সুনামগঞ্জ থেকে সংবাদদাতা :
‘টাঙ্গুয়ার হাওরে মাছ, গাছ, পাখিসহ জীববৈচিত্র্য ফিরিয়ে আন’ এই শ্লোগান কে সামনে রেখে সুনামগঞ্জের টাঙ্গুয়ার হাওরের জীববৈচিত্র্য ও পরিবেশ সুরক্ষার দাবিতে মানববন্ধন করেছে হাওর বাঁচাও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটি। সোমবার সকাল ১১টায় শহরের আলফাত উদ্দিন স্কয়ার (ট্রাফিক পয়েন্টে) এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। ঘন্টাব্যাপী এ মানববন্ধনে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার লোকজন অংশগ্রহণ করেন।
হাওর বাচাঁও আন্দোলন সুনামগঞ্জ জেলা কমিটির নবনির্বাচিত সভাপতি ইয়াকুব বখত বহলুলের সভাপতিত্বে ও কমিটির সাধারন সম্পাদক ওবায়দুল হক মিলনের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন হাওর বাঁচাও আন্দোলন কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আবু সুফিয়ান।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক বিজন সেন রায়, যুগ্ম সম্পাদক সালেহীন চৌধুরী শুভ, সাংগঠনিক সম্পাদক একে কুদরত পাশা, জেলা কমিটির সহ সভাপতি আলী হায়দার, রাধিকা রঞ্জন তালুকদার, তাহিরপুর উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব হোসাইন শরীফ বিপ্লব, সদস্য মানব তালুকদার, ফারুক আহমদ, এম আর শামীম, মিজানুর রহমান, শান্তিগঞ্জ উপজেলা কমিটির আবু সাইয়িদ প্রমুখ।
এ সময় বক্তারা বলেন, এশিয়া মহাদেশের মধ্যে বিখ্যাত সুনামগঞ্জের ধর্মপাশা ও তাহিরপুর উপজেলা অবস্থিত একশত বর্গমাইল এলাকাজুড়ে এই টাঙ্গুয়ার হাওরের অবস্থান। টাঙ্গুয়ার হাওর অত্যন্ত জীববৈচিত্র্য সম্পন্ন একটি হাওর।
টাঙ্গুয়ার হাওরকে ১৯৯৯ সালে সংকটাপন্ন এলাকা হিসেবে ঘোষণাও করা হয় এবং পরবর্তীতে ২০০০ সালে ৩০ জানুয়ারী সেটাকে রামসার সাইট ঘোষণা করা হয়। পরে ২০০১ সালে বাংলাদেশ সরকার ও সুইজারল্যান্ড সরকার কর্তৃক টাঙ্গুয়ার হাওর রক্ষণাবেক্ষণ করতে একটি সমঝোতা স্মারক চুক্তিপত্র স্বাক্ষরিত হয়। সেই চুক্তির আলোকে ২০০৩ সালের ৯ নভেম্বর এই হাওরের রক্ষণাবেক্ষণে সুইজারল্যান্ড সরকারের চুক্তি অনুযায়ী দায়িত্ব নেয় সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসন। গত ১৭ বছর ধরে এই টাঙ্গুয়ার হাওরকে জেলা প্রশাসক কর্তৃক রক্ষণাবেক্ষণ করে আসলেও সিএনআরএস কর্তৃক এই টাঙ্গুয়ার হাওরের রক্ষণাবেক্ষণে তদারকি করলেও এই এনজিওরা লাভবান হয়েছে ঠিকই কিন্তু ধবংস করে দিয়েছে এই হাওরটিকে। এই হাওরে মাছের যে অভয়াশ্রম গড়ে তোলার কথা সেখানে অব্যবস্থাপনার কারণে হাওরের তলদেশে পলিথিনসহ নানান বিষাক্ত দ্রব্যাদি অবাধে পেলে দেয়ার কারণে মৎস্য নিধন হিজল করচ গাছ অবাধে কেটে নেওয়া এবং এখানে একজন ম্যাজিস্ট্রেট এর নেতৃত্বে পুলিশ ও আনসার সদস্যরা থাকার পরও রাতের আঁধারে কিভাবে পাখি শিকারীরা পাখি শিকার করে নিয়ে যাচ্ছে ও মৎস্যজীবীরা কিভাবে মৎস্য নিধন করে দেশীয় প্রজাতির মাছের রাজা সেই বিখ্যাত টাঙ্গুয়ার হাওরে আজ মাছ শূন্য, এই শীতের মৌসুমে ও অতিথি পাখির দেখা মিলছে না। অবিলম্বে এই এনজিওদেরর রক্ষণাবেক্ষণের সময়কালে যদি কোন নিয়ম আর দুর্নীতি হয়ে থাকে তার শ্বেতপত্র জনসম্মুখে প্রকাশের জন্য সরকারের নিকট দাবী জানান। অন্যথায় এই হাওর জীববৈচিত্র্য রক্ষার জন্য আগামীতে আরো কঠোর কর্মসূচী ঘোষণার দাবী জানান নেতৃবৃন্দরা।