কাজির বাজার ডেস্ক
চলতি বছরের ১ জানুয়ারি থেকে ২০ জুলাই পর্যন্ত তিউনিশিয়ার উপক‚লে অভিবাসীবোঝাই নৌকাডুবির ঘটনায় ৯০১ জন অভিবাসনপ্রত্যাশীর মরদেহ উদ্ধার করেছে দেশটির উপক‚লরক্ষীরা। দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কামাল ফেকি বুধবার দেশটির পার্লামেন্টে এ তথ্য জানিয়েছেন। এর আগে দেশটি উপক‚লে এত মৃত্যু দেখেনি বলেও মন্তব্য করেন তিনি। অর্থনৈতিকভাবে বিপর্যস্ত উত্তর আফ্রিকার এই দেশটিতে অভিবাসন সংকট দিন দিন তীব্রতর হচ্ছে। ক্ষুধা, দারিদ্র্য আর সংঘাত ছেড়ে উন্নত জীবনের আশায় ভ‚মধ্যসাগর পাড়ি দিয়ে ইউরোপে পৌঁছতে চান সাব সাহারা আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের অসংখ্য নাগরিক। তাদের সবাই এখন ভিড় করছেন তিউনিশিয়ায়। আগে আফ্রিকার আরেক উপক‚লীয় দেশ লিবিয়া ছিল অভিবাসনপ্রত্যাশীদের ট্রানজিট পয়েন্ট। কিন্তু তিউনিশিয়ার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর স্ফ্যাক্স উপক‚ল থেকে ইতিলির দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপ লাম্পেদুসার দূরত্ব মাত্র ১৫০ কিলোমিটার। ফলে চলতি বছর লিবিয়াকে এড়িয়ে তিউনিশিয়ার উপক‚লকে বেছে নিয়েছেন অভিবাসনপ্রত্যাশীরা। কিন্তু সমুদ্র অনুপযোগী নৌকা নিয়ে ভ‚মধ্যসাগর পাড়ি দিতে গিয়ে প্রায়ই নৌকাডুবির খবর এসেছে। তিউনিশিয়ার পার্লামেন্টে দেওয়া বক্তব্যে দেশটির স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ফেকি বলেন, ৯০১টি মরদেহের মধ্যে ৩৬টি তিউনিশ এবং ২৬৭টি বিদেশি নাগরিকদের। অবশিষ্ট মরদেহগুলোর পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
যারা সমুদ্রে ডুবে মারা গেছেন, তাদের বহনকারী বেশির ভাগ নৌকা স্ফ্যাক্স উপক‚ল থেকে ছেড়ে গেছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী। এদিকে ইতিলির সরকারি পরিসংখ্যান অনুযায়ী, এ বছরের ১৪ জুলাই পর্যন্ত ৭৫ হাজার ৬৫ অভিবাসী নৌকা নিয়ে দেশটিতে পৌঁছেছেন। গেল বছর একই সময়ে এই সংখ্যাটি ছিল ৩১ হাজার ৯২০। চলতি বছর ইতালিতে পৌঁছনো অনিয়মিত অভিবাসীদের অর্ধেকেরও বেশি তিউনিশিয়ার উপক‚ল হয়ে গেছেন। অভিবাসনপ্রবাহকে নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবে চলতি মাসেই তিউনিশিয়ার সঙ্গে ‘কৌশলগত অংশীদারত্ব চুক্তি’ করেছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।
এর মধ্যে রয়েছে মানবপাচারকারীদের দৌরাত্ম্য নিয়ন্ত্রণ, ইউরোপের উদ্দেশে ছেড়ে যাওয়া নৌকাগুলো ঠেকাতে নজরদারি বাড়ানো ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া। মোট কথা, অনিয়মিত অভিবাসন নিয়ন্ত্রণের অংশ হিসেবেই বিপর্যস্ত তিউনিশিয়াকে অর্থ সহায়তা দিচ্ছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন।