স্টাফ রিপোর্টার
কোরবানির ঈদের আর মাত্র ৫দিন বাকি। এরই মধ্যে সিলেট নগরীর ঐতিহ্যবাহী কাজির বাজার পশুর হাট জমে উঠতে শুরু করেছে। গতকাল শুক্রবার হাটবার থাকায় এবং ঈদের আগে এটি শেষ শুক্রবার হওয়ার কারনে হাটে ক্রেতা-বিক্রেতাদের ভীড় ছিলো লক্ষণীয়। তবে গতকাল যারা হাটে এসেছিলেন তাদের মধ্যে কিনেছেন খুব কম সংখ্যক মানুষ। বেশীর ভাগেরই উদ্দেশ্যে ছিলো দাম যাচাই-বাছাই করা। তবে প্রতিবারের মতো এবারও ক্রেতাদের অনেকেরই বক্তব্য দাম অন্যবারের চাইতে একটু বেশী। ঈদকে সামনে রেখে সিলেট বিভাগের চার জেলাসহ দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চল থেকে শত শত বেপারী আসেন এই বাজারে। এবারও আসতে শুরু করেছেন। ঈদের দু’একদিন আগে পুরো বাজারই ক্রেতা-বিক্রেতার উপস্থিতিতে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে এমনটাই আশা সকলের।
এদিকে, প্রতিবারের মতো এবারও ঐতিহ্যবাহী এ হাটকে সুষ্ঠু ও সুশৃঙ্খলভাবে পরিচালনার জন্য হাট কর্তৃপক্ষ ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। এরই মধ্যে নিজস্ব স্বেচ্ছাসেবকের পাশাপাশি পর্যাপ্ত আলো ও পয়:নিস্কাশনের ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। হাটের সামনের প্রধান সড়ক যানজটমুক্ত রাখার জন্য কাজ করছেন স্বেচ্ছাসেবকরা।
সরেজমিনে গতকাল হাট ঘুরে দেখা গেছে, প্রচুর সংখ্যক দেশীয় জাতের গরু ও ছাগল হাটে উঠেছে। ক্রেতা-বিক্রেতা দর-দাম করছেন। দরদামে মিলে গেলে কেউ কেউ কোরবানির পশুটি কিনে হাসি মুখে বাড়ি ফিরছেন।
অপরদিকে, হাটে বিশাল আকারের কালো মহারাজা ও সাদা-কালো ট্রানেলকে দেখতে মানুষের ভিড় লক্ষ্য করা গেছে। কোরবানির বাজারে ৪২ মণ ওজনের ষাঁড় ‘কালো মহারাজা’ ও ৩৫ মন ওজনের ‘সাদা-কালো ট্রানেল’ ফ্রিজিয়ান জাতের বিশাল আকৃতির গরু দুইটি লালন-পালন করেছেন দিনাজপুর জেলার চিরিরবন্দর এলাকার সাব্বির এন্ড সাইম ডেইরি ফার্মের মালিক মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল (আপেল)। তিনি কালো মহারাজার দাম হাঁকছেন ২৫ লাখ টাকা ও ট্রানেলের দাম ১৫ লাখ টাকা। তাঁর খামারে গরু দুইটি দেখতে শুক্রবার ভিড় করছেন শত শত উৎসুক মানুষ। ৪২ মন ওজনের কালো মহারাজার লম্বা প্রায় ১২ ফুট ও উচ্চতা ৬ ফুটের শান্ত স্বভাবের ৬ বছর বয়সী এবং ৩৫ মন ওজনের সাড়ে ৩ বছরের ট্রানেলের দৈর্ঘ্য প্রায় সাড়ে ১০ ফুট ও উচ্চতা সাড়ে ৫ ফুট ষাঁড় দুইটিতে মুগ্ধ সবাই। গরু দুইটিকে তাজা ঘাস, খড়, গম, ভুসি, খৈলসহ প্রাকৃতিক খাবার খাওয়ানো হয়। মোঃ আবু হেনা মোস্তফা কামাল (আপেল) জানান, কালো মহারাজা তাঁদের খামারের সবচেয়ে বড় আদরের গরু। মহারাজার জন্য ২৫ লাখ ও ট্রানেলের জন্য ১৫ লাখ টাকা দাম চাওয়া হচ্ছে। তবে শুক্রবার সিলেটের এক ব্যবসায়ী গরু দুইটি কিনে নেওয়ার জন্য ১৫ লাখ টাকা বলেছেন। তবে সঠিক দাম পেলে তিনি গরু দুইটি বিক্রি করে দেবেন।
এত বড় বড় গরু ঢাকায় না নিয়ে সিলেটে কেন নিয়ে আসলেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, ঢাকায় সব গরু একইস্থানে রাখা হয়। ফলে দাম কম পাওয়া যায়। এছাড়া ঐ স্থানে সিন্ডিকেট বেশী। যার কারনে গরুগুলো বিক্রি করতে দেয় না দালালরা। তিনি আরো বলেন, সিলেট প্রবাসী অধ্যুষিত হওয়ায় গরুগুলো সিলেটের ঐতিহ্যবাহী পশুর হাট কাজির বাজারে নিয়ে আসা হয়েছে দাম বেশী পাওয়ার জন্য।