ওসমানীনগর থেকে সংবাদদাতা :
ওসমানীনগরের পাঠুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন বিদ্যালয়ের দপ্তরি আখতার হোসেন। এ নিয়ে অভিভাবকদের মধ্যে চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে। বিষয়টি জানাজানি হলে বুধবার সকালে ম্যানেজিং কমিটির সভায় দপ্তরি আখতার হোসেন শিক্ষার্থীদের মোবাইলে আসা উপবৃত্তির টাকা নেয়ার কথা স্বীকার করে ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দেন। এ সময় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমানের নির্দেশে শিক্ষার্থীদের উপবৃত্তির টাকা হাতিয়েছেন বলে দাবি করেন ওই দপ্তরি। তবে এই অভিযোগ অস্বীকার করেছেন পাঠুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক।
জানা যায়, উপজেলার গোয়ালাবাজার পাঠুলিপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ১০৯ জন উপবৃত্তিধারী শিক্ষার্থীর ২০২০ সালের (জুলাই-ডিসেম্বর) ৬ মাসের টাকা অভিভাবকদের মোবাইল একাউন্ট নগদে এসে জমা হয়। তার মধ্যে শিশু শ্রেণির শিক্ষার্থীর জন্য ৪শ’ ৫০ এবং প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত ৯’শ টাকা হারে বৃত্তি পায় শিক্ষার্থীরা। নগদ একাউন্টে টাকা জমার পরপর বিদ্যালয়ে কর্মরত দপ্তরি স্থানীয় আখতার হোসেন শিক্ষার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে অভিভাবকদের অজ্ঞতার সুযোগে মোবাইল নিয়ে নগদ একাউন্ট থেকে উপবৃত্তির টাকাগুলো নিজ একাউন্টে নিয়ে নেন। পরে কাউকে অর্ধেক আবার কাউকে না দিয়েই কয়েক হাজার টাকা আত্মসাৎ করেন। বিষয়টি জানাজানি হলে অভিভাবকদের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয় এবং বুধবার বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় একাধিক অভিবাবক উপস্থিত হয়ে দপ্তরির দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করেন।
বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণির শিক্ষার্থী নাহিবুল ইসলাম নাবিদ এর মা সজনা বেগম বলেন, আখতার বাড়িতে এসে আমার মোবাইলের নগদ একাউন্ট চেক করে বলেন কোন টাকা আসেনি। গতবছরও তিনি মোবাইল দেখে বলেছিলেন টাকা আসেনি। অথচ, উপবৃক্তির সীটে আমার ছেলের নাম রয়েছে।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত দপ্তরি আখতার হোসেনের সাথে মুঠোফোনে কথা হলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুর রহমান বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে আখতারের এই অপকর্মের ব্যাপারে অবগত হই এবং ওইদিন রাতে সে আমার বাড়িতে এসে দোষ স্বীকার করে কান্নাকাটি করে। বুধবার সকালে বিষয়টি নিয়ে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভায় শতাধিক অভিভাবক আখতারের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন। কিন্তু উপস্থিত সময়ে আখতার নিজের অপকর্ম ঢাকতে আমাকে জড়ানোর চেষ্টা করে। যা আমার জন্য হতাশাজনক।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শরিফ মো. নেয়ামত উল্ল্যা বলেন, কয়েকজন অভিভাবকের কাছ থেকে বিষয়টি জেনেছি তবে কেউ এখনো লিখিত অভিযোগ দেয়নি। ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকও আমাকে এই বিষয়ে কিছু জানান নি। খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।