কাজির বাজার ডেস্ক
জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গনসহ দেশের সব আদালত চত্বরকে ‘সংরক্ষিত’ বা ‘বিশেষ’ এলাকা ঘোষণা করতে প্রধান বিচারপতিসহ সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এস এম মন্ডল সোমবার রেজিস্ট্রি ডাকে আবেদনটি পাঠিয়েছেন। প্রধান বিচারপতি ছাড়াও আইন সচিব, পরিবেশ সচিব, সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার, সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক ও বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা)’র দপ্তরেও এ আবেদন পাঠানো হয়েছে।
এক আইনজীবী বলেন, সুপ্রিম কোর্টসহ দেশের প্রায় সব আদালতই পুরনো ভবনে স্থাপিত। লোক চক্ষুর অন্তরালে এসব পুরনো ভবনগুলোতে চড়ুই পাখিসহ বিভিন্ন পাখ-পাখালি, প্রাণীর বাস। তাছাড়া প্রায় সব আদালত চত্বরে বট-অশ্বথ গাছ ছাড়াও বিভিন্ন ফলদ গাছ গাছ-গাছালি রয়েছে। ঋতু চক্রে বছরের বেশির ভাগ সময় ফুলে-ফলে ভরে ওঠে এসব গাছ। ফুল-ফলের মৌসুম ছাড়াও এসব গাছে সারা বছরই শালিক, ময়না, টিয়া, বুলবুলিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখ-পাখালির আনাগোনা থাকেই। তাছাড়া শহরের অন্য এলাকার চাইতে গাছ-গাছালি, ঝোপ-ঝাড় বেশি থাকায় কাঠবিড়ালি, বেজি, বানর, গুইসাঁপ এমনকি শেয়ালও বাস করে আদালত চত্বরে। দশকের পর দশক ধরে প্রত্যেকটা আদালত চত্বরে এক অপূর্ব নিরাপদ জীববৈচিত্র্য গড়ে উঠেছে। সে বিবেচনায় দেশের সব আদালত চত্বরকে সংরক্ষিত বা বিশেষ এলাকা ঘোষণা করা জরুরি। যে কারণে এ আবেদন করেছি।
আবেদনে বলা হয়েছে, পরিবেশবিষয়ক বিদ্যমান আইনগুলো কার্যকর করতে বিভিন্ন সময় আদালত বিভিন্ন আদেশ, রায়, নির্দেশনা দিয়েছেন। জীববৈচিত্র্যের খাদ্যচক্র নিশ্চিত করা আমাদের বিচার সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানেরও দায়বদ্ধতা আছে। আদালত চত্বরে বেড়ে ওঠা জীববৈচিত্র্য যাতে অযাচিত হুমকির মুখে না পড়ে তার জন্য যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া জরুরি। ফলে জীববৈচিত্র্য রক্ষণাবেক্ষণে আদালত চত্ত¡র কে ‘সংরক্ষিত’ বা ‘বিশেষ’ এলাকা ঘোষণা করা জরুরি হয়ে পড়েছে।’
আবেদনে আরো বলা হয়েছে, ‘‘জাতীয় পরিবেশ নীতি-২০১৮’ এর উদ্দেশ্য পূরণকল্পে- প্রজাতিগত ও প্রতিবেশ বৈচিত্র সংরক্ষণে আমাদের কার্যকর পদক্ষপ গ্রহণ করা উচিত। জীববৈচিত্র্যের ঝুঁকি মোকাবেলায় কার্যকর জীবনিরাপত্তা নিশ্চিত করতে আদালত চত্ত¡রে সতর্কতামূলক নীতি গ্রহন আবশ্যক। ‘বাংলাদেশ জীববৈচিত্র্য আইন-২০১৭’ এর ধারা- ৩২ অনুযায়ী দেশের সব আদালত চত্বরকে ‘জীববৈচিত্র্য সমৃদ্ধ ঐতিহ্য’ হিসেবে ঘোষণা করার দাবি রাখে।