কাজির বাজার ডেস্ক
বিশ্বব্যাপী বাল্যবিবাহের সংখ্যা কমলেও এটি পুরোপুরি নির্মূল হতে আরও ৩০০ বছর লাগবে বলে জানিয়েছে জাতিসংঘের শিশু সংস্থা ইউনিসেফ। নতুন এক প্রতিবেদনে ইউনিসেফ এ তথ্য জানিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যম দ্য গার্ডিয়ান।
ইউনিসেফ বলেছে, বাল্যবিবাহের হার হ্রাস পেয়েছে। এটি সাধুবাদ পাওয়ার মতো একটি ব্যাপার। কিন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে বিশ্বকে বাল্যবিবাহমুক্ত করার যে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, সেটি পূরণের ধারেকাছে বিশ্ব নেই। ইউনিসেফের প্রতিবেদনের প্রধান লেখক ক্লডিয়া ক্যাপা বলেন, ‘গত ১০ বছরে বাল্যবিবাহের হার ২৩ শতাংশ থেকে কমে ১৯ শতাংশে নেমে এসেছে। কিন্তু ২০৩০ সালের মধ্যে বাল্যবিবাহ নির্মূল করার লক্ষ্য পূরণের জন্য এই অর্জন যথেষ্ট নয়। এখনো প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখেরও বেশি মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে, যাদের বয়স ১৮ বছরের কম। যদি এই পরিস্থিতির পরিবর্তন না হয়, তবে বাল্যবিবাহ সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে আরও অন্তত ৩০০ বছর সময় লাগবে।’ জাতিসংঘ অনুমান করছে, ১৮ বছরের কম বয়সী জীবিত ৪৬ কোটি মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হয়েছে এবং প্রতিবছর ১ কোটি ২০ লাখ মেয়ে বাল্যবিবাহের শিকার হচ্ছে। ক্লডিয়া ক্যাপা বলেন, ‘বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় বিভিন্ন কারণে বাল্যবিবাহ হয়। কিন্তু বেশির ভাগ ক্ষেত্রে দারিদ্র্য ও মেয়েদের সীমিত সুযোগের কারণে বাল্যবিবাহ ঘটছে। এ ছাড়া লিঙ্গবৈষম্য, দুর্বল আইন, বিবাহবহিভর্‚ত গর্ভধারণের ভয় ইত্যাদি কারণও বাল্যবিবাহের পেছনে দায়ী।’ দ্য গার্ডিয়ানের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে বাল্যবিবাহ ক্রমশ হ্রাস পাচ্ছে। বিশ্বের এ অঞ্চলে অন্তত ৪৫ শতাংশ কম বয়সী মেয়ে রয়েছে। বিশেষ করে ভারতে বাল্যবিবাহ হ্রাস পাওয়ার ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। কিন্তু আফ্রিকা অঞ্চলের দেশগুলোতে এখনো প্রতি তিনজনের মধ্যে একজনের বাল্যবিবাহ হচ্ছে। আফ্রিকার ১০টি দেশের মধ্যে ৭টিতেই বাল্যবিবাহের হার সর্বোচ্চ।
ক্লডিয়া ক্যাপা বলেন, ‘গত ২৫ বছরে বাল্যবিবাহ কমার ক্ষেত্রে বেশ অগ্রগতি হয়েছে। আর এতে শুধু ধনীরাই উপকৃত হয়েছে। দরিদ্রদের মধ্যে বরং বাল্যবিবাহ বেড়েছে। জাতিগত সংঘাত, জলবায়ুর সংকট, করোনা মহামারি, জনসংখ্যা বৃদ্ধির ঊর্ধ্বগতিসহ নানা সমস্যায় জর্জরিত আফ্রিকায় বাল্যবিবাহের হার ক্রমশ বাড়ছে।’
তবে আফ্রিকার দেশগুলোতে বাল্যবিবাহ কমানো সম্ভব বলেও মন্তব্য করেছেন ক্যাপা। তিনি বলেন, ‘অর্থ উপার্জন ও অর্থনৈতিক সক্ষমতা বাড়িয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করা সম্ভব। উদাহরণ হিসেবে আমরা রুয়ান্ডা ও ইথিওপিয়ার নাম উল্লেখ করতে পারি।’