শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি (সিএসই) বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ফরহাদ রাব্বী বলেছেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের ফসল আগামীর স্মার্ট বাংলাদেশ। টেকসই উন্নয়নের দিকে ক্রমশ ধাবিত হওয়া বাংলাদেশে জ্ঞানভিত্তিক দক্ষতার চেয়ে দক্ষতাভিত্তিক জ্ঞানের এখন বড় প্রয়োজন। তিনি বলেন, বর্তমান সময়ে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তিগুলো ব্যবসা, অর্থনীতি, সুশাসন, বিদ্যুৎ, ভ‚মি ব্যবস্থাপনা সহ বিভিন্ন সেক্টরে ব্যাপক পরিবর্তন নিয়ে এসেছে।
ফরহাদ রাব্বী রবিবার সকালে সরকারের তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অধীনস্থ প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল, সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয় কর্তৃক আয়োজিত চৎবঢ়ধৎরহম ভড়ৎ ঃযব ঋঁঃঁৎব:ঊংংবহঃরধষ ংশরষষং ভড়ৎ ঃযব ৪ওজ শীর্ষক সেমিনারে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপনকালে এসব কথা বলেন।
বিসিসি’র আঞ্চলিক পরিচালক মো. আব্দুল হান্নান চৌধুরীর সভাপতিত্বে উক্ত সেমিনারে আলোচক-১ হিসেবে বক্তব্য রাখেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার সাইন্স এন্ড টেকনোলজি(সিএসই) বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ আল মুমিন, আলোচক-২ হিসেবে বক্তব্য রাখেন, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের আইআইসিটি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. আহসান হাবীব। মাল্টিমিডিয়া প্রেজেন্টেশনের মাধ্যমে মুল প্রবন্ধে উপস্থাপক অধ্যাপক ফরহাদ রাব্বী বলেন, একটি টেকনোলজি যখন আসে, তখন এর মাধ্যমে নতুন নতুন জিনিস উদ্ভাবন হয় এবং বিশাল পরিবর্তন সাধিত হয়। যেমন প্রথম শিল্প বিপ্লব ঘটেছে স্টীম ইঞ্জিন আবিষ্কারের ফলে। সেসময়ে বাষ্পীয় ইঞ্জিন বা স্টীম ইঞ্জিন যোগাযোগ ব্যবস্থার ব্যাপক পরিবর্তন এনেছিল। তিনি বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এপ্লিকেশনগুলোর মধ্যে আছে এআই(আর্টিফিসিয়াল ইনটিলিজেন্স), আইওটি(ইন্টারনেট অফ থিং), ভিআর(ভার্চুয়াল রিয়েলিটি), বøক চেইন, বিগ ডাটা ইত্যাদি। এর মধ্যে ড্রাইভিং এর জায়গায় আছে এআই(কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা)। তিনি বলেন, আর্টিফিসিয়েল ইনটিলিজেন্স, ড্রোন, রোবটিক্স, সাইবার সিকিউরিটি সবকিছুই ৪ওজ এর প্রযুক্তির অ??ংশ। এগুলোর কারণে অনেক কিছু সহজ হয়ে উঠেছে। পরিবর্তন হচ্ছে ব্যাপক। এমন কোন ইন্ডাস্ট্রি নেই যেখানে ৪ওজ এর টেকনোলজি ব্যবহৃত হচ্ছে না। তিনি ই-কমার্সের প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ইথিওপিয়ায় কফি সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের পণ্য ক্রয় করলে কোন কৃষক কোন পণ্য তৈরি করছে তা তাদের প্রযুক্তির মাধ্যমে জানা যায়।
ফরহাদ রাব্বী বলেন, সরকার স্মার্ট বাংলাদেশের চমৎকার ধারণা গ্রহণ করেছে। এর আলোকে শিক্ষাক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়গুলো চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তির আলোকে সিলেবাস ও কারিকুলাম তৈরী করছে। স্কুল কলেজের পাঠ্যসূচীতেও তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয় অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে। যেটা শিখে বাস্তবে কাজে লাগে সেটিই গ্রহণ করা হচ্ছে। অর্থাৎ আউটকাম বেইজড কারিকুলাম হচ্ছে। তবে শুধু একাডেমিক ফ্রেম ওয়ার্ক নয় এগুলোকে অর্গানাইজেশনাল ফ্রেম ওয়ার্কেও নিয়ে আসতে হবে। পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের জন্য প্রয়োজনীয় বাজেটেরও প্রয়োজন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের এসময়ে বাংলাদেশ ১০টির মতো প্রতিশ্রæতিশীল উদ্যোগও হাতে নিয়েছে।
বিসিসি’র সিলেট আঞ্চলিক কার্যালয়ের সিস্টেম ম্যানাজার গোলাম রাব্বানীর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সেমিনারে মুক্ত আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, লিডিং ইউনিভার্সিটির প্রফেসর ড. শামসাদ কিবরিয়া, সিলেট সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজের সহকারি অধ্যাপক দিদার চৌধুরী, সিলেট অনলাইন প্রেসক্লাবের সভাপতি মুহিত চৌধুরী, বিটিসিএল এর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার মিহির কর, মনিরুজ্জামান প্রমুখ।
সভাপতির বক্তব্যে আব্দুল হান্নান চৌধুরী বলেন, দক্ষতার আপডেট করতে হবে। এর বিকল্প নেই। আমরা শিল্প বিপ্লব অনেক শুনেছি। প্রথম, দ্বিতীয়, তৃতীয় পাইনি, চতুর্থ শিল্প বিপ্লব শেষ পর্যায়ে। মানুষ ৫ম শিল্প বিপ্লবের কথা বলছে। আমরা অনেক পিছিয়ে। ইউরোপ আমেরিকা যখন ফল ভোগ করতে শুরু করে তখন আমরা কাজে নামি। তাই আমাদের এ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করতে হবে। তিনি জানান, বিসিসি সিলেটে শীঘ্রই ঝঞ বীধস ংুংঃবস চালু করবে। এটি জাপান থেকে নিয়ে আসা হয়েছে। এখানে বিভিন্ন লেভেলে কাজ হয়। ইউজিসি এ ব্যাপারে ইউনিভার্সিটিগুলোকে ইতোমধ্যে চিঠিও দিয়েছে। বিজ্ঞপ্তি