ডিজিটাল থেকে স্মার্ট বাংলাদেশ

17

২০০৮ সালের ১২ ডিসেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘ডিজিটাল বাংলাদেশ’ ঘোষণা করেছিলেন। জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশকে আরো এগিয়ে নিতে এর রোডম্যাপ, পলিসি, অবকাঠামোয় নেতৃত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।
বর্তমানে সারা দেশে প্রায় আট হাজার ৮০০টি ডিজিটাল সেন্টারে প্রায় ১৬ হাজারের বেশি উদ্যোক্তা কাজ করছেন। যেখানে ৫০ শতাংশ নারী উদ্যোক্তা রয়েছেন।
এসব ডিজিটাল সেন্টার থেকে প্রতি মাসে গড়ে ৭০ লাখেরও অধিক সেবা প্রদান করা হচ্ছে।
ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণের অঙ্গীকার সফলভাবে বাস্তবায়নের পর আমাদের নতুন লক্ষ্য স্মার্ট বাংলাদেশ। ২০৪১ সাল নাগাদ স্মার্ট সিটিজেন, স্মার্ট ইকোনমি, স্মার্ট গভর্নমেন্ট এবং স্মার্ট সোসাইটিÑএই চারটি মূল ভিত্তির ওপর গড়ে উঠবে একটি সাশ্রয়ী, টেকসই, বুদ্ধিদীপ্ত, জ্ঞানভিত্তিক, উদ্ভাবনী স্মার্ট বাংলাদেশ। গত সোমবার ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবস-২০২২ উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তাঁর সরকার ২০৪১ সালের মধ্যে দেশকে ডিজিটাল থেকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশে’ রূপান্তরে কাজ করে যাচ্ছে। বাংলাদেশকে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার প্রত্যয় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘বাংলাদেশ হবে স্মার্ট বাংলাদেশ। ডিজিটাল বাংলাদেশ থেকে স্মার্ট বাংলাদেশে আমরা চলে যাব।’ এবারের ডিজিটাল বাংলাদেশ দিবসের প্রতিপাদ্য ছিল ‘প্রগতিশীল প্রযুক্তি, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নতি।’
তথ্য-প্রযুক্তি দ্রæত এগিয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের প্রায় প্রতিটি পর্যায়ে অটোমেশনের ছোঁয়া লেগেছে। নতুন নতুন টেক পার্ক গড়ে উঠছে। আর সেসবের ইতিবাচক প্রভাব পড়ছে দেশের বৈদেশিক বাণিজ্যেও। তথ্য-প্রযুক্তি খাতে বাংলাদেশের এখন যে রপ্তানি এক দশক আগেও যা ভাবা যেত না। আউটসোর্সিংয়ের আয়ও বাড়ছে।
স্মার্ট বাংলাদেশ হবে জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি ও উদ্ভাবনী জাতি গঠনেরই রূপকল্প। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে বাস্তবায়িত উদ্যোগগুলোর সম্প্রসারণ এবং নতুন নতুন উদ্যোগ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই এই লক্ষ্য অর্জন করতে চায় সরকার। এ ক্ষেত্রে ইতিবাচক দিকটি হলো জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতি গড়ায় উদ্ভাবন ও গবেষণাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া। সরকার যে স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ে তুলতে চায় তাতেও অগ্রাধিকার বিবেচনায় রাখতে হবে উদ্ভাবন ও গবেষণাকে। এর সঙ্গে যুক্ত করতে হবে একাডেমিয়া এবং শিল্পকেও। কারণ শিল্পের চাহিদা অনুযায়ী মানবসম্পদ তৈরি করার জন্য শিক্ষা কারিকুলামে পরিবর্তন আনার প্রয়োজন রয়েছে।
বাংলাদেশ শ্রমনির্ভর অর্থনীতি থেকে জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতির দিকে এগোচ্ছে। জ্ঞানভিত্তিক অর্থনীতির জন্য শিক্ষা ও গবেষণা কার্যক্রমে অপরিহার্য বিষয় হিসেবে বিবেচনা করতে হবে চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের প্রযুক্তি এবং দক্ষ মানবসম্পদ গড়ে তুলতে হবে।