিয়া সওদাগর, আনোার হোসেন, সহ একাধিক ভোক্তভোগী লোকজন জানান, হেমন্ত কালে কষ্ঠ কওে কোন রকম ট্যাকেরঘাট বীরেন্দ্র নগর সড়কে লোকজন যাতায়াত করে। কিন্তু বর্ষকালে এ পথ দিয়ে বাইক নিয়ে একবার কেউ আসলে দ্বিতীয়বার আর কেউ আসতে রাজি হবে না। শতাধিক গ্রামের ভোক্তভোগী লোকজনদেও দাবী স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সহ সংশ্লিষ্ট লোকজন একটু উদ্যোগ নিলেই তাহিরপুরের আ্যভন্তরীণ সড়কগুলো সংস্কার হয়ে যায়। কিন্তু কারো এ ব্যাপারে কোন পদক্ষেপ নেই।
তাহিরপুর সদর ইউনিয় পরিষদ চেয়ারম্যান জুনাব আলী ও বালিজুরী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আল্বহাজ আজাদ হোসেন বলেন, ইতি মধ্যে আমরা কিছু আভ্যন্তরীণ সড়কে মাঠি ভরাটের কাজ শেষ করেছি। আগামী বছরগুলোতে আভ্যন্তরীণ সড়কগুলো পাকা করণ করে চলাচল উপযোগী কওে দেয়ার চেষ্ঠা অব্যাহত রাখবো।
এ বিষয়ে তাহিরপুর উপজেলা প্রকৌশলী (এলজিইডি) আরিফ উল্লাহ খান বলেন, উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের আভ্যন্তরীন সড়ক পাকা করণে বেশ কয়েকটি প্রকল্প অনুমোদনের জন্য আমার উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ বরাবর পাঠিয়েছি।